উত্তর : পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘এই রাসূল প্রেরিত হয়েছেন অন্য আরও লোকদের জন্যে, যারা এখনও তাদের সাথে মিলিত হয়নি।’ । (সূরা আল জুমুআহ-৩) সূরা জুমআর এই আয়াতের তাফসীরে ইমাম বুখারী (রহ.) বুখারী শরীফের দ্বিতীয় খন্ডের ৭২৭ পৃষ্ঠায় কিতাবুত তাফসীরে একটি হাদীস শরীফ উল্লেখ করেছেন। হযরত আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুল (স.) এর কাছে বসেছিলাম। এমন সময় তাঁর উপর অবতীর্ণ হলো সূরাহ জুমু‘আহ, যার একটি আয়াত হলো- ‘‘এবং তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনও তাদের সঙ্গে মিলিত হয়নি।’’ তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, তারা কারা? তিনবার এ কথা জিজ্ঞেস করা সত্তে¡ও তিনি কোন উত্তর দিলেন না। আমাদের মাঝে হযরত সালমান ফারসী (রাঃ)-ও উপস্থিত ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) সালমান ফারসী (রাঃ)-এর উপর হাত রেখে বললেন, ঈমান সুরাইয়া নক্ষত্রের নিকট থাকলেও আমাদের কতক লোক অথবা তাদের এক ব্যক্তি তা অবশ্যই অর্জন করতে সক্ষম (ইসলামী ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বর ৪৫৩৩)। মুসলিম শরীফেও কিছুটা শাব্দিক ব্যতিক্রমে এ হাদিস শরীফ বর্ণিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, দ্বীন আকাশের সুরাইয়া নক্ষত্রের নিকট চলে গেলেও পারস্যবাসীদের মধ্যে অথবা তিনি বলেছেন পারসী সন্তানদের মধ্যে এক ব্যক্তি সেখান থেকে তা গ্রহণ করবেন। (মুসলিম শরীফ,হাদীস নং ৬৬৬১)
এ পবিত্র আয়াত এবং হাদিস শরীফ বলা হয়েছে কুরআন বিশেষজ্ঞ, শ্রেষ্ঠ কালাম শাস্ত্রবিদ, হাফিজুল হাদীস, শ্রেষ্ঠতম মুজতাহিদ ফকিহ, তাবেয়ী, হানাফী মাজহাবের প্রবর্তক ইমামকুল শিরোমণি হযরত ইমামে আজম আবু হানিফা নোমান বিন সাবিত (রহ.) সম্পর্কে। ইমাম ইবনে হাজর হায়তামী তাঁর আল ’খায়রাতুল হিসান’ কিতাবের একটি অধ্যায়ে লিখেন, কোনো সন্দেহ নেই যে, এর দ্বারা ইমাম আবু হানীফা উদ্দেশ্য। কেননা, তাঁর সমসাময়িক পারস্যবাসীদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি তাঁর জ্ঞানের সীমায় এমনকি তাঁর ছাত্রদের জ্ঞানের সীমা পর্যন্ত কেউ পৌঁছতে সক্ষম হয়নি। (ইবনে হাজর হায়তামী, পৃ.২৪)। বিখ্যাত আলেম ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ূতী (রহ.) বলেন, এ হাদিস শরীফ দিয়ে ইমাম আজম আবু হানিফার (রহ.) কথা বোঝানো হয়েছে। (তাবয়িদুস সহিফা, ১১ পৃ.)।
উত্তর দিচ্ছেন : মুফতি মাওলানা এহছানুল হক মুজাদ্দেদী
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন