বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

সাবেক মন্ত্রী মেননের সংসদ সদস্য পদ বাতিল ও শাস্তি দাবি সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০১৯, ৭:১২ পিএম

জাতীয় সংসদে কওমী মাদরাসাকে বিষবৃক্ষের সাথে তুলনা করায়, আল্লামা শাহ আহমদ শফীসহ আলেম সমাজকে কটাক্ষ করায় ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে গ্রেফতারের দাবিতে সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল করেছে মাদানী কাফেলা বাংলাদেশ। এছাড়া অনুরূপ দাবিতে শুক্রবার বাদ জুম’আ নগরীর কোর্ট পয়েন্টে হেফাজতে ইসলাম সিলেটের উদ্যোগেও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার বাদ জুমআ বন্দরবাজার জামে মসজিদের সামনে থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট প্রদক্ষিণ করে স্থানীয় কোর্ট পয়েন্টে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মাদানী কাফেলা বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সালেহ আহমদ শাহবাগীর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজ শাহীদ আহমদ হাতিমীর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন সংসদে দাঁড়িয়ে ইসলামের মৌলিক আকীদা খতমে নবুওয়ত অস্বীকারকারী কাফের কাদিয়ানীদের পক্ষে উদ্দেশ্য প্রনোদিত বক্তব্য রেখেছেন। কুরআন হাদীস ও শরীয়তের বিধান হলো যারা আকীদায়ে খতমে নবুওয়ত স্বীকার করেনা তারা কাফের ও অমুসলিম। বক্তারা বলেন, পৃথিবীর অধিকাংশ মুসলিম রাষ্ট্র কাদিয়ানীদেরকে অমুসলিম সংখ্যালঘু ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশে কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করা হলে তারা অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মতো নাগরিক অধিকার নিয়ে এ দেশে বসবাস করতে পারবে, তাতে কোন আপত্তি থাকবে না। উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনিধারা হলো কওমী মাদরাসার শিক্ষা। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনসহ ইসলাম ও দেশের সার্বভৌমত্ত্ব রক্ষা, মুসলমানদের ঈমান আকীদা সংরক্ষণ, জনগণের মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কওমী মাদরাসা ও আলেম সমাজের ত্যাগ ও অবদান ইতিহাসে চিরস্মরণীয়। কওমী শিক্ষার সাথে এদেশের আপামর জনসাধারণের গভীর সম্পর্ক। ঘুষ, সুদ, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত শান্তিময় সমাজ বিনির্মাণ কওমী মাদরাসা অনন্য নজীর স্থাপন করেছে।
বক্তারা আরো বলেন, রাশেদ খান মেনন কওমী মাদরাসাকে ‘বিষবৃক্ষ’ বলে আলেম-উলামা, ছাত্র শিক্ষক ও তৌহিদী জনতার অন্তরে আঘাত করেছেন। কওমী মাদরাসাকে বিষবৃক্ষের সাথে তুলনা করে তিনি সংবিধান লংঘন করেছেন। জাতীয় সংসদকে অপমানিত করেছেন। অবিলম্বে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল করতে হবে। তার বক্তব্য ইসলামী শিক্ষা, নাগরিক অধিকার ও রাষ্ট্রবিরোধী। দেশের সর্বোচ্চ ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব আমীরে হেফাজত আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে নিয়ে যে অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও ঔদ্ধত্যমূলক বক্তব্য দিয়েছে, এজন্য তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় তার আলেম ওলামা ও ধর্মবিদ্বেষের বিরুদ্ধে কঠিন কর্মসূচী দিয়ে সমুচিত জবাব দেয়া হবে।
সমাবেশে অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সিলেট মহানগর সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান, সহ সভাপতি একরামূল আজিজ, জামেয়া হেদায়াতুল ইসলাম সিলেটের প্রিন্সিপাল মাওলানা মুফতি মুতিউর রহমান, মাওলানা ফয়ছল আহমদ, জামেয়া দারুল কোরআনের শিক্ষক সৈয়দ মাওলানা সোয়াইব আহমদ, মাদানী কাফেলা সিলেট মহানগর আহবায়ক হাফিজ সাব্বির আহমদ রাজি, জামেয়া নাজাতুল উম্মাহ’র প্রিন্সিপাল মাওলানা তোফায়েল আহমদ ওসমানী, জাগরণ ইসলামী সাংস্কৃতিক দলের পরিচালক হাফিজ আব্দুল করিম দিলদার, ছাত্রনেতা মো. লুৎফুর রহমান, সহ সভাপতি আবুল খয়ের, খলিল উল্লাহ, মাওলানা আব্দুল হাই, ছাত্র মজলিস নেতা ইমতিয়াজ, দেলওয়ার হোসাইন ইমরান, হাফিজ সোহাইল আহমদ, সাজ্জাদ হোসেন রুমন প্রমুখ।
অন্যদিকে হেফাজতে ইসলাম সিলেটের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেছেন- ‘‘রাশেদ খান মেনন মন্ত্রীত্ব হারিয়ে প্রলাপ বকছেন। তিনি জাতীয় সংসদ ভবনে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ নোংরা ভাষায়, দেশের ৯০ ভাগ মুসলমানদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কওমী মাদ্রাসাকে ‘বিষবৃক্ষ’ এবং উলামা মাশায়েখ ও আল্লামা আহমদ শফিকে বিদ্রুপ করে উচ্ছৃঙ্খল বক্তব্য রাখছেন। আসলে কমিউনিস্ট বুর্জুয়া উপনিবেশরা চায় দেশে সব সময় অশান্তি এবং রাজনৈতিক উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে রাখতে। কিন্তু এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান কোন অবস্থাতেই নাস্তিক মুরতদ, কাদিয়ানীদের দালাল, কুচক্রিমহলের চক্রান্ত বাস্তবায়ন করতে দেবে না।’
শায়খুল হাদিস মাওলানা মাসুক আহমদ সালামির সভাপতিত্বে ও মুফতি ফয়জুল হক জালালাবাদীর পরিচালনায় শুক্রবার বাদ জুম’আ নগরীর কোর্ট পয়েন্টে হেফাজতে ইসলাম সিলেটের প্রতিবাদ সভায় বক্তারা উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
অনতিবিলম্বে রাশেদ খান মেননের সংসদ সদস্যপদ বাতিল ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয় সভায়।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন শায়খুল হাদীস মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী, শায়খুল হাদীস মাওলানা আব্দুল মতিন ধনপুরী, মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী, মাওলানা আসলাম রাহমানী, মাওলানা শায়েখ আব্দুর রহমান, মাওলানা জুহুরুল হক, হাফেজ একরামুল হক, মাওলানা তোফায়েল আহমদ ওসমানী, মাওলানা হাফিজুর রহমান, মাওলানা সালেহ আহমদ শাহবাগী, মাওলানা মামুন ইকরা, মাওলানা রুহুল আমিন প্রমুখ।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
হাসান ৯ মার্চ, ২০১৯, ১২:২৭ এএম says : 0
কি আর মন্তব্য করবো ভাই ? ধর্ম নিয়ে রাজনীতি ও বাড়াবাড়ি না করে মানুষ এর সেবা করাই ইসলাম এর শিক্ষা। ... হুজুর এর দৈনন্দিন জীবন যাপন কি ইসলাম সম্মত? এত টাকা খরচ করতে কোথায় পাওয়া যায় ?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন