বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

মুক্তির জন্য উন্মুখ মানুষ

হোসেন মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

উত্তাল মার্চের আজ ১২তম দিন। স্বাধীনতার পথযাত্রায় বাঙালি নানাভাবে বিদ্রোহের চিহ্ন এঁকে চলেছিল। প্রতিদিনই বাড়ছিল সরকারের সাথে বাংলার মুক্তিকামী মানুষের ব্যবধান। গোটা পূর্ব পাকিস্তান পরিচালিত হচ্ছিল শেখ মুজিবের নির্দেশে।
এদিন জাতীয় পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ জহির উদ্দিন তাকে দেয়া পাকিস্তান সরকারের খেতাব বর্জন করেন। রেডিও পাকিন্তান বর্জন করার ঘোষণা দেন খ্যাতনামা সংবাদ পাঠক সরকার কবীর উদ্দিন। ওদিকে এয়ার মার্শাল (অব.) আসগর খান লাহোরে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, পাকিস্তানকে রক্ষা করতে হলে শেখ মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা ছাড়া উপায় নেই। তিনি ঢাকায় গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে বৈঠকে বসার জন্য ইয়াহিয়া খানকে পরামর্শ দেন। এদিন বঙ্গবন্ধু দিনভর ঢাকায় পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতাদের সাথে বৈঠক করেন। এদিন মওলানা ভাসানী বক্তৃতায় বলেন, ‘গোটা দেশ এখন মুজিবের কথামতো চলছে। দেশপ্রেমিক সব মানুষ মুক্তির জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। এখন পিছ-পা হওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই। যারা মুজিবের কথার বাইরে যাবেন তারা হবেন গাদ্দার।’
এদিনে ঘটে আরো বিভিন্ন ঘটনা। সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি)-এর বাঙালি সদস্যরা ও ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস (ইপিসিএস) এসোসিয়েশনের সদস্যরা শেখ মুজিবের নির্দেশ মেনে চলার ঘোষণা দিয়ে শপথ গ্রহণ করেন। তারা আওয়ামী লীগের ফান্ডে তাদের এক দিনের বেতন দান করার ঘোষণা দেন।
চলচ্চিত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত পেশাজীবী, সাংবাদিক সমাজ, চারু ও কারুশিল্পীবৃন্দ সকলেই মিছিল সহকারে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তাদের সমর্থন জানান। এদিন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের কলাভবনে পটুয়া কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে চিত্রশিল্পীদের এক সভায় শাপলাকে জাতীয় ফুল নির্ধারণ করা হয়। পুলিশ ও আনসারদের মধ্যে ছুটি নেয়ার হিড়িক পড়ে। আবার কারা বিদ্রোহের ঘটনায় বগুড়া জেল ভেঙে পালিয়ে যায় ২৭ জন কয়েদি।
অন্যদিকে পূর্ব পাকিস্তানে বেসামরিক প্রশাসন অচল হয়ে পড়ে। আন্দোলেনের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সরকার ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবস উদযাপনের কর্মসূচি বাতিল করে। গভর্নর টিক্কা খানের পরামর্শে পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক শক্তিবৃদ্ধির লক্ষ্যে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সৈন্য আনা শুরু হয়। পরিস্থিতির অবনতি দেখে অনেক পাকিস্তানি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীরা তাদের পরিবারকে পাকিস্তানে পাঠাতে থাকে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন