শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

দুপচাঁচিয়ায় খেজুর রস সংগ্রহে গাছিরা ব্যস্ত

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে মো. গোলাম ফারুক | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে খেজুরের গাছ কেটে রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা ব্যস্ত সময় পার করছে। উপজেলার দুটি পৌরসভাসহ ছয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এলাকার গাছিরা ইতোমধ্যে খেজুর গাছের মালিকদের সাথে চুক্তি করে গাছ নিয়েছে। তারা এখন এইসব খেজুর গাছ কেটে রস আহরণের প্রস্তুতিতে কাজ শুরু করেছে। যদিও আগের মতো শত শত খেজুর গাছের সারি আর দেখা যায় না। এরপরও যে গাছগুলো আছে শীত মৌসুমের শুরুতেই খেজুরের রস আহরণের জন্য এলকার গাছিরা সেই গাছগুলো প্রস্তুত করতে শুরু করছে। গাছিরা হাতে দা দিয়ে ও কোমরে দঁড়ি বেঁধে খেজুর গাছে উঠে নিপুণ হাতে গাছের ছাল তোলা, চাঁছা ও নলি বসানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এর মাঝে অধিকাংশ গাছই প্রায় কাটা হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে গতকাল শনিবার উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের বাঁকাদহ গ্রামের ওয়ারেছ আলী ফকিরের ছেলে গাছি বিশু ফকির (৩৮) জানান, কার্তিক মাসে খেজুর গাছগুলোর মালিকদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে গাছ কাটা শুরু করেছে। কার্তিক মাসের শেষ নাগাদ পুরোপুরি গাছগুলো কাটা শেষ করে শুরু হবে রস সংগ্রহের প্রতিযোগিতা। অগ্রাহায়ণ, পৌষ, মাঘ এই তিন মাস খেজুরের গাছগুলো থেকে রস আহরণ আর গুড় তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। গাছগুলো থেকে আহরণকৃত কিছু রস বাজারে বিক্রিসহ বেশি ভাগ রসই নিজ বাড়িতেই আগুনে জ্বাল দিয়ে যে গুড় ও লালি তৈরি করে পরে তা বাজারে বিক্রি হবে। তিনি আরো জানান, ইট ভাটায় খেজুর গাছের চাহিদা বেশি হওয়ায় এবং এ উপজেলায় ইটভাটা আশঙ্কাজনক বেড়ে যাওয়ায় গ্রামের সাধারণ মানুষ অভাবের তাড়নায় অবাদে তাদের গাছগুলো বিক্রি করে দিচ্ছেন। এ ছাড়াও অনভিজ্ঞ গাছিরা গাছ কাটার সময় ভুল করায় অনেক গাছ মরেও যাচ্ছে। তাই এখন আর আগের মতো এ উপজেলায় খেজুর গাছ দেখা যায় না। ফলে এক সময় খেজুর রসের যে সমারোহ ছিল তা অনেকাংশে কমে গেছে। এক সময় শীতের এই সকালে রস বিক্রিতারা ভাঁড় বাঁশে হাঁড়ি কাঁধে নিয়ে খেজুরের রস বিক্রি করত। কালের বিবর্তণে এখন আর সেই দৃশ্য আগের মতো চোখে পড়ে না।

শীতের সকালে গ্লাস ভরে খেজুরের রস খাওয়াই ছিল লোভনীয়। এ ছাড়াও খেজুর রসের গুড় পাটালির চাহিদা এখনো রয়েছে। পুরো শীত নামার সাথে সাথেই প্রতিটি ঘরে ঘরে খেজুরের রস দিয়ে পিঠা-পুলি আর পায়েশ তৈরির ধুম পড়বে। চিড়া মুড়ি পিঠা খাওয়া কৃষক পরিবার থেকে শুরু করে সবার কাছে প্রিয়। শীত মৌসুম এলেই উপজেলার সর্বত্র শীত উদযাপনের নতুন আয়োজন শুরু হয়। তাইতো শীত মৌসুমের শুরুইে এলাকার গাছিরা খেজুরের গাছ থেকে ছাল তুলা- চাঁছা আর কাটাসহ নলি বসানো কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ সময় এলাকার গাছিদের মুখে ফুটে উঠে রসাল হাসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন