শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বরিশালে ২১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নদী ভাঙন প্রতিরোধ কাজ শুরু করল খুলনা শিপইয়ার্ড

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৫:১০ পিএম

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে প্রায় ২১০ কোটি টাকা ব্যয়ে কির্তনখোলা নদীর ভাঙন থেকে বরিশাল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট সহ মহানগরীর উত্তর প্রান্তের বিশাল এলাকার ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রম শুরু করেছে খুলনা শিপইয়ার্ড। সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নকশা ও সরাসরি তত্বাবধানে কির্তনখোলা নদী তীর রক্ষা ও ড্রেজিং প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন খুলনা শিপইয়ার্ড। ২০১৭-এর নভেম্বরে ৩৩১কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ এ নদী ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পটি একনেক-এর চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করে। পানি স¤পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল(অবঃ) জাহিদ ফারুক শামিম গত শনিবার বরিশাল মহানগরীর চরবাড়ীয়া এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্রয় নীতিমালার আওতায় ডিপিএম পদ্ধতিতে নৌবাহিনীর পক্ষে খুলনা শিপইয়ার্ড আগামী বছরের ৩০জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। গতমাসেই এলক্ষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে খুলনা শিপইয়ার্ডের ২০৯কোটি টাকার একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সরকারী সিদ্ধান্তের আলোকে খুলনা শিপইয়ার্ড শরিয়তপুরের নড়িয়াতেও সহস্রাধিক কোটি টাকা ব্যয়ে ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

প্রকল্পের আওতায় আগামী বর্ষার আগেই বরিশাল মহানগরীর উত্তর প্রান্তের বেলতলায় সিটি কর্পোরেশনের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট থেকে পুরো চরবাড়ীয়ার ৩ হাজার ৩৬৬ মিটার এলাকায় প্রায় ৪ লাখ ৮৫ হাজার জিও ব্যাগ ফেলে প্রাথমিকভাবে ভাঙন প্রতিরোধ করা হবে। পাশাপাশি ৩৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ এবং সমপরিমাণ উচ্চতার ৬ লাখ ৪৫ হাজার ৬২৪টি সিসি ব্লক, ৪৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ ও প্রস্থ এবং ৩০ সেন্টিমিটার উচ্চতার আরো এক লাখ ১৯ হাজার ৩৬৬টি সিসি ব্লক এবং ৪৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ ও প্রস্থ এবং সম পরিমান উচ্চতার আরো ৫৬ হাজার ৩২টি সিসি ব্লক কির্তনখোলার ভাঙন কবলিত এলাকায় সন্নিবেশ করা হবে বলে জানা গেছে।

আগামী ১৫মার্চ থেকে প্রকল্প এলাকায় এসব সিসি ব্লক তৈরীর কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন খুলনা শিপইয়ার্ডের জিএম নকশা ও পরকিল্পনা-ক্যাপ্টেন ফারুক-বিএন। তবে প্রাথমিকভাবে ১হাজার ২৫০ মিলিমিটার দৈর্ঘ ও ১ হাজার মিলিমিটার প্রস্থ প্রায় ৪ লাখ ৮৫ হাজার জিও ব্যাগ ভাঙন কবলিত এলাকায় ডাম্পিং করার পরেই তার ওপর বিভিন্ন মাপের সিসি বল্ক প্লেসমেন্ট –এর কার্যক্রম শুরু হবে। এর ফলে দীর্ঘদিনের ভাঙন প্রতিরোধ সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীল প্রকৌশলী।
প্রকল্পের আওতায় ভাঙন কবলিত এলাকার বিপরিত দিকে জেগে ওঠা বিশাল চরটির লুপ কাটিং করেও কির্তনখোলা নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় কির্তনখোলা নদীর পশুরীকাঠির পশ্চিম প্রান্তে জেগে ওঠা চরটির ৫ হাজার ৬শ মিটার ড্রেজিং করে গতিপথ পরিবর্তন করারও পরিকল্পনা রয়েছে ।
তবে মূল ডিপিপিতে ৩৩১কোটি টাকা ব্যায়ে ৪ হাজার ৫১০ মিটার এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ও সিসি ব্লক ফেলার কথা থাকলেও খুলনা শিপইয়ার্ডকে প্রাথমিকভাবে ৩ হাজার ৩৬৬ মিটার এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। বাস্তবতার আলোকে ড্রেজিং কাজ কিছুটা হৃাস পাওয়ায় ডিপিপি সংশোধন করে অনুমোদিত অর্থের মধ্যেই ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রম ৪ হাজার ৫১০ মিটারেই বর্ধিত করা হবে বলে জানা গেছে। তবে এলক্ষে ডিপিপি সংশোধনের উদ্যোগও গ্রহন করা হয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।

সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২০-এর বর্ষা মৌশুমের শুরুতেই কির্তনখালার নদী ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় ও খুলনা শিপইয়ার্ডের প্রকৌশলীগন। এভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রম সাফল্যজনক ভাবে সম্পন্ন হলে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ছাড়াও চড় বাড়িয়ার বিশাল জনপদ নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। পাশাপাশি গত দুই দশকে বরিশালে গড়ে ওঠা বিশাল নৌযান শিল্পের ডকইয়ার্ডগুলোও নদী ভাঙনের ঝুকিমূক্ত হবে বলে আশা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষ। ১৭-২-২০১৯।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন