বর্ষার শুরুতেই পদ্মা-যমুনা, হুরাসাগর, বড়াল নদীসহ শাখা নদীতে বাড়ছে পানি। শোনা যাচ্ছে বন্যার পদধ্বনি আর সেই সাথে নদী ভাঙন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।
একে তো নদীর পানি বৃদ্ধি তার উপর মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে ভারতের ফারাক্কা ব্যারেজ দিয়ে পানি আসছে। যমুনা নদীর রঘুনাথপুর, কাজীর হাট এবং সুজানগরে নদী ভাঙন এখন চলমান প্রক্রিয়া। গত কয়েক দশকে নদী পাড়ের অগণিত মানুষ তাদের জমি হারিয়েছেন। এক সময়ের ধনী এখন নিঃস্ব।
এর সাথে নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন করায় বেড়েছে ভাঙনের মাত্রা। যমুনা নদীর পাবনা ও শাহজাদপুর এলাকার ভাঙন সারা বছরই হয় তবে বর্ষায় এর তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। পাবনার এক সময়ের প্রবেশদ্বার নগরবাড়ী ঘাট এলাকা থেকে শুরু করে কাজী হাট পর্যন্ত বিস্তৃত নদী ভাঙন সব সময় থাকে। নদী ভাঙনে পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়ন মানচিত্রে থাকলেও বাস্তবে নেই। এই ভাবে নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে বহু এলাকা।
অপরদিকে পাবনার সুজানগরেও ফারাক্কার ধাক্কা আর অবৈধ বালু উত্তোলনে নদী ভাঙন তীব্র রূপ নিয়েছে। পদ্মার ভাঙনে বসতভিটাসহ সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে নদীপাড়ের মানুষ বিলীন হচ্ছে শত শত বিঘা আবাদী জমি। স্থানীয়রা নদী ভাঙনের জন্য দায়ী করেছেন অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে। তাদের অভিযোগ সরকারিভাবে বালু উত্তোলন নিষেধ থাকলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের চেয়েও শক্তিধর হওয়ায় তাদের রোধ করা যাচ্ছে না।
বালু উত্তোলনের অবৈধ কারবারে সব দলের লোকজন একট্টা। সূত্রমতে, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ইতোমধ্যেই পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ফকিরপুর, নরসিংহপুর, মানিকহাট ইউনিয়নের বিলমাদিয়া, তিলমাদিয়া, মামুদিয়া, নাজিরগঞ্জ ইউনিয়নের চর বরখাপুর, বিজলীচর, রাণীনগর, বালিয়াডাঙ্গি ও সাদারচর অনেক এলাকা। জানা যায়, উপজেলার কোথাও বালুর ইজারা নেই। কিন্তু আইনের তোয়াক্কা না করেই অবৈধভাবে বালু ব্যবসায়ীরা বালু উত্তোলন করছে যাচ্ছে। সারা বছর জুড়েই চলে তাদের এ কারবার।
অপরদিকে দেখা দিয়েছে বন্যার আশঙ্কা। পাবনার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে এই সময়কালে পদ্মার পানি দ্রুত বাড়ছে। ফারাক্কা ব্যারেজ পয়েন্টে গঙ্গার পানি পদ্মায় ঢুকে পড়েছে। সাধারণত বর্ষা মওসুমে ফারাক্কা ব্যারেজের সবগুলো গেট খুলে দেয়া হয় এতে উত্তরের জেলায় দেখা দেয় বন্যা। আর শুষ্ক মওসুমে পদ্মাসহ প্রধান শাখা নদী গড়াই, আত্রাই এবং অন্যান্য শাখা ও উপশাখা নদী মিলিয়ে প্রায় ৫৪টি নদ-নদীর পানি শুকিয়ে গেলেও চুক্তির ফেনা তুলে পানি ছাড়া হয় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী দেব গৌড়ার সাথে ৩০ সালা পানিচুক্তি করেন। ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারী থেকে এই চুক্তির কার্যকারিতা শুরু হলেও কোনবারই চুক্তি মাফিক পানি পায়নি বাংলাদেশ। যদিও গতবছর এর ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন