ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে তবে বিকেলে পর থেকে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে একাধিক স্থানে যানজটের আশঙ্কা করছেন পরিবহন শ্রমিরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও এলেঙ্গা ও বঙ্গবন্ধু সেুত এলাকায় মাঝে মাঝে যানবাহন চলছে ধীর গতিতে। সেতু এলাকায় টুল দিয়ে যানবাহন পার হতে সেখানে কিছুটা সময় লাগছে। এদিকে মহাসড়কে আরও যানবাহনে চাপ বৃদ্ধি পেলে কোথাও কোথাও যানজটের সৃষ্টি হতে পারে। টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে একাধিক দলে ভাগ হয়ে সার্বক্ষনিক কাজ করছে।
কর্তৃপক্ষ বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের গাজীপুর ভোগড়া থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার সড়ক দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। যা প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এছাড়া যান চলাচল শুরু হয়েছে তিনটি নবনির্মিত আন্ডারপাস দিয়ে। ৬০ শতাংশ সমাপ্ত হয়েছে মহাসড়কের দুইদিকের বর্ধিত অংশের কাজও। সড়ক উন্নতিকরণের পাশাপাশি ঈদে যাত্রীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে।
সূত্র থেকে জানা যায়, উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলা ও ময়মনসিংহের ২৬টি জেলার অন্তত ৯০টি সড়কের যানবাহন চলাচল করে এই ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে।
যান চলাচল নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে সরকার ২০১৩ সালে দুই লেনের এই মহাসড়কটি চার লেনে উন্নিতকরণ প্রকল্প হাতে নেয় এবং প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। কিন্তু প্রকল্পটিতে ১৪টি আন্ডারপাস, ২৯টি নতুন ব্রিজ, দুটি সার্ভিস লেন ও চারটি ফ্লাইওভারের কাজ সংযুক্ত হওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ হয়নি বলে জানায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, এই মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশের করটিয়া আন্ডারপাস ও রাবনা ফ্লাইওভার মেরামতের কাজ অব্যহত রয়েছে। এছাড়া বাঐখোলা ও জামুর্কি বাজার এলাকার প্রায় চারশ মিটার সড়কে রয়েছে ছোট ছোট গর্ত। এর ফলে কিছুটা যানজটের শঙ্কা রয়েছে বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এদিকে ১১টি আন্ডারপাসের মধ্যে মাত্র তিনটি খোলা হয়েছে যান চলাচলেরর জন্য।
করটিয়া, বাঐখোলা ও তারটিয়া আন্ডারপাস নির্মাণের দায়িত্বে থাকা সড়ক নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান মীর আখতার লিমিটেডের প্রধান প্রকৌশলী এহসান আহমেদ রাজু বলেন, আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে আন্ডারপাস তিনটির দুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের যান চলাচলের জন্য এবং অন্যটি ঢাকায় আসা যানবাহনের জন্য খোলা রাখা হয়েছে। যেহেতু আন্ডারপাসগুলো পুরোপুরি নির্মাণ হয়নি, তাই কিছুটা অসুবিধা হতে পারে যান চলাচলে। তবে বড় ধরনের যানজট সৃষ্টি হবে না বলে আশা করেন করেন তিনি।
ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক চারলেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক অমিত কুমার চক্রবর্তী বলেন, বর্তমানে মহাসড়কে যান চলাচলের যে চিত্র দেখা যায়, তাতে ঈদে যানজট সৃষ্টির তেমন কোন শঙ্কা নেই। এছাড়া দুই-একদিনের মধ্যে মহাসড়কের ছোট খাটো সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে বলেও জানা তিনি।
বিবিএ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল প্লাজার সফটওয়্যার সিস্টেম সচল রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দায়িত্বরত প্রকৌশলীরা তাদের দায়িত্ব ২৪ ঘণ্টা পালন করেবেন। তাই ঈদে সেতুর পূর্ব প্রান্তে যানজট সৃষ্টির তেমন কোন আশঙ্কা নেই।
টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আমিমুল এহ্সান বলেন, ধীরগতির যান চলাচলের জন্য সড়ক তৈরিতে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা এবং অধিগ্রহণকৃত জমিতে পিডিবির ইলেকট্রিক পিলার সরানোর কাজে দেরি হওয়ায় সড়ক নির্মাণের কাজের গতি বাড়ানো যাচ্ছে না। তবে মহাসড়কের তিনটি আন্ডারপাস খুলে দেওয়ায় যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা নেই।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, এবারের ঈদে মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে এবং যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য সড়কে নিয়োজিত থাকবে সাত শতাধিক পুলিশ। একইসঙ্গে আনসার সদস্যরাও কাজ করবে মহাসড়ককে যানজটমুক্ত রাখতে। এছাড়া অজ্ঞান পার্টি ও ছিনতাইকারীর হাত থেকে যাত্রীদের রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের ৪০টি ভ্রাম্যমাণ দল ও র্যাব কাজ করবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন