শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

আড়াইহাজারে নিহত পাবনার ৩ জনের বাড়িতে শোক

পাবনা থেকে স্টাফ রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের পাঁচরুখী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে গত রোববার সকালে উদ্ধার হওয়া গুলিবিদ্ধ চার যুবকের পরিচয় মিলেছে। তাদের সবার বাড়ি পাবনার আতাইকুলা থানা এলাকায়। নিহতদের পরিবার-স্বজনদের মাঝে চলছে শোকের মাতম। আতাইকুলা থানার ওসি ইনকিলাবকে জানিয়েছেন, নিহতরা তাঁর থানা এলাকায় দীর্ঘকাল থাকতেন না। এলাকার মানুষজনের কাছে তাদের সম্পর্কে রিপোর্ট ভাল ছিল না বলে তিনি জানতে পেরেছেন। তবে তার থানা এলাকায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোন মামলা করেননি। অন্যত্র অবস্থানকালে তারা কি করতেন সেটি তিনি জানেন না।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে নিহতরা হলেন- পাবনার আতাইকুলা থানার ধর্মগ্রামের মধ্যপাড়ার খাইরুল সরদারের পুত্র সবুজ সরদার (৩২), রতন সরদারের পুত্র লিটন সরদার (৩২), লোকমান সরদারের পুত্র জহুরুল সরদার (৩০) ও মৃত সোলাইমান খন্দকারের পুত্র ফারুক খন্দকার (৩৮)। সোমবার নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালে লাশ দেখে সনাক্ত করেন স্বজনরা। তারা দাবি করছেন, গত শুক্রবার গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে তাদের তুলে নিয়ে যায়। তবে পাবনা পুলিশ এ খবরের সত্যতা অস্বীকার করে বলেছে, তারা অবগত নন। পুলিশ ঐ এলাকায় যায়নি। খায়রুল সরদার জানান, নিহত সবুজ তার বড় পুত্র । জিসান নামে সাত মাসের একটি পুত্র রয়েছে তার। তিনি গ্রামের বাড়িতে বেকারিতে কারিগর হিসেবে কাজ করতেন। অভাবের তাড়নায় পরিবারের ঋণের (কিস্তি) টাকা পরিশোধ করার উদ্দেশ্যে গত সোমবার ঢাকায় যান। এর পরদিন থেকেই সবুজের মোবাইলফোন বন্ধ থাকলে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, ফারুক হোসেন নারায়ণগঞ্জে বাসচালক ছিলেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার। তবে স্বজনদের দাবি, তারা কেউই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। কাজের সন্ধানে সবুজ, জহুরুল ও লিটন ঢাকায় যাওয়ার পর নিখোঁজ ছিলেন। ফারুক হোসেনের মেয়ে ফাহিমা খাতুন বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আমার বাবা নারায়ণগঞ্জে ‘গ্লোরি এক্সপ্রেস’ নামের একটি বাস চালাচ্ছিলেন। গত শুক্রবার থেকে আমার বাবার সাথে যোগাযোগ ছিল না। শনিবার জানতে পারলাম, নারায়ণগঞ্জের গাউসিয়া বাসভবন থেকে সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আমার বাবাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফাহিমা বলেন, ‘রোববার জানতে পারি যে, আড়াইহাজারে চারটি লাশ পাওয়া গেছে, তাদের মধ্যে একজন আমার পিতা। আমার পিতা কোনো দোষ করেননি, তাকে মেরে ফেলা হল কেন ? পুত্র সবুজ সরদারের জন্য আহাজারি করছিলেন মা আম্বিয়া খাতুন। তিনি বলেন, লিটন, সবুজ ও জহুরুল চাচাতো ভাই। তারা তিনজন পাবনার আজাদ বেকারিতে কাজ করত। তারা গত ১৫ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জে ফারুকের বাসায় যান। গত শুক্রবার আমরা জানতে পারলাম তাদের কে বা কারা তুলে নিয়ে গেছে।
পাবনা শহরের বড় ব্রিজ এলাকায় অবস্থিত আজাদ বেকারি কয়েক বছর আগে বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। জহুরুলের স্ত্রী সুবর্ণা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী শুক্রবার বিকেলে বলেছিল, বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাবে। বাড়িতে আসার কথাও বলেছিল। কিন্তু ওইদিন রাত থেকে আমার স্বামীর সাথে আর যোগাযোগ করতে পারিনি। লিটন হোসেনের মা শেফালী বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার পুত্র কোথায় আছে সে সম্পর্কে তিনি কিছু জানতেন না।
এদিকে গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, ওই চারজন গ্রামে কোনো অপরাধের সাথে জড়িত ছিল না। কিন্তু আতাইকুলা থানা পুলিশ সে কথা বিশ্বাস করছে না। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে, নিহতরা অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন