জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে সরকারি নিয়ম নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কুসুম্বা ইউনিয়নের কামালপুর মৌজায় কৃষি জমিতে অবৈধ ভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে এনবি নামক ইটভাটা। ইটভাটার পার্শ্বে রয়েছে অর্ধ শতাধিক বাড়ি ঘড় ও এলজিইডি রাস্তা।ভাটার মালিক পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র না নিয়েই ইট প্রস্তুত শুরু করেছে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ অনুযায়ী দুই ফসলি জমিতে ইট ভাটা করা যাবেনা। এছাড়া অর্ধ কিলো মিটারের মধ্যে এলজিইডি রাস্তা, এক কিলোমিটারের মধ্যে ৫০ টির অধিক বাড়ি ঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকা যাবেনা। তবে অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা না থাকলে এক ফসলি জমিতে ইটভাটা করা যাবে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সরকারি আইন অমান্য করে দুই ফসলি জমির মাঝ খানে ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে। বিভিন্ন জমি থেকে টপ সয়েল কেটে ট্রলিতে করে এনে বিশাল আকৃতির স্তূপ করা হচ্ছে। শ্রমিকরা ইট প্রস্তুত করতে ব্যস্ত।ইট ভাটার পার্শ্বে সুরইল, হরেন্দা হাকিমপুর কৈজুরী গ্রাম জুরে রয়েছে শতাধিক বাড়ি ঘর ও নানান প্রজাতির গাছ পালা।এছাড়া ভাটা থেকে মেঠো পথে ১ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে হাকিমপুর কৈজুরী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং অর্ধ কিলো মিটারের মধ্যে এলজিইডির অধীন পাঁচবিবি-কামদিয়া সড়ক রয়েছে। সুরইল গ্রামের কৃষক ছানোয়ার হোসেন বলেন, জমিগুলি মূলত তিন ফসলি। ইরি ও আমন ধানের পাশাপাশি রবিশস্য আবাদ করে থাকি। ইটভাটার কারণে ফসলি জমি ও জীব বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়বে। সরকারি আইন অমান্য করে সংশ্লিষ্ট কর্ম কর্তাদের ম্যানেজ করে ইটভাটা স্থাপন করা হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
এনবি ইটভাটার মালিক শরিফুল ইসলাম বাবু বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না পেলেও ইটভাটার কার্যক্রম চালানো যাবে। ছাড়পত্র বিষয়ে আদালতে রিট করেছি। রিটের কপি বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় অঞ্চলের সিনিয়র কেমিস্ট আসাদুর রহমান বলেন, এনবি ইটভাটা নির্মাণে কোন ছাড়পত্র দেয়া হয়নি। নীতিমালা অনুযায়ী পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া ইটভাটা করা যাবেনা। ছাড়পত্র না নিয়ে ইটভাটা কার্যক্রম চালানো বিষয়ে তাদেরকে নোটিশ করা হবে। সদুত্তর দিতে না পারলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, বেশ কিছু দিন পূর্বে ওই ইটভাটা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সবকিছু ঠিক আছে তবে এলজিইডি রাস্তাটিই একটু সমস্যা। নির্মিত ইট ভাটার জমিগুলি কয় ফসলি এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সেটা কৃষি বিভাগ বলতে পারবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, ওই মাঠের জমিগুলি দুই ফসলি। এই ধরণের জমিতে ইট ভাটা করার কোন বিধান নাই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজি-বুল আলম বলেন, বিষয়টি জানা নেই খোঁজ নেয়া হবে। তবে ইটভাটা করতে গেলে আইনি বাধ্য বাধকতা আছে সেগুলি মেনে করতে হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় অঞ্চলের পরিচালক আশরাফুজ্জামান বলেন, কৃষি বিভাগ যদি বলে থাকে ওই জমিগুলি দুই ফসলি তাহলে ইটভাটা করতে পারবেনা। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন