জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আ.লীগ, বিএনপি ও বামপন্থী শিক্ষকরা মিলে ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’ নামে নতুন জোট গঠন করেছে। বুধবার বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান সেমিনার কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই জোট গঠনের বিষয়টি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভিসি প্যানেল নির্বাচন না দেওয়া, বিধি অনুযায়ী ডিন ও পরিচালক নিয়োগ না দেয়া, ‘শিক্ষক সমিতি শিক্ষকদের স্বার্থ কাজ না করে প্রশাসনের স্বার্থ দেখাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনিয়ম হচ্ছে দাবি করে এর বিরদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ সকল দল-মতের সমন্বয়ে এই শিক্ষক জোট গঠন করা হয়েছে। এই জোট আসন্ন শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে এক প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নিবে।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে জানা যায়, আওয়ামীপন্থী একাংশের শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ, বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ও বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন ‘শিক্ষক মঞ্চ’ এর সমন্বয়ে এই জোট গঠন করা হয়েছে।
সম্মেলন থেকে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সভাপতি অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের যুগ্ম আহবায়ক শামছুল আলমকে জোটের মুখপাত্র ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’ এর ব্যানারে আসন্ন নির্বাচনে অভিন্ন প্যানেলও ঘোষণা করা হয়। ১৫ সদস্যের এই প্যানেলে সভাপতিসহ ৭ টি পদে আওয়ামীপন্থী সাধারণ সম্পাদকসহ ৭ টি পদে বিএনপিপন্থী এবং একটি পদে বামপন্থী শিক্ষকের নাম ঘোষণা করা হয়।
এদিকে জানা যায়, ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পুনঃ নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা বিভক্ত হয়ে পড়েন। একটি পক্ষ ভিসির পক্ষে অবস্থান নেন। আরেকটি পক্ষ ভিসির পুনঃ নিয়োগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছেন ও ভিসির পদত্যাগ দাবি করেন।
অন্যদিকে আইআইটির পরিচালক নিয়োগসহ বেশ কিছু ইস্যুতে বিএনপন্থীদের সাথে ভিসির সাথে দূরত্ব তৈরি হয়। এরই প্রেক্ষিতে ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য শিক্ষক সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিক্ষকদের মধ্যে এই নতুন জোট তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাসা ভাড়া ভাতা ১৫ % কমানোর প্রতিবাদে মানব বন্ধন করেন নতুন জোট ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজে’র শিক্ষকরা। দুপুর বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে বক্তারা বাড়ি ভাড়া ভাতা কমানোর সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে প্রশাসনকে শিক্ষক বিরোধী মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান। তাঁরা দাবি করেন শিক্ষক সমিতি বাড়ি ভাতা কমানো নিয়ে কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। শিক্ষক বিরোধী এমন একটি সিদ্ধান্তের পরও শিক্ষক সমিতিকে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। তারা দাবি করেন, ‘শিক্ষক সমিতি শিক্ষকদের স্বার্থ না দেখে প্রশাসনের সাথে মিলে গেছে। তাই তারা এমন সিদ্ধান্তেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি।’
প্রসঙ্গত, বর্তমান শিক্ষক সমিতির দায়িত্বে ভিসিপন্থী শিক্ষকরা সভাপতি ও সম্পাদকসহ সংখ্যাগরিষ্ঠ পদে আসিন আছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন