নেজামে ইসলাম পার্টি
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নেতৃবৃন্দ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রীকে হিজাব পরিধানের অভিযোগে ক্লাস থেকে বের করে দেয়ার ঘটনার পুনরাবৃত্তির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করে বলেছেন যে, হিজাব পরিহিতা ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দেয়া অমার্জনীয় অপরাধ। এর আগে একই বিভাগের ছাত্রী নাবিলা ইকবালকে নেকাব না খোলায় ক্লাস থেকে বের করে দেয়া হয়। তারা বলেন, ঢাকা বিশ^বিদ্যলয়ে এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত। কেননা হিজাব, নেকাব ও বোরকা মুসলিম নারীদের সংস্কৃতি। অবিভক্ত বাংলার এতদাঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগণের ধর্মীয় বিশ^াস-মূল্যবোধ, শিক্ষা ও সংস্কৃতি ধারণ, চর্চা ও অনুশীলন ও বিকাশমান রাখার জন্যেই একদিন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তারা আরো বলেন, কথিত শিক্ষকের ভাবলোক ও মানসলোকে রয়েছে অতিমাত্রায় ইসলামী সাংস্কৃতিক বিদ্বেষ। তিনি স্বজাতির সংস্কৃতিকে দেখেন ব্রাহ্মণ্যবাদী ও নাস্তিক্যবাদী প্রকরণে এবং তিনি যে সা¤্রাজ্যবাদ, ইহুদীবাদ ও ব্রাহ্মণ্যবাদের সাংস্কৃতিক বলয়াবদ্ধ, তা তার কৃত-কর্মে বার বার প্রতিফলিত হচ্ছে ।
নেতৃবৃন্দ পার্টির এক সভায় এসব কথা বলেন। সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা আবদুর রশিদ মজুমদারের সভাপতিত্বে পুরানাপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি অধ্যাপক এহতেশাম সারোয়ার, মহাসচিব মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা শেখ লোকমান হোসেন ও মুফতি এএনএম জিয়াউল হক মজুমদার, অর্থ সম্পাদক মুফতি আবদুল কাইয়ূম, প্রচার সম্পাদক মাওলানা মমিনুল ইসলাম, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসান, দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ আহসান, ইসলামী ছাত্র সমাজের সভাপতি আবদুল্লাহ আল-মাসুদ ও মহাসচিব মো. নুরুজ্জামান প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন যে, জাতীয় ঐতিহ্য চেতনায় হিজাবের প্রভাব এদেশের মুসলিম মহিলাদের ওপর অপরিসীম। মুসলিম নারীদের পৃথক অস্তিত্ব ও স্বাতন্ত্র্যের অন্যতম ভিত্তি হল ইসলামী পোশাক হিজাব। মুসলিম পরিচিতির অন্যতম উৎস এ ভিত্তিকে দুর্বল ও বিকৃত করার এবং হিজাবের সংস্পর্শ ও প্রভাব থেকে শিক্ষার্থীদেরকে সরিয়ে নেয়ার প্রতিক্রিয়াশীল তৎপরতার ধারা ঢাবিতে বার বার লক্ষ্য করা যায়। ঢাবিতে ই্সলামী পোশাক-পরিচ্ছদ বিদ্বেষী মনোভাব মুসলিম সাংস্কৃতিক অবক্ষয়েরই বহিঃপ্রকাশ। কথিত শিক্ষকের আচরণে জাতীয় আদর্শ, ইতিহাস-ঐতিহ্য, রীতিনীতি, তাহযিব-তমদ্দুন ও স্বকীয়তা এবং চিরায়ত মূল্যবোধ বিরোধী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। তার মধ্যে বিধর্মীয় সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ থাকলেও মুসলিম সংস্কৃতির প্রতি কোনো আগ্রহ নেই। তিনি এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের স্বতন্ত্র জাতীয় সংস্কৃতির কথা ভাবতে পারেন না। তার আচরণ, চেতনা ও উপলব্ধিতে প্রবল ইসলাম বিরোধী শিক্ষা-সংস্কৃতি, বিশ্বাস, অসহিষ্ণুতা ও ঘৃণা-বিদ্বেষ বার বার প্রতিবিম্বিত হচ্ছে। হিন্দুত্ববাদী অপসংস্কৃতির মোকাবেলায় মুসলিম সংস্কৃতিকে সুস্থ ও স্বাভাবিক করে তোলার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর নিজস্ব ধর্ম, বিশ্বাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি, আচার-আচরণ, নিয়ম, রীতি-রেওয়াজ-এর অনুশীলনের ওপর গুরুত্বারোপ করে নেতৃবৃন্দ বলেন যে, ঢাবিতে স্বকীয় সাংস্কৃতিক চেতনার প্রতি গ্রহিষ্ণু মনোভাব অপরিহার্য। শিক্ষার্থীদের ইসলামী সংস্কৃতি সচেতন করে তোলা প্রয়োজন। এজন্যে প্রয়োজন ঢাবি থেকে ইসলামী সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা। কোন অবস্থায় স্বীয় আদর্শ-ঐতিহ্য, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও সভ্যতার প্রতি বিরুপ মনোভাব অভিপ্রেত নয়। তাই ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে যেন পোশাকসহ আমাদের স্বতন্ত্র জাতীয় বৈশিষ্ট্য ও সংস্কৃতি ধারণ, চর্চা ও অনুশীলনের সুযোগ রেখে ইসলামী সংস্কৃতির হারানো প্রত্যয়কে বিকাশমান রাখা প্রয়োজন। বিশ^বিদ্যালয়ে বোরকাসহ নিজস্ব প্রথা-পদ্ধতি, নিয়ম-নীতি বা রীতি-রেওয়াজের অনুশীলন কাম্য। কেননা এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের রয়েছে স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক চেতনা। রয়েছে একটি সমৃদ্ধ সংস্কৃতি। অন্য যেকোন সংস্কৃতির বিকল্প মডেল। যা অন্য কোন সংস্কৃতিতে লীন হবার নয়। জাতীয় আদর্শ, ঐতিহ্য রীতি-নীতি ও স্বকীয়তা বিরোধী বিধর্মীয় অপসংস্কৃতির পথ রুদ্ধ করতে সবারই স্বচেষ্ট হওয়া উচিৎ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন