বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ করে দেয়া বক্তব্য ও আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে পদত্যাগের দাবীতে অটল রয়েছে আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীরা। ভিসি’র পদত্যাগই এখন একমাত্র দাবী বলে জানিয়ে তা নভ মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবারী ঘোষনা দিয়েছেন ছাত্রছাত্রীরা। সোমবারও ভিসি’র পদত্যাগের দাবীতে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা ক্যাম্পাসে ও বাইরে বিক্ষোভ মিছিল করে। তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টর কাছেও স্মারকলিপি প্রদান করেছে। বিগত স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সম্পৃক্ত না করা ক্ষুদ্ধ ছাত্রÑছাত্রীদেও ‘রাজাকারের ব্চ্চা বওে ঘাল দেয়অ সহ নানা অভিযোগে ক্যাম্পাসের আন্দোলন ক্রমশ বাএর ছড়াচ্ছে। পরিস্তিতি শান্ত রাখতে গত বুধবার মধ্যরাতের পওে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষনা কওে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হলেও বেশীরভাগ ছাত্রÑছাত্রী এখনো ক্যম্পাসেই অবস্থান করছে।
এদিকে গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর কলাবাগানে লিয়াজো অফিসে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট কমিটির সভায় শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন ভিসি। সভা পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, ‘উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক জানিয়েছেন, ‘গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটি কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমার প্রদত্ত বক্তব্যের একটি বাক্যকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে কিছু ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে, আমি এই বিষয়ে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে রাজাকার সম্বোধন করিনি। বরং যারা মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপনের অনুষ্ঠানে বাঁধা সৃষ্টি করতে চায় তাদের এমন কার্যক্রমকে রাজাকার সাদৃশ্য মর্মে মন্তব্য করেছি। তবে এ শব্দটি আমি কোনভাবেই আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে বলিনি। এর পরেও যদি আমার বক্তব্যে কোন শিক্ষার্থী মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে থাকে, তবে তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি’।
তবে উপাচার্য দুঃখ প্রকাশ করে বক্তব্য দিলেও তা প্রত্যাখান করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবী নিয়েই ক্যাম্পাসের ভেতরে ও বাইরে আন্দোলন অব্যাহত রখেছে। এ দাবীতে প্রতি দিনের ন্যায় সোমবারও ক্যাম্পাসে ও বাইওে আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও চলছে। এর মধ্যে রণসঙ্গীত, ব্যঙ্গ নাটিকা, কবিতা ও প্রতিবাদী গান পরিবেশন করছে শিক্ষার্থীরা। কারো কাপড় বেধেও মিছিল করেছে ছাত্রÑছাত্রীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধীক শিক্ষার্থী বলছেন, উপাচার্য শুক্রবার যে বক্তব্য দিয়েছে তা তার মিথ্যাচার। কেননা তিনি শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেননি বলে দাবী করেছেন। অথচ তিনি যে গালি দিয়েছেন সেটা একেবারেই সত্যি এবং এর অনেক প্রমানও রয়েছে। তাছাড়া তিনি যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন তাতেও শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে ভিসি উল্লেখ্য করেছেন, যারা আন্দোলন করছে তাদেরকে রাজাকার বলেছেন। আন্দোলন শিক্ষার্থীরাই করেছে বলে দাবী ছাত্রছাত্রীদের। বাহির থেকে এসে কেউ আন্দোলন করেনি। সুতরাং আমরা ভিসি’র ওই মিথ্যাচার-এর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন