শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

কোরআন শব্দের পরিসংখ্যান ও কিছু কথা

এ. কে. এম ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০১৯, ১২:৩০ এএম

মহান রাব্বুল আলামিন যুগে যুগে, কালে কালে, বিভিন্ন নবী ও রাসূলগণের কাছে একশত খানা সহিফা বা ক্ষুদ্র পুস্তিকা এবং চারখানা বড় কিতাব বা বৃহৎ সংবিধানগ্রন্থ নাজিল করেছেন। তন্মধ্যে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হচ্ছে আল কোরআন, যা পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর নাজিল হয়েছে। কোরআনুল কারিমে কোরআন শব্দটির উপস্থিতি একটি বিস্ময়ের ব্যাপার। লক্ষ করলে দেখা যায়, আল কোরআনে কোরআন শব্দটি ৩৬টি সূরায় সর্বমোট ৬৩ বার এসেছে। আসুন এবার সেদিকে নজর দেয়া যাক।

১. সূরা বাকারাহর ১৮৫ নং আয়াতে কোরআন শব্দটি ১ বার এসেছে। ২. সূরা নিসার ৮২ নং আয়াতে কোরআন শব্দটি এসেছে ১ বার। ৩. সূরা মায়িদাহর ১০১ নং আয়াতে এসেছে ১ বার। ৪. সূরা আনআমের ১৯ নং আয়াতে এসেছে ১ বার। ৫. সূরা আরাফের ২০৪ নং আয়াতে এসেছে ১ বার। ৬. সূরা তাওবাহর ১১১ নং আয়াতে এসছে ১ বার। ৭. সূরা ইউনুসের ১৫, ৩৭ ও ৬১ নং আয়াতে মোট ৩ বার এসেছে। ৮. সূরা ইউসুফের ৩ নং আয়াতে এসেছে ১ বার। ৯. সূরা রাদের ৩১ নং আয়াতে এসেছে ১ বার। ১০. সূরা হিজরের ১, ৮৭ ও ৯১ নং আয়াতে মোট এসেছে ৩ বার।
২.
১১. সূরা নাহলের ৯৮ নং আয়াতে এসেছে ১ বার। ১২ সূরা বনী ইসরাঈলের ৯, ৪১, ৪৫, ৪৬, ৮২, ৮৮, ৮৯ ও ১০৬ নং আয়াতে সর্বমোট ৮ বার এসেছে। ১৩ সূরা কাহফের ৫৪ নং আয়াতে এসেছে ১ বার। ১৪. সূরা তাহার ২, ১১৩ ও ১২৪ নং আয়াতে সর্বমোট এসেছে ৩ বার। ১৫. সূরা ফুরকানের ৩০ ও ৩২ নং আয়াতে এসেছে মোট ২ বার। ১৬. সূরা নামলের ১, ৬, ৭৬ ও ৯২ নং আয়াতে এসেছে মোট ৪ বার। ১৭. সূরা কাসাসের ৮৫ নং আয়াতে ১ বার। ১৮. সূরা রূমের ৫৮ নং আয়াতে ১ বার। ১৯. সূরা ইয়াসীনের ২ ও ৬৯ নং আয়াতে এসেছে মোট ২ বার। ২০. সূরা সাদের ১ নং আয়াতে ১ বার।

২১. সূরা যুমারের ২৭ ও ২৮ নং আয়াতে মোট এসেছে ২ বার। ২২. সূরা হা-মীম সাজদাহর ৩, ২৬ ও ৪৪ নং আয়াতে এসেছে মোট ৩ বার। ২৩. সূরা শুরার ৭ নং আয়াতে ১ বার। ২৪. সূরা আহকাফের ২৯ নং আয়াতে ১ বার। ২৫. সূরা মুহাম্মাদের ২৪ নং আয়াতে ১ বার। ২৬. সূরা কাফের ১ ও ৪৫ নং আয়াতে এসেছে মোট ২ বার। ২৭. সূরা কামারের ১৭, ২২, ৩২ ও ৪০ নং আয়াতে সর্বমোট ৪ বার এসেছে। ২৮. সূরা আর রাহমানের ২ নং আয়াতে ১ বার। ২৯. সূরা ওয়াকিয়ার ৭৭ নং আয়াতে ১ বার। ৩০. সূরা হাশরের ২১ নং আয়াতে ১ বার।
৩১. সূরা জিনের ১ নং আয়াতে ১ বার। ৩২. সূরা মুযযাম্মিলের ৪ ও ২০ নং আয়াতে মোট ২ বার এসেছে। ৩৩. সূরা কিয়ামাহর ১৭ ও ১৮ নং আয়াতে মোট ২ বার এসেছে। ৩৪. সূরা দাহরের ২৩ নং আয়াতে ১ বার। ৩৫. সূরা ইনশিকাকের ২৬ নং আয়াতে ১ বার। ৩৬. সূরা বুরুজের ২১ আয়াতে ১ বার এসেছে। মোটকথা, সর্বমোট ৩৬টি সূরায় কোরআন শব্দটি সর্বমোট ৬৩ বার এসেছে।

আমরা আরো লক্ষ করেছি যে, সূরা ইউসূফের ২ নং আয়াতে এবং সূরা যুখরুফের ৩ নং আয়াতে কোরআন শব্দের বানানে আলিফের স্থলে হামযা রয়েছে। এজন্য তা গণনায় আনা হয়নি। কারণ, আমরাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ‘কোরআন’ শব্দের পরিসংখ্যান ভিত্তিক একটি নতুন দিগন্তের সন্ধান করা। নতুন দিগন্তটি হলো ৬৩ সংখ্যাটি। এ সংখ্যাটি বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.)-এর দুনিয়ার হায়াতের ৬৩ বছরের প্রতিই ইঙ্গিত প্রদান করে।

আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, আমি কোরআনকে উপদেশ গ্রহণ করার জন্য সহজ করে দিয়েছি। তা হতে উপদেশ গ্রহণ করার কেউ আছে কি? বস্তুত বিশ্বজগতের ¯্রষ্টার ভালোবাসার সৃষ্টি মানুষ যাতে পৃথিবীতে তার প্রতিনিধিত্বসুলভ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারে, তাদের চলার পথ যাতে সত্যের আলোকে উদ্ভাসিত হয়, সেজন্য দয়াময় পরম দয়ালু বিশ্বজগতের প্রতিপালক তার সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ বার্তাবাহক বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.)-এর মাধ্যমে দিশারী আল কোরআন নাজিল করেছেন। ওহিয়ে মাতলু হিসেবে স্বীকৃত ও পঠিত আল কোরআনের জীবন্ত রূপ ছিলেন মহানবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.)। আল কোরআনে বিধৃত কোরআন শব্দের পরিসংখ্যান এ কথার সাক্ষ্যই চিরকাল প্রদান করবে। সুবহানাল্লাহ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Abu Syed Arifuzzaman Atik ২৩ জুন, ২০১৯, ২:১০ এএম says : 0
তুমি যখন তাদের সামনে (তাদের ফরমায়েশ মতো) আয়াত বা মুজিজা এনে হাজির করো না, তখন তারা বলে বেড়ায়, 'তুমি নিজেই একটি নিদর্শন বাছিয়া নাও না কেন?' বলে দাও, 'আমার প্রতিপালক ওহির মাধ্যমে আমাকে যা আদেশ করেন আমি কেবল তা-ই অনুসরণ করি। আর এই কোরআন তোমাদের প্রতিপালকের নিদর্শন। আর যারা ইমান আনে, তাদের জন্য এটা হেদায়েত ও রহমত।' (সুরা আরাফ, আয়াত: ২০৩)
Total Reply(0)
পলাশ ২৩ জুন, ২০১৯, ২:১০ এএম says : 0
আল কোরআন বিশ্বের বিস্ময়কর গ্রন্থ। এটি সর্বাধিক প্রশংসিত মহা প্রজ্ঞাময় রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে শ্রেষ্ঠ নবী বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর অবতারিত হয়েছে।
Total Reply(0)
শহিদুল খান জেএসজি ২৩ জুন, ২০১৯, ২:১০ এএম says : 0
আসমানি গ্রন্থগুলোর মধ্যে অমর, অবিনশ্বর ও চিরন্তন অলৌকিকতায় পূর্ণ একমাত্র আল কোরআনই সর্বকালে মানুষকে কল্যাণের অফুরন্ত ধারায় সিক্ত করেছে; সত্যান্বেষীদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
Total Reply(0)
Monir mamun ২৩ জুন, ২০১৯, ২:১১ এএম says : 0
চিন্তাশীলদের মধ্যে ব্যাপক চিন্তার উদ্রেক ঘটিয়েছে। বিশ্বজনীন এ গ্রন্থের আবেদন ও উপযোগিতা সব যুগে এবং সব স্থানেই কার্যকর রয়েছে। কোরআনের শিক্ষায় উজ্জীবিত হয়েই মুসলমানরা পৃথিবীকে একটি উন্নত সভ্যতা উপহার দিয়েছে। এ সভ্যতা শত শত বছর ধরে বিশ্বে উন্নত সংস্কৃতি ও উন্নত নৈতিক গুণাবলির আদর্শ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
Total Reply(0)
মাহমুদুল হাসান রাশদী ২৩ জুন, ২০১৯, ২:১১ এএম says : 0
কোরআনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এ গ্রন্থটি দুবার নাজিল হয়েছে। প্রথমে একবার পুরো কোরআন প্রথম আসমানে 'বাইতুল ইজ্জতে' নাজিল হয়েছে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ২৩ বছর ধরে ধীরে ধীরে বিভিন্ন ঘটনা উপলক্ষে, যুগ-জিজ্ঞাসার জবাবে নাজিল হয়েছে। তাই এ ঐশী গ্রন্থে মিথ্যা বা ভুলের কোনো অবকাশ নেই।
Total Reply(0)
জান্নাতুল নাঈম মনি ২৩ জুন, ২০১৯, ২:১১ এএম says : 0
তাওরাত ও ইঞ্জিলের মতো গ্রন্থগুলো ঐশী গ্রন্থ হলেও সেগুলো কেবল বিশেষ যুগের বিশেষ সম্প্রদায়ের সামাজিক ও চিন্তাগত অবস্থার প্রেক্ষাপটে নাজিল হয়েছে এবং সেগুলো কেবল নির্দিষ্ট যুগের জন্য প্রযোজ্য ছিল। কিন্তু পবিত্র কোরআনের উপযোগিতা কালোত্তীর্ণ এবং তা বিশেষ কোনো জাতি ও যুগের জন্য নির্দিষ্ট নয়। কোরআনের বাণী সব যুগেই মানুষের জন্য সজীব, নতুন ও প্রাণবন্ত হয়ে বিরাজ করছে। কোরআনের বক্তব্য নতুন, দৃঢ়ভিত্তিপূর্ণ, ব্যাপক ফলদায়ক ও নজিরবিহীন।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন