শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম আশ্বাস দিয়েছেন আগামী মাসের মধ্যে জাকসুর জন্য নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। আর নভেম্বরের মধ্যে জাকসু নির্বাচন সম্পন্ন করবেন। শুক্রবার বিকালে সিনেট অধিবেশন শুরুর আগে এই ঘোষণা দেন ভিসি।
এই ঘোষণার পর আজ শনিবার এক সংবাদ সম্মেলন করে জাকসু আন্দোলনকারী ৫টি ছাত্র সংগঠন। তারা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক রাজনৈতিক
কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনগুলোর নেতারা বলেন, ‘সকল বৈধ সংগঠনকে ক্যাম্পাসে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে এবং সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার বলেন, ‘আমরা দেখেছি ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। হলে থাকতে দেয়া হচ্ছে না, এমনকি তাদের কেউ পরীক্ষা দিতে আসলেও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। তাদের ক্যাম্পাসে ঢোকার ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার সুযোগ দিতে হবে।’
এছাড়াও লিখিত বক্তব্যে সংগঠনগুলোর পক্ষে সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম পাপ্পু বলেন, ‘আমরা মনে করি সকল ছাত্র সংগঠনের অবাধ
রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার পরিবেশ সৃষ্টি ব্যাতীত নির্বাচন কমিশন গঠন ফলপ্রসু হবে না। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটির সহায়তায় সকল ছাত্র সংগঠন, প্রক্টরিয়াল বডি ও প্রশাসনকে সাথে নিয়ে জাকসু’র পরিবেশ সৃষ্টিতে আলোচনা শুরু করতে হবে। অতিদ্রুত সকলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে
গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে গঠনতন্ত্র সংশোধন, ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা নির্ধারণ করে ভোটার তালিকা প্রণয়ন করতে হবে।’
ছাত্র ইউনিয়ই জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম অনিক বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত কোন প্রহসনের নির্বাচন জাবিতে হতে দেয়া হবেনা।’
সংবাদ সম্মেলন আহ্বানকারী ছাত্র সংগঠনগুলো হলো, সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ও (সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট মার্কসবাদী)।
এদিকে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মো সোহেল রানা ও সধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম সৈকত বলেন, আমরা সংগঠনগুলোর দাবিকে স্বাগত জানাই। প্রশাসন আমাদেরকে
নিরাপত্ত্বা দিলে আমরা অবশ্যই ছাত্রদের মাঝে কাজ করতে চাই। সাধারণ ছাত্রদের মাঝে ছাত্রদলের জনপ্রিয়তা রয়েছে। এই জনপ্রিয়তার ভয়েই ছাত্রলীগ বার বার আমাদেরকে কাজ করতে বাঁধা দিয়েছে।
এই সময় তারা আরো বলেন, ‘গত ২৭ জুন ছাত্রদলকে বাদ দিয়ে প্রশাসন জাকসু আলোচনা করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি
প্রশাসনকে বলে দিতে চাই- ছাত্রদলকে বাদ দিয়ে জাকসুর কোন কার্যক্রম সফল হবেনা। আমাদেরকে কাজ করার সুযোগ দিন। আমরা জাকসু নির্বাচন সুষ্ঠভাবে
সম্পন্ন করতে প্রশাসনকে সব ধরনের সহযোগীতা করতে চাই।’
এই বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘তারাতো ক্যাম্পাসে আসেইনা। ছাত্রদল যদি ক্যাম্পাসে এসে সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে তাহলে আমাদের পক্ষ থেকে কোন বাঁধা দেওয়ার প্রশ্নই আসেনা। অতিতেও আমরা তাদেরকে কোন বাঁধা দেইনাই। আমরাও চাই
ক্যাম্পাসে সকল বৈধ সংগঠনের সহ অবস্থান নিশ্চিত হোক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন