শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বেগবান হচ্ছিল অসহযোগ

হোসেন মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

আরো বেগবান হচ্ছিল অসহযোগ আন্দোলন। একের পর এক বিভিন্ন সংগঠন স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করছিল। তাদের মধ্যে ছিল এদিন সিএ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, নৌপরিবহন, ডক, পাটকল এবং সুতাকলের শ্রমিক সংগঠন।
অন্যদিকে বেসামরিক পর্যায়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণ কোথাও ছিল না। সেনানিবাসের বাইরে লুপ্ত হয়েছিল পাকিস্তান রাষ্ট্রের শাসন। বিরাজমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বিশেষ বিমানযোগে ঢাকা ত্যাগ করেন ঢাকার জাতিসংঘ ও পশ্চিম জার্মানি দ‚তাবাসের কর্মচারী, তাদের পরিবার এবং ইতালি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার ২৬৫ জন নাগরিক।
বিপাকে পড়া পাকিস্তানের ‘খ’ সামরিক অঞ্চল বা পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও সামরিক প্রধান টিক্কা খান আন্দোলন দমন ও কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় কঠোর ব্যবস্থা নেন। তিনি এক সামরিক আদেশ জারি করেন যাতে বলা হয়, প্রতিরক্ষা বিভাগের বেসামরিক কর্মচারীরা ১৫ মার্চের মধ্যে কর্মস্থলে যোগ না দিলে তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে। শুধু তাই নয়, সামরিক আইনে বিচার করে এসব আইন অমান্যকারীকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড দেয়া হবে। তারপরও অনেকেই এ আদেশে সাড়া দেননি।
শেখ মুজিব এর প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘কোনো শক্তিই বাংলার জনগণের ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারবে না। পাকিস্তানের সামরিক সরকারের হুমকি-ধামকি বাংলার স্বাধীকার আন্দোলনকেও ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।’ বাস্তব পরিস্থিতিতে তখন সরকারের আদেশ-নির্দেশ পালনের বিষয়টি গৌণ হয়ে হয়ে পড়েছিল।
এদিকে দেশের যেসব জেলা ও থানায় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ তখনো গঠিত হয়নি সেসব স্থানে দ্রুত তা গঠনের তাগিদ দেয়া হয়। এদিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে সঙ্কট নিরসনে পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন দলের নেতাদের মধ্যে আন্তরিকতা পরিলক্ষিত হচ্ছিল। ন্যাপ প্রধান খান আবদুল ওয়ালি খান এদিন বিকেলে ঢাকায় আসেন।
ঢাকা বিমানবন্দরে এক সাক্ষাৎকার দেন তিনি। এতে তিনি বলেন, ‘সামরিক শাসন প্রত্যাহার ও নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর দাবির প্রতি আমার প‚র্ণ সমর্থন রয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কটকে জটিল থেকে জটিলতর দিকে ঠেলে দিয়ে দেশের অখন্ডতা বিপন্ন করে তোলা হয়েছে।’
এদিন লাহোরে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে প্রতিনিধিত্বকারী সংখ্যালঘু দলগুলোর এক যৌথ সভা লাহোরে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে ঢাকায় গিয়ে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা শুরু এবং অবিলম্বে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার যথাযথ পরিবেশ তৈরি করার জন্য প্রেসিডেন্টের প্রতি আহবান জানানো হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন