কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দিরা থাকছেন ঠাসাঠাসি করে। এক হাজার ৬৮৭ আসনের বিপরীতে সেখানে বর্তমানে প্রায় দ্বিগুণ বন্দি রয়েছে। তার ওপর জনবল-সঙ্কটের কারণে বন্দিরা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ অবস্থায় ২১৯ বছরের পুরোনো কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের কার্যক্রম চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা যায়, ১৭৯২ সালে শহরের ছোটরা এলাকার ৬৭ দশমিক শূন্য ৮ একর জায়গা নিয়ে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ওই কারাগারের পেরিমিটার ওয়ালের ভেতরে ৩০ দশমিক ৯৬ একর এবং ওয়ালের বাইরে ৩৬ দশমিক ১২ একর জায়গা রয়েছে। কারাগারের ভেতরের পাকা ও সেমিপাকা ১৩টি ভবনে ধারন ক্ষমতার চেয়ে রয়েছে দ্বিগুণ বন্দী।
এদিকে কারাগারের ৫৩৭ টি পদের মধ্যে ১১৬ টি পদই শূন্য। বিশাল এই খালি পদ রেখে সামনে এগিয়ে চলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষকে। সিনিয়র জেল সুপার জাহানারা বেগম বলেছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টির ব্যাপারে অবগত করা হয়েছে। আশা করি সহসাই সমস্যা কেটে যেতে পারে।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র জানায়, বর্তমানে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে ৫৩৭টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে কর্মরত রয়েছে ৪২১ জন। আর শূন্য রয়েছে ১১৬ পদ। শূন্য পদগুলোর মধ্যে আবার ৮১টি পদই কারারক্ষীর। যা একটি কেন্দ্রীয় কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অন্যান্য শূন্য পদগুলোর মধ্যে রয়েছে সহকারী সার্জন (মহিলা) একজন, ডেপুটি জেল সুপার একজন, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট একজন, ডিপ্লোমা নার্স একজন, ডিপ্লোমা নারী নার্স একজন, ফার্মাসিস্ট একজন, ল্যাবরেটরি টেকনিসিয়ান একজন, প্যাথলজিস্ট একজন, চিপ মেট্রোন একজন, প্রধান কারারক্ষী সাত জন, হিসাবরক্ষক একজন, কারা সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক দুইজন, সহকারী প্রধান কারারক্ষী চারজন, সরকারি মেট্রোন দুইজন, নারী কারারক্ষী দুইজন, টেইলার মাস্টার একজন, বøাক স্মিথ একজন, বাবুর্চি একজন, সহকারী একজন ও পরিচ্ছন্ন কর্মী একজনসহ মোট ১১৬ জন।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র জানায়, কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাবন্দির ধারণ ক্ষমতা এক হাজার ৭৪২ জন। কিন্তু কেন্দ্রীয় এই কারাগারটিতে সব সময়ই মোট ধারণ ক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ বন্দি থাকে। ফলে ব্রিটিশ আমলের জনবল দিয়ে বর্তমানে আর চলছে না কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারটি।
শূন্যপদগুলোর বিষয়ে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহানারা বেগম বলেন, দেশের সব কারাগারেই ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দী রয়েছে। কুমিল্লায়ও একই অবস্থা। লোকবল-সঙ্কটের বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সেখান থেকে নির্দেশনা এলে আমরা কেবল বাস্তবায়ন করে থাকি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন