শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

স্বার্থান্বেষীদের প্ররোচনায় তারুণ্য আজ জঙ্গিবাদের অন্ধকারে: চিত্রনায়ক রিয়াজ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৯, ৫:৪১ পিএম

পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়ে চিত্রনায়ক রিয়াজ আহমেদ বলেন, জীবনের শিশু, কিশোর, তরুণ ও বৃদ্ধ এই ধাপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে তারুণ্য। তারুণ্যের আলোয় আলোকিত হয় সমাজ ও রাষ্ট্র। কিন্তু কিছু বিপদগামী,স্বার্থান্বেষী মানুষের প্ররোচনায় এই তারুণ্য হারিয়ে যাচ্ছে জঙ্গিবাদের অন্ধকারে। তাই সঠিক পথে থাকতে হবে।
আজ মঙ্গলবার কল্যাণপুর গার্লস স্কুল এন্ড কলেজে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের ‘জাগো তারুণ্য রুখো জঙ্গিবাদ’ শিরোনামে নিয়মিত জঙ্গিবাদবিরোধী সেমিনারে এ কথা বলেন রিয়াজ।
তিনি বলেন, ২০০২ সালে ময়মনসিংহে একসাথে ৪টি হলে বোমা হামলা হয়েছিল, ২টি হলে আমার সিনেমা চলছিল। ২৭ জন মারা যায় ঐ ঘটনায়। আহতদের দেখতে গিয়েছিলাম ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আমি কোনদিন ভুলব না, সবুর নামে একজন ব্যক্তি বোমা বিষ্ফোরণে যিনি দুই পা হারিয়েছেন তার পাশে দাড়ানোর পর সে বলল, ‘দুই পা হারায়ছি তো কি হইয়ে আপনি আমাকে একটা অটোগ্রাফ দেন’ এ কথা শোনার পর আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। সেখানে দাড়িয়ে অঝোড়ে কেঁেদছিলাম। আমরা বাঙালিরা অনেক সহজ-সরল। আমাদের এই সরলতার সুযোগ নিয়ে ধর্মের মিথ্যা ভয় ও বেহেশত এর প্রলোভন দেখিয়ে তরুণদের জঙ্গিবাদের দিকে নিতে যাচ্ছে একটি মহল।
রিয়াজ বলেন, এরপর ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা, ১৭ আগষ্ট ২০০৫ এ ৬৩টি জেলায় একযোগে বোমা হামলা, ১৮ জুলাই ২০১৬ তে হলি আর্টিজান হামলা। এই হামলাগুলো কারা করছে? তরুণদেরই ব্যবহার করা হচ্ছে এই সব হামলায়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বাণী বিকৃত করে পবিত্র কোরআনের ভুল তর্জমা করে জঙ্গিবাদের দিকে ঠেলে দিয়ে এইসব নৃশংস হামলা করা হচ্ছে। পবিত্র কোরআনের সূরা আল মায়িদায় বলা হয়েছে, ‘একজন নিরীহ মানুষকে হত্যা করা আর সমস্ত মানবজাতি হত্যা করা এক’। তাই ভুল পথ থেকে সরে আসতে হবে তরুণদের। পাশাপাশি সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আলেম সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে কোরআন হাসিদের সঠিক ব্যাখ্যা ও তর্জমা নিয়ে। তাহলেই এই সমস্যার সমাধান হবে। ইতিমধ্যেই সরকার প্রধানের জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কারনে বাংলাদেশ জঙ্গিমুক্ত হয়েছে। তবে শকুনের দল বসে নেই তাই আমাদেরও সচেতন থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শিক্ষার্থীদের মাঝে সুচিন্তা ফাউন্ডেশন এবং এই কার্যক্রমের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব তুলে ধরে আজ সারাবেলা সম্পাদক জব্বার হোসেন বলেন, ধর্ম প্রত্যেকের ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং অধিকার। সেই বিশ্বাস ও অনুভূতির জায়গাটিতে তারা আঘাত করছে ক্ষমতা ও বাণিজ্যিক স্বার্থের লোভে। যার সঙ্গে ধর্মের আদৌ কোনো সম্পর্ক নেই। জঙ্গিবাদের ফলে ইসলামকে ক্ষতিগ্রস্থ করা হচ্ছে। তারা যে ইসলামের কত বড় শত্রæ তা আমাদের বোঝা দরকার। ইসলামে বলা হয়েছে, সেই প্রকৃত মুসলমান যার কাছে অন্য ধর্মের মানুষের জান, মাল নিরাপদ থাকে।
অনুষ্ঠানে কল্যাণপুর গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল শাহনাজ বেগম বলেন, বাংলাদেশ ইসলামিক দেশ। আমরা কি চাইবো জঙ্গিবাদের দেশ হিসিবে বাংলাদেশ পরিচিত হোক? অবশ্যই না। আমরা চাই অসাম্প্রদায়িক একটি দেশ। ধর্ম নিরোপক্ষ শান্তিপূর্ণ একটি দেশ চাই আমরা।
কল্যানপুর ৫ নম্বর রোডের একটি বাড়িতে জঙ্গি আস্তানায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অপারেশনের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ইসলাম মানুষ হত্যা সমর্থন করে না। তবুও কেন তরুণরা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পরছে? কারণ তাদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। ব্রেন ওয়াশ করা হচ্ছে। লক্ষ্য করলে দেখা যায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়া, বিভিন্ন অপারেশনে নিহত হওয়া সব জঙ্গিরাই তরুণ। তাই বুঝতে হবে তরুণদেরকেই টার্গেট করে জঙ্গি বানানো হয়। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে সমৃদ্ধির পথে।
সুচিন্তা’র গবেষণা সেলের পক্ষ থেকে আশরাফুল আলম শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মে জঙ্গিবাদ সমর্থন-অসমর্থন বিষয়ে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আজ সারাবেলা’র সম্পাদক জববার হোসেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন