শেষ পর্যন্ত কী হবে? ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে কি না, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে চূড়ান্ত প্রার্থী হবে কারা, ভোটযুদ্ধ হবে মূলত কার সঙ্গে কার, ভোটের মাঠের সার্বিক পরিস্থিতিই কী দাঁড়াবে, সব প্রার্থী কি সমান সুযোগ পাবেন?’-এসব প্রশ্ন ও নানামুখী আলোচনা চলছে দক্ষিণ-পশ্চিমের ৩৬টি আসন এলাকায়। পাশাপাশি নির্বাচনী আকাশের মেঘ এখনো পুরোপুরি কেটে যায়নি বলেও চারিদিকে উচ্চারিত হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কথা, রাজনীতিতে ঘটেনি কোন মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তন। অনেকটাই গতানুগতিক।
তাছাড়া রাজনীতির গতি প্রকৃতিও খুব বেশি সুখকর নয়। রাজনৈতিক নেতাদের অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ, ভোট নিয়ে নানা কতাবার্তা বিশ্লেষণ করে দক্ষিণ-পশ্চিমের রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সচেতন ভোটার এবং বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের মধ্যে এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে সমানতালে। ভোটের মাঠের আড্ডায় এটিও আলোচনা হচ্ছে, ভোট এলে জনগণের গুরুত্ব বাড়ে। সত্যিকারে জনকল্যাণের রাজনীতি অনেকটাই অনুপস্থিত। রাজনীতি অর্থ হয়ে গেছে এখন প্রভাব খাটিয়ে যেনতেনভাবে নেতাদের সম্পদ বৃদ্ধি করা। তখন দল কিংবা জনস্বার্খ গৌণ হয়ে যায়। অতীতেও একই ধারা ছিল, কিন্তু বর্তমানে সেই থারার গতি বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্রাতিরিক্ত। জনগণের সমস্যা সমাধানে ও জনকল্যাণে এবং স্থানীয় ইস্যুভিত্তিক রাজনীতি নেই বললেই চলে।
রাজনীতির ঘোরপ্যাঁচ বোঝেন না গ্রাম শহরের সহজ সরল শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষ। তাদের কথা, ‘আমরা সাধারণ মানুষ, আমাদের স্বার্থে আসলে রাজনীতি হয় না। যারাই এমপি হন, তাদের অধিকাংশই এলকার স্বার্থের চেয়ে নিজের আখের গোছানোর দিকেই নজর থাকে বেশি। জনকল্যাণের রাজনীতি আসলে নেই বললেই চলে। ভোট রাজনীতি নিয়ে মোড়ে মোড়ে পক্ষ বিপক্ষে এসব কথাবার্তা নিয়ে ঝড় উঠছে চায়ের কাপে ও আলোচনার টেবিলে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রাজনৈতিক, সামাজিক নেতা, শিক্ষক, সাংবাদিক ও আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ অকপটে বলেছেন, আমরা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে, সাধারণ মানুষের কল্যাণের রাজনীতি দেখতে চাই। এমনও অনেকে বলেছেন, সেদিন বেশি দুরে নয়, যেদিন ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে একদিন রাজনীতিবিদদেরই জবাব দিতে হবে। দক্ষিণ-পশ্চিমের ১০ জেলার বেশ কয়েকটি আসন এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে ভোট নিয়ে তাদের মনোভাবের কথা জেনেছি। তাদের বক্তব্য, ‘ওরে ভাই ভোট আসলি সবাই তৎপর হয়, ভোট গেলে সাধারণ লোকজনের খবরও রাখে না আমাদের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। ভোটের আগে আমাদের কত আদর-কদর, ভোট পার হলেই তাদের নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। আমাদের মূল্যায়ন হয় না। অনেকেই রাতারাতি চোখ পাল্টি দিয়ে দেয়’। ভোট রাজনীতিতে কি এসবের পরিবর্তন হবে না-এমন প্রশ্ন ও নানা কথাবার্তা চলছে নির্বাচনের প্রসঙ্গ উঠলেই।
এ অঞ্চলের ২২ হাজার বর্গকিলোমিটারের ১০ জেলার ৩৬টি সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন মোট ৩শ’৫১জন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পরই ভোটযুদ্ধের একটা ধারণা পাওয়া যাবে। এখনো কোন আসনে মূলত শেষ পর্যন্ত কে থাকবে আর কে থাকবে না তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে প্রতিটি আসন এলাকায় নির্বাচনী তৎপরতা শুরু হয়েছে পুরোদমে। রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের কদরও বেড়ে গেছে। যশোর, খুলনা, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও কুষ্টিয়াসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্নস্থানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকল রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা বর্তমানে আগের চেয়ে অতিমাত্রায় চাঙ্গা। আওয়ামী লীগ এককভাবে রাজনীতির মাঠ দখল রেখেছিল দীর্ঘদিন। এখন বিএনপিও ভোট রাজনীতির মাঠে গা ঝাড়া দিয়ে নেমেছে। তারা নানা কারণে দীর্ঘ অলস সময় কাটিয়েছে । হামলা, মামলা, প্রশাসনিক হয়রানি ও জেল জুলুম হুলিয়ার কারণে চুপচাপ থেকেছে। তবে এখন নেতা ও কর্মীরা মাঠে নেমে পড়েছেন। ভোটের মাধ্যমে গোটা এলাকায় নতুন করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিএনপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন