শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

শহীদ মিনার হয়ে ওঠে আন্দোলনের কেন্দ্র

হোসেন মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

আজ ২০ মার্চ। ঢাকায় বিভিন্ন স্থানে চলছিল মিটিং মিছিল। শহীদ মিনার পরিণত হয় আন্দোলনের কেন্দ্রস্থলে। সংগ্রামী মানুষ গিয়ে জড়ো হচ্ছিল সেখানে। প্রায় সারাদিন ধরে চলছিল সভা সমাবেশ। বঙ্গবন্ধু এদিন চতুর্থদিনের মত ইয়াহিয়া খানের সাথে বৈঠকে মিলিত হন। এদিন উভয়পক্ষেই সাহায্যকারীরা উপস্থিত ছিলেন।
দুই ঘণ্টারও বেশি সময় তারা আলোচনা করেন। এ সময় তিনি জয়দেবপুরে সৈন্যদের গুলিবর্ষণের ব্যাপারে তাকে জানালে তিনি ঘটনা তদন্তের আশ্বাস দেন। পরে বঙ্গবন্ধু বাসভবনে ফিরে সাংবাদিকদের আলোচনায় অগ্রগতির কথা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা একটি মীমাংসায় আসার চেষ্টা করছি।’ তিনি বলেন, সোমবার প্রেসিডেন্টের সাথে আবার বৈঠক হবে। তিনি আরো বলেন, তার দলের তিনজন বিশেষজ্ঞ পরিস্থিতি ও সমস্যা নিয়ে পুনরায় আলোচনায় বসবেন।
এদিন পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র সরকারী-আধাসরকারী, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে অসহযোগ কর্মসূচি পালিত হচ্ছিল। উত্তোলিত ছিল কালো পতাকা। বাংলার মুক্তিকামী মানুষ ক্রমেই দৃঢ়সংবদ্ধ হচ্ছিল, বাড়ছিল শাসকদের সাথে ব্যবধান। ছাত্র-জনতাসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ইস্পাত-কঠিন ঐক্যের বন্ধন। এদিন রাতে বিবিসি মন্তব্য করে যে পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক সংকট দূরীভূত হচ্ছে।
গোটা দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে উঠছিল। রাজনৈতিক মহলে দেখা দিয়েছিল উদ্বেগ ও আশঙ্কা। পাকিস্তানের ঐক্য ও অখন্ডতা নিয়ে শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন। এ পরিস্থিতিতে করাচিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলি ভুট্টো শেখ মুজিবের সাথে বৈঠকে বসতে ২১ মার্চ ঢাকা আসার ঘোষণা দেন।
এদিন আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা পল্টন ময়দানে সমবেত হয়ে কর্নেল (অব.) ওসমানীর নেতৃত্বে কুচকাওয়াজ করেন। তারা মুক্তি সংগ্রামে যোগ দেয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। তাদের এ ভূমিকা জনসাধারণের মনে সাহস সৃষ্টি করে। এদিন বিকালে পাকিস্তান মুসলিম লীগ নেতা মিয়া মোহাম্মদ দৌলতানা ও পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামী নেতা মাওলানা মুফতি মাহমুদ পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য বিকালে শেখ মুজিবের বাসভবনে যান।
প্রায় এক ঘণ্টার আলোচনা শেষে তারা হোটেলে ফেরার পথে রাজপথ কাঁপানো মিছিল দেখতে পান। হোটেলে সাংবদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তারা বলেন, গোটা পূর্ব পাকিস্তান এখন শেখ মুজিবের নির্দেশে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে পাকিস্তানের সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসন কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ অবস্থার দিকে যাচ্ছে বলেও তারা মন্তব্য করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন