বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

ডাকসু নির্বাচন ও অভিনব ডাস্টবিন মেলা

মহিউদ্দিন খান মোহন | প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

সব আলোচনা-সমালোচনা ও তর্ক-বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আসছে ডাকসু নির্বাচন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ- ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে গত ১১ ফেব্রুয়ারি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. এসএম মাহফুজুর রহমান তফসিল ঘোষণা করেন। হল সংসদগুলোর নির্বাচনও একই তফসিল অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা, একই দিন বেলা ২টায় হবে বাছাই। পরদিন দুপুর ১২টায় প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২ মার্চ দুপুর ১টা। তারপর দিন বিকাল ৪টায় প্রকাশ করা হবে চূড়ান্ত তালিকা। ১১ মার্চ সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ডাকসু এবং হল সংসদের ভোট গ্রহণ হবে। ভোটাররা (আবাসিক ও অনাবাসিক) নিজ নিজ হলের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভোট দেবেন।
ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ছাত্র সংগঠনগুলো তাদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন বলেছেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা নির্বাচিত নেতৃত্বের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।’ অপরদিকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক বাশার সিদ্দিকী বলেছেন, ‘এই তফসিলকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা স্মারকলিপি দিয়ে আলোচনা করে নির্বাচন পেছানোর কথা বলেছিলাম। কিন্তু আমাদের কোনো কথাই তো শুনলো না। আমাদের প্রধান দাবি আগে সহাবস্থানের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তিনি হলে ভোটকেন্দ্রের বিরোধিতা করে বলেছেন, হলগুলো তো তাদের (ছাত্রলীগ) দখলে। হলে ভোট হলে তা সুষ্ঠু হবে না।’ এ ছাড়া অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল শেষ পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দীর্ঘ বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
ডাকসুসহ দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যায়গুলোর ছাত্র সংসদ সচল করার দাবি করে আসছিলেন দেশের সচেতন মহল দীর্ঘদিন ধরেই। এমন কি ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘটের ঘটনাও ঘটেছে। তবে, লক্ষণীয় হলো, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্ব-প্রণোদিত হয়ে বা স্বেচ্ছায় এ নির্বাচন দেয়নি। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী একরকম বাধ্য হয়েই এ নির্বাচনের আয়োজন করেছে বলা যায়। আদালত যদি সময়সীমা বেঁধে দিয়ে নিবার্চন অনুষ্ঠানের নির্দেশ না দিতেন, তাহেলে এ নির্বাচন এ সময়ে হতো কিনা বলা মুশকিল। কেননা, আমাদের ছাত্র সংগঠনগুলোর যারা মুরব্বী, সেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ডাকসু বা অন্যান্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো রকম বিকার লক্ষ করা যায়নি। ১৯৯০ সালে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনের পর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। বিএনপি সমর্থিত ছাত্রদল তখন ডাকসুর ক্ষমতায় ছিল। এরপর গড়িয়ে গেছে ২৮ বছর। এই সময়ের মধ্যে গণতন্ত্র ও সুস্থ রাজনীতির ধারক হিসেবে পরিচয় দানকারী আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে একাধিকবার। তারা রাষ্ট্রের নানাবিধ কার্যাবলী নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করলেও ছাত্র সংসদ নিয়ে চিন্তাভাবনা করেছেন এমন প্রমাণ নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর এ ছাত্র সংসদ বিমুখতা অনেককেই অবাক করেছে। অথচ প্রধান দু’টি দলেরই শক্তিশালী ছাত্র সংগঠন রয়েছে। তারা নির্বাচন করে ছাত্র সংসদের ক্ষমতায় আসীন হতে পারতো। দেখা যাচ্ছে, তারা অত্যন্ত সুকৌশলে এ বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। এ ব্যাপারে বিএনপি বা আওয়ামী লীগ কেউ কাউকে দোষারোপ করার সুযোগ নেই। ছাত্র সংসদবিহীন এ অবস্থা চলমান থাকলেও দল দু’টি এ ব্যাপরে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, দাবি তোলা তো দূরের কথা। অবশ্য অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্রাকায় কিছু ছাত্র সংগঠন মাঝে মধ্যে ডাকসুসহ সব ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি তুলতো। তবে, তাদের দাবি বড়দের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারেনি। যা হোক শেষ পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে- এটা কম খুশির খবর নয়। তবে সে নির্বাচন কী রকম হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সঙ্গতকারণেই।
বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল নির্বাচনের ব্যাপারে বেশকিছু দাবি তুলেছিল। তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের কথা আমলে নেয়নি। তার প্রধান দাবি ছিল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই ক্যাম্পাসে সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করা। কেননা, সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কারণে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসছাড়া। শেষ কবে ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল বা সভা করেছে তা হয়তো কারোরই মনে নেই। বলা দরকার যে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ক্ষমতাসীন হয়ে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ইতিবাচক কোনো পদক্ষেপ না নিলেও তাদের ছাত্র সংগঠনগুলো ক্যাম্পাসে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য একে অপরকে বিতাড়িত করতে পিছ পা হয়নি।
তাই সহাবস্থানের বিষয়ে ছাত্রদল যে দাবি তুলেছে তার যৌক্তিকতা অস্বীকার করা যাবে না। কারণ, নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক ছাত্র সংগঠনগুলো ক্যাম্পাসে অবস্থান করে যদি প্রচারণাসহ সাংগঠনিক তৎপরতা নির্বিঘ্নে চালাতে না পারে, তাহলে নির্বাচন অবাধ হবার সুযোগ নেই। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিশ্বাবিদ্যালয় ক্যাম্পাস এখন ছাত্রলীগের একক নিয়ন্ত্রণে। তার এ একাধিপত্য যদি ডাকসু নির্বাচন চলাকালীনও অব্যাহত থাকে, তাহলে আরেকটি ৩০ ডিসেম্বরের ভোট দেখতে হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। হলে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের বিরোধিতা করে ছাত্রদল যে কথা বলেছে তার সাথে অনেকেই একমত। কেননা, হলগুলো এখন ছাত্রলীগের কবজায়। এ অবস্থায় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়া কঠিন। তবে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি আগেই সহাবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারে, তাহলে হয়তো হলে ভোটকেন্দ্র স্থাপিত হলে তেমন কোনো সমস্যা হবে না। সবকিছু নির্ভর করছে নির্বাচন পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ কিবশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর। প্রশাসন যদি ঘোষিত নীতিমালা পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে পারে, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলাসহ সবকিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর তা না করে যদি নির্বাচন কমিশনের মতো মৌখিক লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে এক পক্ষকে সুযোগ করে দেয়, তাহলে সে নির্বাচন কারো কাছেই গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।
ডাকসু নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছে; যা তার সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপে ইতোমধ্যেই প্রতীয়মান হয়ে উঠেছে। অন্যান্য ছাত্র সংগঠন থেকেও একই ধরনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। গত ৩১ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেছেন, ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা ক্যাম্পাসে তাদের দখলদারিত্বকে বৈধ করে নেবে। আর সে এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর রয়েছে দলীয় বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত ভিসি ও শিক্ষক সমন্বয়ে গঠিত প্রশাসন। তারা ছাত্রলীগের স্বার্থ দেখছে। অবশ্য ওইদিনই ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে ভিসি মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, ‘ডাকসু নির্বাচন সব মহলের কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আন্তরিক রয়েছে। কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠিকে সুযোগ দেওয়ার জন্য নয়, বরং সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করার মাধ্যমে আমরা ডাকসু নির্বাচন সম্পন্ন করতে চাই’। ভিসির এ বক্তব্যে অনেকেই আস্থা স্থাপন করতে পারছেন না। কারণ, ডাকসু নির্বাচনে সরকারের প্রভাব বিস্তারের আলামত ইতোমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। লক্ষণীয় হলো, হলগুলোতে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের বিরোধিতা করছে ছাত্রলীগ ছাড়া প্রায় সব ছাত্র সংগঠন। বিষয়টি নিয়ে প্রতিদ্ব›দ্বী ছাত্র সংগঠনগুলো ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ককে কেউ অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন না। বরং এটাকে দরকষাকষি বলেই তারা মনে করছেন। কিন্তু এ ইস্যুতে যখন সরকারের প্রভাবশালী কেউ অনাকাক্সিক্ষতভাবে কথা বলেন, তখন সন্দেহ জোরালো হওয়ার যথেষ্ট যুক্তি আছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘অতীতে ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র ছিল হলগুলোতে। এবারো ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র হলেই হবে। এ নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই’। মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যকে সচেতন মহল অশনি সঙ্কেত হিসেবেই দেখছেন। ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র কোথায় হবে তা একান্তই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সিদ্ধান্তের বিষয়। কর্তৃপক্ষ যেটা ভালো মনে করবে সেটাই করবে। প্রযোজনে প্রতিদ্ব›দ্বী ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে। এখানে সরকার বা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলটির তো কোনো ধরনের মন্তব্য বা অভিমত ব্যক্ত করার সুযোগ নেই। স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার রয়েছে। এখন যদি সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ওইসব বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিতে শুরু করেন, তাহলে নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে তা কী দোষের হবে? অপরদিকে ডাকসুর প্রাক্তন জিএস ও সাবেক মন্ত্রী জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু একটি পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘প্রশ্নবিদ্ধ ডাকসু নির্বাচন প্রত্যাশিত নয়। ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে উৎসবে পরিণত করে অবাধ নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য করতে অতীতের মতোই ভোটকেন্দ্র একাডেমিক ভবনে নিতে হবে’। ভোটকেন্দ্র নিয়ে উথাপিত বিতর্ক ও দাবি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কী সিদ্ধান্ত নেবে সেটা তার এখতিয়ারভুক্ত। তবে তার উচিত বাস্তবতাকে বিবেচনায় রেখে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সিদ্ধান্তে আসা। মনে রাখা দরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো বর্তমানে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের দখলে। তাই হলে ভোটকেন্দ্র স্থাপিত হলে সেখানকার আবাসিক ও সংযুক্ত ছাত্র-ভোটাররা কতটা নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে তা নিয়ে সবার মধ্যেই সংশয় রয়েছে।
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে এসব বিতর্কের মধ্যে সংবাদ মাধ্যমে উঠে এসেছে একটি মজাদার খবর। কয়েকজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান কিছু সমস্যাকে ময়লা হিসেবে চিহ্নিত করে সেগুলোকে ডাস্টবিনে ফেলার আহ্বান জানিয়েছে। আর এজন্য তারা টিএসসিতে আয়োজন করেছে এক অভিনব ‘ডাস্টবিন মেলা’র। ওইসব ময়লা ফেলার জন্য ডাকসু নির্বাচনকেই সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম বলেও উল্লেখ করেছে। শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত ময়লাগুলো হচ্ছে- ‘গেস্টরুম নির্যাতন’, ‘নারী নিপীড়ন’, ‘হেলমেট বাহিনী’ ‘ম্যানার শেখানো’, ‘শিক্ষক হেনস্তা’, ‘ক্যাম্পাসে টিয়ারশেল’, ‘ডালের নামে পানি’, ‘রড-চাপাতি-হাতুড়ি’, ও ‘ভাইদের প্রটোকল’ ইত্যাদি। ছাত্রদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়াসে এ অভিনব ডাস্টবিন মেলার আয়োজন বলে উদ্যোক্তা ছাত্ররা জানিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের এই জনসচেতনতামূলক প্রচারণার মর্মার্থ বুঝতে কারো বাকি থাকার কথা নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান সমস্যাগুলোই তারা ব্যাঙ্গাত্মক অবয়বে তুলে ধরেছে। এটা তাদের সৃষ্টিশীল চিন্তারও বহিঃপ্রকাশ। একই সঙ্গে এসব সমস্যার সমাধান যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ ছাত্রের কাক্সিক্ষত তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর ডাকসুতে নির্বাচিত তাদের প্রতিনিধিরাই পারে এসব সমস্যার প্রতিকার করতে। সেজন্য একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্রপ্রতিনিধিত্বশীল ডাকসু সবারই কাম্য। সে প্রত্যাশা কতটা পূরণ হবে এ মুহূর্তে অবশ্য তা বলা মুশকিল।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন