রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী জীবন

স্বাধীনতা ও দেশপ্রেম

মো. শামসুল ইসলাম সাদিক | প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

স্বাধীনতা মহান নেয়ামত। মানুষ আশরাফুল মাখলুকাতে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে রবের দেয়া প্রদত্ত অনেক নেয়ামতে আমরা ডুবে আছি। স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। এর প্রমাণ পাওয়া যায় মানবতার মুক্তির দিশারী রাসুলে পাক (সা:)-এর পবিত্র মুখনিসৃত বাণীতে। তিনি ইরশাদ করেন, প্রত্যেক মানব সন্তান ফিতরাতের ওপর জন্মগ্রহণ করে (মিশকাত)। এই ফিতরাত বা প্রকৃতির মধ্যেই স্বাধীনতার মর্মবাণী নিহিত রয়েছে।
স্বাধীনতা একটি ব্যাপক প্রত্যয় ,যার প্রকৃতি অবর্ণনীয়। স্বাধীনতাই মানুষের অস্তিত্বে লালিত সুপ্ত প্রতিভা ও শক্তিকে ক্রমাগত উন্নতি – অগ্রগতিরও সমৃদ্ধির পথে বিকশিত করতে সহায়তা করে। প্রত্যেক মানুষই চায় সে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকতে , স্বাধীনভাবে নিজ মত প্রকাশ করতে। কিন্তু সাম্রাজ্যবাদী শক্তির খড়গহস্ত প্রসারের মাধ্যমে এ স্বাধীনতা প্রক্রিয়া যখন ব্যাহত হওয়ার উপক্রম হয়, তখন স্বাধীনতা অর্জনের জন্য অথবা টিকিয়ে বা ধরে রাখতে যুগে যুগে দেশে দেশে বিভিন্ন জাতি স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রামেঝাপিয়ে পড়তে বাধ্য হয়েছে। পরাধীনতার শিকল থেকে মুক্ত হয়ে স্বতন্ত্র আবাসন ভূমি নির্মাণের প্রয়াস পেয়েছে। জীবন বাজি রেখে স্বদেশের জন্য মানুষের জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামে রত থাকে তাদের এ নৈতিক অধিকারকে পবিত্র ধর্ম ইসলাম সমর্থন করে থাকে। “দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ” এ পবিত্র মর্ম বাণী অনুধাবন করে স্বদেশপ্রীতির প্রেরণায় কত মানুষ যে যুগে যুগে কত স্বার্থ ত্যাগ করেছে, তার হিসেব জানা অনেক মুশকিল। সত্যিকারের দেশপ্রেমিক দেশ ও জাতির কল্যানে নিজ জীবন বিলিয়ে দিতে কখনো পরোয়া করে না।
প্রকৃত অর্থে দেশ ও জাতির সেবায় বা মানবতার সেবায় আত্মোৎসর্গ করতে পারলে সত্যিকার দেশপ্রেমিক নিজেকে ধন্য মনে করে থাকেন। দেশের স্বাধীনতা যেখানে আজ বিপন্ন, মানবতা আজ সেখানে পর্যুদস্ত, সেখানে দেশ ও দেশবাসীর মান-সম্ভ্রমরক্ষার জন্য মুক্তভাবে বাস করার জন্য যুদ্ধ করা সবার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজন। আমার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ এক সাগর রক্ত ও দীর্ঘ নয় মাস যোদ্ধের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে জন্ম নিয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম আমাদের বাংলাদেশ। স্বাধীন দেশ হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে স্থান লাভ করে সুজলা-সুফলা,শষ্য-শ্যামলায়ঘেরা রুপসী বাংলাদেশ নাম। বিশ্বের মানচিত্রে আমাদের আত্মপরিচয় লাভ করে স্বাধীন জাতি হিসেবে।দেশপ্রেমের উদারতা ইতিহাসে পর্যালোচনা করলে যানা যায়, মুসলামনরা রাসুলে পাক (সা:)-এর দিকনির্দেশনায় পূণ্য লাভের আশায় পরিখা খননের কাজে ভ্যাপকভাবে অংশ নেন। যাতে কুরাইশ বাহিনী পরিখা পার হয়ে মদিনায় আসতে না পারে । কিছুদিন অবরুদ্ধ থাকার পর ব্যর্থ মনে মক্কায় ফিরে যেতে বাধ্য হয় মক্কার কুরাইশ বাহিনী। আর এটা ছিল তখনকার সময়ে স্বাধীনতা সুরক্ষায় বিশ্বনবী রাসুলে পাক (সা:)-এর অন্যতম ও বিস্ময়কর পদক্ষেপ।
তাছাড়া রাসুলে পাক (সা:) পবিত্র মদিনা মোনাওয়ারার স্বাধীনতা কে অক্ষুন্ন রাখার মানসে ওহুদের ময়দানে তাঁর পবিত্র দানদান মোবারক বিসর্জন দিয়ে স্বাধীনতা রক্ষার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আমাদের জন্য আর কি হতে পারে ? অবশেষে অনেক ঘাতপ্রতিঘাত ও আক্রমণ মোকাবেলা করে অষ্টম হিজরীতে মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে রাসুলে পাক (সা:) জালিম , সন্ত্রাসী ও পৌত্তলিকতার পাঞ্জা থেকে মক্কাকে মুক্ত করলেন। অত:পর সামান্য সময়ের ব্যবধানে স্বাধীন ইসলামী রাষ্ট্রের পরিধিকে বিস্তৃত করে সমস্ত আরব ভূ-খন্ড কে ভরে দিয়েছিলেন অবারিত শান্তি ও নিরাপত্তায়, অভূতপূর্ব শৃংখলায়, অপূর্ব সুষম বন্টনে, অবর্ণনীয় ভ্রাতৃত্ববোধে এবং স্বপ্নাতীত কল্যাণে।
রাসুূল (সা:)- এর সুমহান আর্দশকে অনুসরণ করে বীর বাঙলা মায়ের দামাল ছেলেরা বুকের তাজা রক্ত আর জীবন ত্যাগের বিনিময়ে শত শত বছরের পরাধীনতা আর গোলামির শিকল ভেঙে ১৯৭১ সালে ছিনিয়ে এনেছেন স্বাধীনতার পরিপূর্ণ স্বাদ ও লাল-সবুজের স্বাধীন একটি পতাকা। কিন্তু এ লাল সবুজের পতাকায় যে মর্যাদা বয়ে নিয়ে এসেছে , তাতে আমরা কি পেয়েছি সত্যিকারের স্বাধীনতা ? এক সাগর রক্ত, মা বোনের ইজ্জত, এতো প্রাণ ও ত্যাগ স্বীকার করে স্বাধীনতা অর্জনের উদ্দেশ্য বা কী ছিল ? তখন প্রত্যেকেরই প্রত্যাশা ছিল, পরাধীতার নাগপাশ থেকে মুক্ত হয়ে রাজনৈতিক ও নৈতিক ব্যবস্থাপনায় সার্থক অংশগ্রহণের মাধ্যমে সবাই সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার সুযোগ লাভ করবে। দারিদ্র, নিরক্ষরতা এবং অজ্ঞতার অন্ধকার থেকে মুক্ত হয়ে এমন একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী, শিক্ষিত ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে। যেখানে ভাষা, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সবাই জাতীয় অর্জনের সুফল ভোগ করবে। অথচ আজ স্বাধীনতার ৪৭ টি বছরে দেশবাসীর যে স্বপ্ন আর প্রত্যাশার রূপায়ণ সত্যি প্রশ্নবিদ্ধ । কিন্তু সেটা কেন ? আমাদের কিসের অভাব ? শুধু ঘাটতি একটাই তা হল দেশপ্রেম। আজ আমাদের জাতীয় দুর্যোগই প্রমাণ করে দেশপ্রেম বিলুপ্তির পথে। অথচ মানবতার ধর্ম ইসলামে দেশকে ভালোবাসার প্রতি অনেক বেশি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে । সুস্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ।
ইসলামের কথাই হলো দেশের স্বাধীনতা সুরক্ষিত করতে স্বদেশপ্রেম অতিবজরূরী। বিশ্বনবী রাসুলে পাক (সা:) -এর জীবনার্দশ ও স্বভাব চরিত্রে দেশপ্রেমের জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। তিনি নিজের মাতৃভূমি মক্কা নগরীকে অধীক বেশি ভালোবাসতেন। তাই স্বজাতি কর্তৃক নির্যাতিত,নিপীড়িত ও বিতাড়িত হয়ে জন্মভ’মি মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতকালে বার বার মক্কার দিকে ফিরে তাকিয়ে ভারাক্রান্ত কণ্ঠে আফসোস করে বলেছিলেন, ‘হে আমার মাতৃভূমি স্বদেশ! আমি তোমায় ছেড়ে যেতাম না’। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের জন্য , দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে পারা অনেক গৌরবের বিষয়। রাসুলে পাক (সা:) এ শিক্ষাই আমাদের দিয়েছেন। অষ্টম হিজরি মোতাবিক ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে রাসুলে পাক (সা:) যখন বিজয়ীবেশে প্রিয় জন্মভূমি মক্কাঢ প্রবেশ করলেন, তখন তাঁর স্বগোত্রীয় লোকেরা পবিত্র হেরেম শরিফে অপরাধী হিসেবে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁরানো। কিন্তু রাসুলে পাক (সা:)এমনি মুহূর্তে স্বীয় দেশবাসীকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন, যা বিশ্বের ইতিহাসে তিনি অতুলনীয় দেশপ্রেম, উদারতা ও মহানুভবতা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
যারা দেশকে ভালোবাসে, যারা দেশের মাটিও মানুষের পাই ইঞ্চি সীমানা রক্ষার জন্য ত্যাগ স্বীকার করে তাদের জন্য মুসলিম শরীফের একটি হাদিসে রাসুলে পাক (সা:) ইরশাদ করেন, ‘একদিন ও একরাতের সীমান্ত পাহারা ধারাবাহিকভাবে এক মাসের রোযা রাখা ও সারারাত নফল ইবাদতে কাটানো অপেক্ষা উত্তম’। তিরমিজি শরীফের অপর একটি হাদিসে হযরত উসমান (রা:) হতে বর্ণিত তিনি বলেন,আমি রাসুলে পাক (সা:) ইরশাদ করতে শুনেছি, (রাব্বে কারিমের পথে) একদিন সীমান্ত রক্ষার কাজে নিযুক্ত থাকা হাজার দিনের মনজিল অতিক্রম অপেক্ষা উত্তম। এছাড়াও দেশপ্রেমকে জাহান্নামের রক্ষাকবচ হিসেবে উল্লেখ করে রাসুলে পাক (সা:) ইরশাদ করেছেন, দুই ধরনের চক্ষুকে জাহান্নামের আগুন কখনও স্পর্শ করবে না, ১.সেই চক্ষু যে চক্ষু সর্বদা রাব্বে কারিমের ভয়ে কাঁদে, ২. যে চক্ষু রাব্বে কারিমের পথে (সীমান্ত) পাহারাদারি করে সমস্ত রাত রাত কাটিয়ে দেয়।
প্রকৃতপক্ষে দেশপ্রেম মহত্ত¡বোধ, মাতৃত্ববোধ ও ভ্রাতৃত্ববোধের মহান শিক্ষায় দানে অনুপ্রাণিত করে স্বীয়দেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধি এবং সুশৃংখলা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অংশ নিতে যখন উদ্বুদ্ধ করে , স্বীয় মাতৃভূমিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবার কর্মকৌশল উদ্ভাবনে আত্মনিয়োগ করার প্রকৃত শিক্ষা দেয়। তাই দেশের এই ক্লান্তিলগ্নে আমাদের স্বাধীনতা- সার্বভৌসত্ব রক্ষার পাশাপাশি স্বাধীনতা কে গুরুত্ববহ করতে দল, মত, ধর্ম,বর্ণ ঊর্ধে নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করা, দেশকে কিছু দেবার মনমানসিকতা তৈরী করা ,দেশকে ভালোবাসতে শিখা। তাহলেই ডিজিটাল সুখী সমৃদ্ধশালী, দুর্নীতি ও শোষণমুক্ত সম্ভাবনাময় দেশ গড়া সম্ভব। রাব্বে কারিম আমাদের একটি র্শীষ জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সর্বদা তাওফিক দান করুণ। আমিন

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mian Akbar Hussein ২০ জুলাই, ২০১৯, ১১:১৮ এএম says : 0
দেশপ্রেম! একদিকে বিশাল চায়না আরেকদিকে জায়ান্ট ভারত। মাঝখানে এক শান্তির নিবাস ভুটান। দ্রুত কিছু মানুষের মিলিওনীয়ার হওয়ার রেকর্ড যেমন ভুটানে নেই। ঠিক তেমনি ভুটানে একজন হোমল্যাস মানুষও নেই। সৃাস্থ্য চেকআপে ভুটানে কেউ যেমন-সিংগাপুর, থাইল্যান্ড, ইউরোপ -আমেরিকা ছুটোছুটি করেনা- ঠিক তেমনি ভুটানে হেলথকেয়ার সম্পূর্ন রুপে ফ্রি। ভুটানের হেল্থ মিনিস্ট্রির মূল লক্ষ হলো " এ নেশন উইথ দ‌্য বেস্ট হেলথ'। ২০১০ সাল থেকে ভুটানে যেকোনো রকম তামাক, ড্রাগ জাতীয় দ্রব্যের উৎপাদ,বন্টন , বিক্রি পুরোপুরি নিষিদ্ধ। ভুটান হলো পৃথিবীর সর্বপ্রথম ধূমপানমুক্ত দেশ। আর আমাদের গলিতে-গলিতে মোড়ে মোড়ে ইয়াবা, সিগারেটের ছড়াছড়ি। ভুটানের টার্গেট হলো- দেশের মূল সম্পদ যুব সম্প্রদায়কে বাঁচাতে হবে। ডাক্তার, হাসপাতাল, ক্লিনিকে ছুটোছুটি করার আগে রোগ প্রতিরোধের কার্যকরী উপায় বের করতে হবে। রোগের সাম্রাজ্যে বাস করে শুধু ল্যাব, ক্লিনিক, হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করলে কিছুই হবেনা। শারীরিকভাবে অসুস্থ জাতি সামনে আগাতে পারেনা। ভুটানের সবচেয়ে মনোহর দিকটি হলো তাদের ইকোলজি সিস্টেম। আমরা যেমন একদিকে খেলবে টাইগার-জিতবে টাইগার বলে বলে কে কার চেয়ে বড় দেশপ্রেমিক তার প্রতিযোগিতা করেছি- কিন্তু মরবে সুন্দরবন-মরবে টাইগার বুঝতেই পারছিনা। কারণ-আমরা ডাইরেক্ট এ্যাকশান আর নগদে বিশৃাসী। গাছ কাটো, খাল, নদি ভরাট করে শুধু নিজের মুনাফাটাই বাড়াও-এটাই আমাদের মূলমন্ত্র। কিন্তু ভুটান সম্পূর্ণ রুপে উল্টো। তাদের লক্ষ হলো- ব্যক্তিক মুনাফা না সামগ্রিক মুনাফা। ইকোলজি সিস্টেম নষ্ট হয়ে গেলে উঁচু ভবন নির্মাণ, পারমানিবক প্রকল্প ইত্যাদিতে দেশ রক্ষা পাবেনা। ভুটানের আইন অনুয়ায়ী দেশের ৬০% বনভূমি থাকতে হবে। কিন্তু এই বনভূমি ওদের রয়েছে ৭১%। যেখানে আমাদের মাত্র ৮%। এর পরেও ২০১৫ সালে মাত্র ১ ঘন্টায় ভুটানে পণ্চাশ হাজার নতুন গাছের চারা রোপণ করা হয়। ফলে ভুটান দুনিয়াতে এক অবাক কাণ্ড ঘটিয়েছে। ভুটানই পৃথিবীর একমাত্র 'কার্বন নেগেটিভ' দেশ। যার অর্থ হলো- এখানে যত কার্বন প্রডিউস হয় তার চেয়ে বেশি কার্বন প্রকৃতি এ্যবজর্ভ করে। আহা! পুরো ভুটানই আক্ষরিক অর্থে এক বিশুদ্ধ বাতাসের কলোনি। আর ঢাকার বাতাসে ২৪ ঘণ্টায় ১০০ কেজি সিসা, তিন হাজার ৫০০ কেজি এসপিএম, এক হাজার ৫০০ কেজি সালফার-ডাই অক্সাইড, ১৪ টন হাইড্রোজেন কোরাইড ও ৬০ টন কার্বন মনোক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাস মিশে। এই দেশের মানুষগুলো বেঁচে আছে কেমন করে???? শুধু যে বিশুদ্ধ বাতাসের কলোনি তাই না ভুটানের কেউই নিজের খাবারে নিজে বিষ মিশানোর চিন্তাও করতে পারেনা। ঐ যে আগেই বলেছিলাম-সবার আগে সৃাস্থ্য। পুরো ভুটান শতভাগ অর্গানিক। যে কোনো ধরনের কেমিক্যাল প্রডাক্টের আমদানী এবং ব্যবহার সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ। সবকিছুই একেবারে ন্যাচারালি কাল্টিভেটেড। ভুটানের আরেকটি অবাক করা সুন্দর দিক হলো-পৃথিবীতে একমাত্র ওদের রয়েছে-"দ্য মিনিস্ট্রি অব হ্যাপিন্যাস"। ২০০৮ সালে গ্রোস ন্যাশনাল হ্যাপিন্যাস কমিটি গঠিত হয়-যারা মানুষের ইনার পিসের খেয়াল রাখে। লক্ষ রাখে কেউ যেন মানসিক অবসাদ, ডিপ্রেশন-হতাশায় আক্রান্ত না হয়। এগুলো যত বাড়বে অশান্তি,নৈরাজ্য তত বাড়বে। বাড়বে খুন, ধর্ষণ,খুনোখুনি, কোপাকুপি। "জিডিপি"বা গ্রোস ডমেস্টিক প্রোডাক্টের চেয়ে ওদের গুরুতৃ "জিএনএইচ"বা গ্রোস ন্যাশনাল হ্যাপিন্যাসের প্রতি। ২০১৫ সালে ওরা দেশব্যাপী একটা সেন্সাস করে -যেখানে একটা প্রশ্ন ছিলো- ভুটানে বাস করে আপনি কতটুকু সুখী। ৯১% মানুষ নিজেকে সুখী বলে, ৪৩% নিজেদের ডীপলি সুখি বলে। ভুটান নিজেদের জাপান, কানাডা, মালেশিয়া, সিংগাপুর বানাতে চায়না। ভুটান নিজেদের ভুটানই বানাতে চায়। ভুটান আগামী এতো বছরের মাঝে পৃথিবীর সব দেশকে লোন দিবে বলে-চীৎকার করেনা। নিজেরাই যেন ঋণমুক্ত থাকতে পারে-সেই টার্গেটই তৈরি করে। ভুটানের কাজ বেশী, চাপাবাজি কম। সাবাশ ভুটান। (তথ্যঃ ব্রাইট সাইড) COLLECTED
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন