আমি ১৯৪৬ সালের নির্বাচন দেখিনি। কিন্ত দেখেছি ৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচন। দেখেছি ৭০ সালের পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন। আর দেখেছি বাংলাদেশের বিগত ১০টি নির্বাচন। কিন্তু এই বার আগামী ৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে সেই নির্বাচন আমি তো দূরের কথা, আমার চৌদ্দ পুরুষও দেখেননি। কেন দেখেননি তার কয়েকটি নমুনা দিচ্ছি।
আপনারা অনেকেই জানেন যে, আমি বগুড়ার সন্তান। আমার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ আত্মীয় গত ১৪ ডিসেম্বর শুক্রবার পারিবারিক কাজে সড়ক পথে বগুড়া গিয়েছিলেন। ১৬ ডিসেম্বর সড়ক পথে বগুড়া থেকে ঢাকা ফিরে এসেছেন। তিনি আমাকে বললেন, ঢাকা থেকে বগুড়া এবং বগুড়া থেকে ঢাকা এই সুদীর্ঘ পথ প্রাইভেট কার যোগে যাতায়াতের কোনো পর্যায়েই তিনি ২০ দল, বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট বা ধানের শীষের কোনো পোস্টার দেখেননি। কাউকে কোনো লিফলেট বিলি করতেও দেখেননি। তিনি বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি থেকে নেমে মানুষকে কারণ জিজ্ঞেস করেছেন। তারা বলেছেন, সর্বত্র ক্ষমতাসীন দল এসে শাসিয়ে যাচ্ছে যে, যদি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কোনো পোস্টার পড়ে বা লিফলেট বিলি হয়, তাহলে যে এলাকায় এটি হবে সেই এলাকার আশপাশের লোকজনের দোকান পাট এবং বাড়ি ঘরে হামলা করা হবে। এই ভয়ে আর ধানের শীষের কোনো প্রচার নাই।
১৫ ডিসেম্বর শনিবার শীত বস্ত্র কেনার জন্য আমার সহধর্মিনীসহ আমি বঙ্গবাজারে যাই। আমি অবাক হয়ে লক্ষ করি যে, বঙ্গবাজারের সামনের রাস্তায় অসংখ্য পুলিশ তাদের অফিসিয়াল পোশাক পরে মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের নৌকা মার্কার পোস্টার লাগাচ্ছে। আমি হতভম্ব হয়ে দেখতে থাকি এবং দুই-একজন দোকানদারকে কথাটি জিজ্ঞেস করি। তারা আমাকে বলেন, ভাই এসব কথা বলবেন না, বলে আমার দোকানটার ক্ষতি করবেন না। ফেরার পথে শিশুপার্ক দিয়ে ফিরি। ফেরার সময় আমার ডান পাশে যখন ঢাকা ক্লাব তখন বাম পাশে আমার বাহন থামাই। আমার চিন্তাধারা এবং ধারণাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে আমি দেখি যে, মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের হাজার হাজার পোস্টার এবং ব্যানার ও ফেস্টুন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে শুরু করে সামনে বারডেমের রাস্তায় ওভার ব্রিজ পর্যন্ত টাঙানো হয়েছে। সেখানে অন্য কোনো ব্যানার-ফেস্টুন বা পোস্টার টাঙানোর আর কোনো জায়গা নাই। আমি এবং আমার মিসেস রাস্তার পাশে বসা ভেন্ডারদেরকে জিজ্ঞেস করলাম, এত হাজার হাজার ফেস্টুন টাঙানোর কর্মী কি রাশেদ খান মেননের আছে? শিশুপার্কের মধ্যেই রাত কাটায়, এমন দুই একজন ভেন্ডার বললো, স্যার, রাতে দেখেছি, শত শত পুলিশ এসে মেননের এসব ব্যানার এবং ফেস্টুন টাঙিয়েছে।
ফিরে এলাম আমার বাসা ধানমন্ডিতে। তখন সন্ধ্যার প্রায়ান্ধকার। ৩/৪টি রুট দিয়ে ৩/৪টি মিছিল গেলো। মিছিলের আকৃতি খুব বড় নয়। তাদের স্লোগান, ‘অমুক ভাইয়ের সালাম নিন/ নৌকা মার্কায় ভোট দিন।’ এর মধ্যে ধানের শীষের কোনো মিছিল বা কোনো ব্যানার-ফেস্টুন বা পোস্টার দেখিনি। এই অবস্থা কলাবাগান ১ম গলির, ২য় গলির, লেক সার্কাসের, ঐদিকে ধানমন্ডি ক্লাব এবং ৩ নম্বর থেকে ৮ নম্বর রোড পর্যন্ত। আমি লোক মারফত খবর নিলাম, ধানের শীষের কোনো পাবলিসিটি নাই কেনো? কোনো সমাবেশ বা মিছিল নাই কেনো? আমার বার্তাবাহক এসে জানালো যে, সর্বত্র সরকারি দলের কর্মীরা এসে শাসিয়ে গেছে যে, যদি ধানের শীষের কোনো মিছিল বের হয় অথবা তাদের কোনো পোস্টার বা ব্যানার ফেস্টুন টাঙানো হয় তাহলে শাস্তি স্বরূপ আশেপাশের সমস্ত দোকান পাট ভেঙে ফেলা হবে। বাস্তবেও তার প্রতিচ্ছবি দেখলাম। এসব জায়গায় আজ ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার পর্যন্ত ধানের শীষের বিন্দুমাত্র প্রচার নাই। এমনকি এই এলাকায় ধানের শীষের প্রার্থী কে তাও মানুষে জানে না।
দুই
এই হলো এই সরকার বা এই নির্বাচন কমিশনের লেভেল প্লেইং ফিল্ড। সারা বাংলাদেশে এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। নীচে কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করছি। এগুলো আমাদের নিজস্ব কোনো খবর নয়, এগুলো সংবাদ পত্রের পৃষ্ঠা থেকে নেওয়া। যে দিন থেকে বিরোধীরা জন সংযোগে নেমেছেন সে দিন থেকেই প্রায় প্রতিটি বিরোধী দলীয় প্রার্থীর প্রতিটি জনসংযোগ, সমাবেশে হামলা করা হচ্ছে। কারা হামলা করছে সেটি আর বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন নাই। এই হামলা থেকে কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। বর্তমানে সরকারবিরোধী শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির অত্যন্ত সিনিয়র নেতা এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির মেম্বার, প্রাক্তন মন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, স্ট্যান্ডিং কমিটির মেম্বার এবং প্রাক্তন মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান, স্ট্যান্ডিং কমিটির মেম্বার এবং প্রাক্তন মেয়র মির্জা আব্বাস, তার পত্নী আফরোজা আব্বাস, আওয়ামী লীগ থেকে ঐক্যফ্রন্টে আসা প্রাক্তন প্রতি মন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদসহ কেউই সরকারের এই হামলা থেকে রেহাই পাননি।
প্রতিদিন যে দুই চারটি করে হামলা হচ্ছে তার প্রত্যেকটির খুটি নাটি খবর রাখা সম্ভব নয়। তবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পত্রিকায় বিক্ষিপ্তভাবে যেসব খবর এসেছে সেসব খবর সংকলন করলে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি দাঁড়ায় সেটি মোটামুটি নিম্নরূপ।
যারা হামলার শিকার হয়েছেন তারা হলেন (১) নড়াইল-২ থেকে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ফরিদুজ্জামান (২) বগুড়া-৫ থেকে বিএনপি প্রার্থী সাবেক এমপি ধনাঢ্য ব্যক্তি গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ (৩) চুয়াডাঙ্গা-১ থেকে শরিফুল আলম (৪) নাটোর-১ থেকে ২০ দলীয় প্রার্থী মঞ্জুরুল আলম বিমল (৫) জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে পাবনা-১ এর প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ (৬) ঝালকাঠি-২ থেকে বিএনপি প্রার্থী জেবা আমিন (৭) নারায়ণগঞ্জ-৩ থেকে বিএনপি প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্না।
পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবর মোতাবেক, সিরাজগঞ্জ শহরে পুলিশের গুলি ও লাঠি চার্জে জেলা বিএনপি সভাপতি ও সিরাজগঞ্জ-২ আসনের বিএনপি প্রার্থী রুমানা মাহমুদসহ অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। নেত্রকোনায় বিএনপি প্রার্থীর বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে। শরীয়তপুরে বিএনপি অফিসে হামলা-ভাংচুর, ৯ হাজার পোস্টারে আগুন দেয়া হয়েছে। হাতীবান্ধায় ধানের শীষের মাইক ভেঙে দেয়া হয়েছে। এগুলোই শেষ নয়। ঝালকাঠিতে বিএনপি প্রার্থীর গাড়ি বহরে হামলা ভাংচুর হয়েছে। রুমানা ও সাবিনার নিরাপত্তায় রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চেয়েছে বিএনপি। সুব্রত চৌধুরীর প্রচার মিছিলে ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলা হচ্ছে।
প্রতিদিনই এক বা একাধিক কাহিনী ঘটছে। বরিশালে লিফলেট বিতরণকালে হাতপাখার কর্মীর ওপর হামলা। সাতক্ষীরায় বিএনপির প্রচারণায় হামলা, প্রার্থীসহ আহত ৭। জামালপুরে বিএনপির গাড়িবহরে আ’লীগের হামলা, আহত ৮। বিকেলে উদ্বোধনের পর রাতেই বিএনপির নির্বাচনী অফিসে আগুন। বিএনপির দলীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বিএনপির একাধিক নির্বাচনী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ। রাজশাহীতে জামায়াতের জেলা আমিরসহ গ্রেফতার ৭০। বরগুনা জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার। মুরাদ নগরে বিএনপি প্রার্থীকে স্বাগত জানাতে নেতাকর্মীদের ঢল। নারায়ণগঞ্জে জামায়াতকর্মী সন্দেহে নারীসহ ১০৩ জনকে আটক। যশোরে ধানের শীষের সব পোস্টার ছিড়ে ফেলেছে দৃর্বৃত্তরা। সিরাজগঞ্জে বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ ২ নেতা গ্রেফতার। নেত্রকোণায় বিএনপি প্রার্থীর বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা। সিরাজগঞ্জে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সহ ২ নেতা গ্রেফতার, আহত ১০। সাতক্ষীরায় বিএনপি প্রার্থীর ওপর হেলমেটধারীদের হামলা। ধানের শীষের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক আটক। সিরাজগঞ্জে পুলিশ বিএনপি সংঘর্ষে এমপি প্রার্থীসহ ৪৪ জন গুলিবিদ্ধ।জীবননগরে বিএনপির থানা কার্যালয়সহ ২০টি নির্বাচনী অফিসে অগ্নিসংযোগ। গাসাইর হাটে বিএনপি অফিসে হামলা, ভাংচুর, ৯ হাজার পোস্টারে আগুন। নেত্রকোণায় ধানের শীষের পোস্টারে আগুন, বিএনপি নেতাকর্মীদের মারধর। ঢাকা-৪ আসনে ধানের শীষের পোস্টার লাগানোয় বেধড়ক মারধর । নির্বাচনী প্রচারে বাধা, হামলা, ভাংচুর, আহত ৬৫। মুন্সীগঞ্জে বিএনপির কার্যালয়ে হামলা, ভাংচুর, আহত ১০। দাগনভূঞায় বিএনপি সম্পাদকসহ ৬ নেতাকর্মী গ্রেফতার। চৌদ্দগ্রামে বাধার মুখে ধানের শীষের পূর্বঘোষিত গণসংযোগের সিদ্ধাšন্ত বাতিল। সাবেক এমপি ডা তাহেরের নিন্দা। এলাকায় যেতে পারছেন না মেজর হাফিজ। নির্বাচনকে সামনে রেখে বেপরোয়া পুলিশ বিরোধী জোটের ৮৭ নেতাকর্মী গ্রেফতার । যশোরে ধানের শীষ প্রার্থী অমিতকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ। কুলিয়ারচরে বিএনপি প্রার্থীর পা ভেঙে দিয়েছে পুলিশ। খাগড়াছড়িতে বিএনপির নির্বাচনী গাড়ীতে আ.লীগের হামলা। মনোহরদীতে বিএনপি প্রার্থী বকুলের নির্বাচনী সভায় ব্যাপক হামলা। গাজীপুরে বিএনপির এমপি প্রার্থী ফজলুল হক মিলন গ্রেফতার। ঐক্যফ্রন্টের পথসভার মাইক ও চেয়ার টেবিল নিয়ে গেল পুলিশ। প্রচারণায় তৃতীয় দিনেও দেশজুড়ে বিরোধীদের ওপর ব্যাপক হামলা।
তিন
প্রিয় পাঠক, এমন যদি হতো যে, একটি দেশের সাধারণ নির্বাচনে দু’ চারটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত কিছু সংঘর্ষ হচ্ছে তাহলে সেটিকে ইগনোর করা যেতো অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলা যেতো তাৎক্ষণিক ভাবে পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে প্রতিদিন ঘটনা ঘটেই চলেছে। যদি সরকারের সর্বোচ্চ মহলে এসব দমনের সদিচ্ছা থাকতো তাহলে ২৪ ঘন্টার ভেতর এগুলো দমন করা যেতো। দেশের সবগুলি ওসিকে সংগে সংগে নির্দেশ দিলে এক দিনের মধ্যে তারা সারাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারতো। কিন্তু যেখানে সরিষার মধ্যে ভূত সেখানে সেই ভূত তাড়াবে কে?
আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, বিএনপি বলে পরিচয় দেওয়াও এখন বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি পরিচয় জানলেই পুলিশ ধরে নিয়ে জেল খানায় ঢুকাচ্ছে। নির্বাচনের দিন বিএনপি’র সমর্থকদের ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে পুলিশ। এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকারি ছত্র ছায়ায় থেকে আওয়ামী এমপিরা ধরাকে সরা জ্ঞান করছে। এখন বিরোধী দলকে শুধু হুমকি ধামকি দেওয়াই নয়, তাদের চোখ উপড়ে ফেলারও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই শাল্লা) আসনের নির্বাচনী এক সমাবেশে দিরাই পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ মিয়া হুমকি দিয়ে বলেন, নৌকার পক্ষে আসনের সবগুলো ভোট কেন্দ্র দখল করা হবে এবং এতে বিএনপি নেতাকর্মীরা বাধা দিলে তাদের চোখ উপড়ে ফেলা হবে। তিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘বিএনপিকে কোনো সেন্টারে আধিপত্য বিস্তার করতে দেয়া যাবে না, ওদের প্রত্যেকটি সেন্টার আমাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হবে। সুতরাং যারা ছাত্রলীগে আছ, তোমাদের পড়াশুনা করেই এবার নির্বাচন করতে হবে। কোনো সেন্টার বিএনপিকে দেয়া যাবে না । এতে বিএনপির কোনো কর্মী, কোনো নেতা যদি চোখ রাঙায় তাহলে তার চোখ তুলে দেবে। বিএনপির কোনো নেতা কোনো কর্মীকে একটা কথা বললে তার চোখ উপড়ে ফেলা হবে। সুতরাং নির্বাচনে সবকটি সেন্টার আমাদের দখলে থাকবে।’ উল্লেখ্য, তার এই ভিডিও এখন লক্ষ লক্ষ লোকের কম্পিউটার এবং মোবাইলে সংরক্ষিত রয়েছে।
এই ধরণের ঘটনা প্রতিদিন ঘটছে। এগুলোর খুঁটিনাটি বিবরণ দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এগুলো কেন ঘটছে? একেকটি ঘটনা শুনলে ভয়ে রক্ত হিম হয়ে যায়। সেই রক্তহিম করা ঘটনাগুলো কেন ঘটানো হচ্ছে? সাধারণ মানুষও অত্যন্ত বিভ্রান্ত। কেউ যদি বলেন যে তৃতীয় শক্তি আনার জন্য এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে, তাহলে সেটি এখন আর বিশ^াসযোগ্য নয়। কারণ ইলেকশনের আছে আর মাত্র ১২ দিন। ১২ দিন আগে ঐ ধরণের ঘটনা ঘটতে পারে না। প্রশ্ন উঠতে পারে, বিরোধী দলের তো রয়েছে বিপুল জন সমর্থন। তাহলে তারা কেন প্রতিরোধ করে না? উত্তর খুব সোজা। তারা যদি প্রতিরোধ করে তাহলে তাদেরকে ডজনে ডজনে গ্রেফতার করা হবে এবং শয়ে শয়ে মামলা দেওয়া হবে। তখন তাদের পক্ষে নির্বাচন করাই আর সম্ভব হবে না। সুতরাং একটি মাত্রই কারণ খুঁজে পাওয়া যায়। আর সেটি হলো বাংলাদেশের প্রতিটি ইঞ্চি জনমনে রক্ত হিম করা সন্ত্রাস সৃষ্টি করা। ভয়ে তটস্ত হয়ে মানুষ ভোট দিতে আসবে না। এলেও অন্যেরা তাদের ভোট দিয়ে দেবে। যেমনটি ঘটেছিল ২০১৪ সালে। এবারে তার চেয়েও কঠিন কিছু ঘটবে। আর পরিণতিতে ফ্যাসিবাদ, কর্তৃত্ববাদ, কঠোর রেজিমেন্টেশন এবং কমিউনিস্ট ডিকটেটরশিপের ফাঁস বাংলাদেশের গলায় লেগে যাবে। সুতরাং জনগণ, বিশেষ করে গণতন্ত্র প্রিয় জনগণ, সময় থাকতেই সাবধান।
journalist15@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন