টানা ২২ দিন প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ শিকার নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ সময়ে ৪২ হাজার কোটি ডিম ছাড়ার সম্ভাবনার কথা বলছেন ইলিশ গবেষকরা। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. মো. আনিসুর রহমান জানান, ইলিশ ধরা বন্ধ রাখার কারণে চলতি বছরে ৪২ হাজার কোটি ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা আছে। এ কারণে সমপরিমান ইলিশের পোনা জাটকা হবে বলেও আশা করছেন তারা। তিনি আরো জানান, প্রতি বছর মার্চ-এপ্রিল মাসে ৮সপ্তাহ এবং অক্টোবর মাসে ৩ সপ্তাহ ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। মার্চ-এপ্রিলে ইলিশ শিকার নিষিদ্ধ রাখার উদ্দেশ্য হচ্ছে জাটকা যাতে বড় হতে পারে। অক্টোবর মাসে ৩ সপ্তাহ ইলিশ ধরা বন্ধ রাখা হয় প্রজননক্ষম ইলিশ যাতে ডিম ছাড়তে পারে।
এ সময়ের মধ্যে প্রজননক্ষম ইলিশ সমুদ্র থেকে নদীতে এসে যাতে ডিম ছেড়ে নিরাপদে সমুদ্রে ফিরে যেতে পারে, সেজন্য সকল প্রকার মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয় পদ্ম-মেঘনায়। আইন অমান্য করলে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে। ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান বলেন, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে প্রায় ৫ লাখ মে.টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছিল। এবারও একই পরিমাণ ইলিশ উৎপাদনের আশা করছে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট। উৎপাদিত ৫ লাখ মে.টনের মধ্যে প্রতিটি ইলিশের গড় ওজন ছিল প্রায় ৩শ’ থেকে ৫শ’ গ্রাম। সে হিসেবে প্রায় ২শ’ কোটি ইলিশ বাজারে আসতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি। মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট বলছে, বছরের এ দুটি সময়ে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করার কারণে গত কয়েক বছর উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৭ সালে ১অক্টোবর থেকে ২২ দিন ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। চলতি বছর প্রজনন মৌসুম আবহাওয়ার ওপর ভিত্তি করে ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর করা হয়েছে। এ সময়ে মাছ আহরণ, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, জেলার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলায় ৫১ হাজার ১শ’ ৯০ জন নিবন্ধিত ইলিশ জেলে রয়েছে। এসব জেলে ২২ দিন যাতে নদীতে মাছ না ধরেন সে জন্য মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করে সচেতন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, জাতীয় মৎস্য সম্পদ ইলিশ প্রজনন মৌসুমে চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে লক্ষীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১শ’ কি.মি এলাকায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন