শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সরকারি চাল খেয়ে মা ইলিশ নিধন

বি এম হান্নান, চাঁদপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

মা ইলিশ সংক্ষরণে সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ২৮ অক্টোবর রাত ১২ টায়। তবে এবার ব্যাপক হারে মা ইলিশ নিধনের মধ্য দিয়েই শেষ হলো নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন। সোমবার থেকে ইলিশ শিকারে নদীতে জাল ও নৌকা নিয়ে নামার ক্ষেত্রে বাধা নেই। সরকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় চাঁদপুরের নদ-নদীতে পুরোদমে ইলিশসহ সব মাছ শিকারে নেমেছে জেলেরা। জেলে পল্লীতে এখন আনন্দের বন্যা।
৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনে দেশের ইলিশ অধ্যুষিত নদ-নদীতে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। মা ইলিশ সংরক্ষণ, মা ইলিশ রক্ষা ও স্বাচ্ছন্দে ইলিশের ডিম ছাড়ার সুযোগ করে দিতেই এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেরা খাদ্য সহায়তা হিসেবে দেয়া সরকারি চালও খেয়েছে আবার আইন অমান্য করে ব্যাপক হারে মা ইলিশও ধরেছে। বিষয়টা এমন গাছেরটাও খেয়েছে, তলারটাও নিয়েছে।
এবার চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনায় ব্যাপকহারে ইলিশ নিধনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে মা ইলিশ সংরক্ষণ কার্যক্রম। প্রশাসনের সকল বিভাগের কঠোর নজরদারি সত্তে¡ও জেলে নামধারী দুষ্কৃতিকারীদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখা যায়নি। প্রশাসনের অভিযান এড়িয়ে তারা ইলিশ শিকার করেছে। নদীতে এতো মাছ, স্বাধীনতার পর দেখেনি চাঁদপুরের জেলেরা। বড় বড় সাইজের ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ দেখে লোভ সামলাতে না পেরে হামলে পড়েছে তারা নদীতে। কারেন্ট ও ছান্দি জাল নিয়ে জেলেরা আইন অমান্য করে অবাধে মা ইলিশ নিধন করেছে বলে পর্যবেক্ষক মহল থেকে কথা উঠেছে। এবার পদ্মা-মেঘনা বেষ্টিত চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌ-সীমানার চরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি মা ইলিশ শিকার করা হয়। শুধু চাঁদপুর সদর রাজরাজেশ্বর চর থেকে নিষেধাজ্ঞাকালে আহরিত সাড়ে সাত শ’ মণ ইলিশ জব্দ করে জেলা টাস্কফোর্স।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তার অফিস জানিয়েছে, ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনে চাঁদপুরে মা ইলিশ সংরক্ষণ কার্যক্রমে নদীতে ১৬৩ টি অভিযান পরিচালনা করে টাস্কফোর্স। এ সময় ১৪৩ টি মামলা হয়েছে। সাজা দেয়া হয় ১৩৩ জেলেকে। তাদের মধ্যে ১১১ জেলেকে ১ বছর, ১২ জেলেকে ১ মাস ও ৩ জনকে ১৫ দিন করে কারাদন্ড দেয়া হয়। জব্দ করা হয় ৭.৯৪২ মেট্টিক টন ইলিশ। ১৯.৫৪৬ লাখ মিটার জাল, যার অধিকাংশ কারেন্ট ও ছান্দিজাল। এ সময়ে ৪১টি জেলে নৌকাও জব্দ করা হয়। প্রশাসনের এত পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরও জেলেদের নিবৃত করা যায়নি ইলিশ ধরা থেকে।
যারা নদীতীরে মা ইলিশ ক্রয়-বিক্রয় করেছে, তারা ছিলেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে এমন অভিযোগও সর্বত্র। নদীতীরে ইলিশ উৎসব ছিল চোখে পড়ার মত। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে চাঁদপুরে অন্য জেলা থেকে বরফও ঢুকেছে। কারা কিভাবে এ বরফ আনলো তা চিহ্নিত করা হয়নি। সবদিক পর্যালোচনায় এবার ইলিশ প্রজনন ব্যাহত হবার আশঙ্কা সাধারণ মানুষের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন