গায়েবি মামলা। হুলিয়া গ্রেফতার। পুলিশি ধরপাকড়। বাধা মাড়িয়েই এগিয়ে যাচ্ছে বিএনপি জোট। চার প্রার্থী কারাগারে থেকেই নির্বাচন করছেন। নেতা-কর্মীদের মাথায় মামলার পাহাড়। তবুও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আপোষহীন তারা। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে সুসংহত হচ্ছে বিএনপি ও জোটের নেতাকর্মীরা। আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোটের চূড়ান্ত লড়াইয়ে সামিল হওয়ার প্রস্তুতি সর্বত্র। নেতা-কর্মীদের সরগরম উপস্থিতি সর্বত্রই। মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছেন তারা।
টানা এক যুগ ক্ষমতার বাইরে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। টানা ১০ বছর জুলুম, নির্যাতনের স্টিম রোলার। খুন, গুম, অপহরণ, পঙ্গুত্ববরণ। ঘরবাড়ি ছাড়া অনেকে। পালিয়ে থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যও লাটে উঠেছে। কারাবন্দি হয়েছেন শত শত নেতা-কর্মী। মামলায় আসামি হয়েছেন লাখেরও বেশি। কোন অপরাধ না করেও অসংখ্য মামলার আসামি। বছরের পর বছর কারাবাস। ঘরবাড়ি ছেড়ে ফেরারী জীবন অনেকের।
এ দুঃসহ অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ে নেতা-কর্মীরা। বিগত ২৭ অক্টোবর নগরীর নাসিমন ভবনস্থ বিএনপি দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে ঐক্যফ্রন্টের বিশাল জনসভা। সেখান থেকেই যেন প্রাণের সঞ্চার। সেদিন থেকেই ভয়ভীতি কাটিয়ে মাঠে নামা। এরপর আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা। পাল্টে যায় দৃশ্যপট। লড়াকু মনোভাব নিয়ে মাঠে বিএনপি ও শরিক দলের নেতা-কর্মী, সমর্থকেরা।
চট্টগ্রামের ১৬টি এবং তিন পার্বত্য জেলার তিনটিসহ ১৯টি সংসদীয় আসনে তৎপর বিএনপি জোটের নেতা-কর্মী, সমর্থকেরা। প্রার্থীকে ঘিরে অনানুষ্ঠানিক প্রচারে সবাই। লক্ষ্য একটিই আগামী নির্বাচনে বিজয়। বিজয় ছাড়া বিকল্প কোনকিছু ভাবার সুযোগ নেই। এ লড়াই যেন বাঁচার লড়াই। নেতা-কর্মীরা বলছেন, আর কত জুলুম, নির্যাতন, ফেরারী জীবন। এবার ঘুরে দাঁড়াতেই হবে। মাঠ সমান হলো কিনা তা দেখার ফুসরত কই। মানুষ পরিবর্তন চায়। মানুষের এ চাওয়াকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে। আর তাহলেই অমানিষা শেষে আসবে এক সোনালী ভোর।
সোনালী ঊষার প্রত্যাশা এ অঞ্চলের নেতা-কর্মী, সমর্থকদের মনে-প্রাণে। মনোনয়ন নিয়ে দল এবং জোটে মন কষাকষি। আছে মান-অভিমানও। তবে সময়ের দাবি সব ভুলে এক কাতারে আসতে হবে। সীসাঢালা প্রাচীর না হলে দুঃশাসনের অবসান হবে না। ফলে ঐক্যফ্রন্টের তৃণমূলেও ঐক্যের আহ্বান। যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা এ আহ্বানই জানিয়ে যাচ্ছেন। নিজেদের মধ্যে ঐক্য গড়ে জনতার ঐক্য গড়তে হবে। আর তা হলেই ৩০ ডিসেম্বর বিজয় সুনিশ্চিত।
চট্টগ্রাম অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী শক্তির দুর্জয় ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত চট্টগ্রাম অতীতের সবকটি নির্বাচনে ধানের শীষকে বিজয়ী করেছে। দেশ-জাতি ও গণতন্ত্রের এ ক্রান্তিকালেও বীর চট্টলাবাসী ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবেন এমন প্রত্যাশা ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন