বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা ২১তম দিন অতিক্রম করল। পরিস্থিতি উত্তরণে কোন তরফের উদ্যোগও নেই। শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলার অভিযোগ এনে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবীতে অনড় শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন কিছুটা ঢিলে ঢালা হলেও ভিসির পদত্যাগের দাবী থেকে এক চুলও নরেনি শিক্ষার্থীরা। তবে আন্দোলনকারীরা কর্মসূচী পালনে কিছুটা শিথিল করায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জনদুর্ভোগ কমেছে। শুক্রবার থেকে আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাস সংলগ্ন ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধের পরিবর্তে কম্পাসে প্রশাসনিক ভবনের সামনেও অবরোধে বরয়ে।
আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন শিফাত জানান, সোমবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে সাপ্তাহিক এবং পহেলা বৈশাখ উৎসবের ছুটি শুরু হওয়ায় আপাতত তাদের কর্মসূচী প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান করার মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে।
এদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বাংলা বর্ষবরণ উৎসবও পালন করেছে। শিক্ষার্থী লোকমান হোসেন সাংবাদিকদের জানান, প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বর্ষবরণ উৎসব পালন করা হতো। এবার কর্তৃপক্ষ কোন আয়োজন না করায় শিক্ষার্থীরা নিজেদের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখ উৎসব পালন করেছে।
বিগত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আয়োজিত চা চক্র অনুষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে একদল শিক্ষার্থী। ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চা চক্র ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতে পারেনি। একইদিন বিকালে ক্যাম্পাসে অপর এক অনুষ্ঠানে সকালের ঘটনায় উপাচার্য প্রফেসর ড. এস.এম ইমামুল হক দাবি করেন যে, আন্দোলনকারীদের আচরণ ‘রাজাকারের সামিল’। অবশ্য শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন ওই সময়ে উপাচার্য আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে এখন তা অস্বীকার করছেন। শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে উল্লেখিত অভিযোগ তুলে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের দুদিন পর উপাচার্য তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ এবং সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫ দিনের ছুটি চেয়ে গত মঙ্গলবার আবেদন করলেও শিক্ষার্থীরা তা আমলে না নিয়ে তার পদত্যাগের দাবীতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।
ইতোমধ্যে বরিশাল সদর আসনের এমপি ও পনি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম-এর উপস্থিতিতে এক সভায় ভিসির কর্মকালের অবশিষ্ট সময় ছুটিতে যাবার শর্তে শিক্ষার্থীরা অঅন্দোলণ স্থগিতের ঘোষনা দিলেও তা কার্যকর হয়নি। ভিসি মাত্র ১৫দিনের ছুটির দরখান্ত করেছেন। অথচ বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়ে তা কর্মকাল এখনো দেড় মাস অবশিষ্ট রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলবস্থা অব্যাহত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন