মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নূর হোসেনের ট্রাক টার্মিনালের চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ এখন ভাগিনার দখলে

নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ৭:৫৬ পিএম

সাত খুন মামলার প্রধান আসামী বহু সমালোচিত সেই নূর হোসেনের ট্রাক টার্মিনালের চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ এখন ভাগিনা দেলোয়ারের দখলে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি, আওয়ামীলীগ নেতা ও সিদ্ধিরগঞ্জের কথিত এক মামাকে ম্যানেজ করে প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। সেই নূর হোসেনের স্টাইলে ট্রাক টার্মিনাল ছাড়াও কাঁচপুর সেতুর পশ্চিমপাশে ও শিমরাইল ঈদগাহ এলাকায় ৩টি ষ্পটে ১০/১২ জনের একটি চাঁদাবাজ গ্রুপ লাঠি হাতে ট্রাক প্রতি ১০০ টাকা করে জোর পূর্বক চাঁদাবাজি করছে।
সাত খুন ঘটনার পর দীর্ঘদিন এ চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও গত জানুয়ারি মাস থেকে এ চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে আসছে বাংলাদেশ ট্রাক কভ্যার্ডভ্যান মালিক সমিতি শিমরাইল শাখার সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ওরফে ভাগিনা দেলোয়ার। গত বছরের শেষের দিকে দেলোয়ার হোসেন ওরফে ভাগিনা দেলোয়ারকে বাংলাদেশ ট্রাক কভ্যার্ডভ্যান মালিক সমিতি শিমরাইল শাখার সভাপতি ও নোমান হোসেন টুটুলকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি গঠন করতে সিদ্ধিরগঞ্জের কথিত এক (যিনি সিদ্ধিরগঞ্জের সকল রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীর মামা) মামার সমর্থন থাকায় চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ নিতে কোন ঝামেলায় পড়তে হয়নি ভাগিনা দেলোয়ারের।
এছাড়াও ঐ কমিটির প্রধান উপদেষ্টা করা হয় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ মজিবুর রহমানকে। এ কমিটিতে নূর হোসেন আমলের সেই ক্যাশিয়ার আবুল কাসেমকেই রাখা হয়েছে। শিমরাইল ট্রাক টার্মিনালসহ ৩টি স্পট থেক প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করার জন্য ৩টি ভাগে মৌখিক চুক্তিতে ইজারা দিয়েছেন ভাগিনা দেলোয়ার। শিমরাইল ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় চাঁদা আদায় করার জন্য সামসুদ্দিন নামে এক ব্যাক্তিকে মাসে ৪ লাখ টাকায় ইজারা দিয়েছেন। কাঁচপুর সেতুর পশ্চিমপাশে প্রতি মাসে ৪ লাখ টাকা চুক্তিতে চাঁদাবাজির ইজারা নিয়েছেন শামীম, করিম ও হারুন। এছাড়াও শিমরাইল ঈদগাঁ এলাকায় অভি নামে এক ব্যাক্তিকে ৭৫ হাজার টাকায় মাসিক চুক্তিতে চাঁদাবাজি করার জন্য নিয়োগ দিয়েছেন দেলোয়ার হোসেন ওরফে ভাগিনা দেলোয়ার। অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশ ট্রাক কভ্যার্ডভ্যান মালিক সমিতি শিমরাইল শাখার সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ওরফে ভাগিনা দেলোয়ার সিদ্ধিরগঞ্জের কথিত এক (যিনি সিদ্ধিরগঞ্জের সকল রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীর মামা) মামাকে ম্যানেজ করে নূর হোসেনের সেই ট্রাক টার্মিনালে চাঁদাবাজি করে আসছে।
সেই নূর হোসেনের স্টাইলে ট্রাক টার্মিনাল, কাঁচপুর সেতুর পশ্চিমপাশে ও শিমরাইল ঈদগা এলাকায় ৩টি ষ্পটে ১০/১২ জনের একটি চাঁদাবাজ গ্রুপ লাঠি হাতে ট্রাক প্রতি ১০০ টাকা করে জোর পূর্বক চাঁদাবাজি করছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মীর শাহীন শাহ পারভেজকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে ফেলায় চাঁদা আদায়ে কোন পুলিশি ঝামেলা পড়তে হয় না জানায় ভূক্তভোগীরা। এছাড়াও রাজনৈতিক ছত্রছায়া পেতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ মজিবুর রহমানকে প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়াও এ চাঁদার ভাগ পায় বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ সংগঠনের একাধিক নেতা।
এ বিষয়ে কথা সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ মজিবুর রহমান বলেন, আমাকে ঐ সংগঠনের উপদেষ্টা করা হয়েছে তা ঠিক আছে। তবে চাঁদা উত্তোলনের বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি সংগঠনের নামে কেউ চাঁদাবাজি করে তিনি ঐ সংগঠনের সাথে থাকবেন না বলে জানিয়েছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মীর শাহীন শাহ পারভেজ বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ ছাড়া চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় কি না এমন প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন