শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

পাখির জন্য দেড় মাস উপার্জন বন্ধ!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০১৯, ৪:০০ পিএম

পাখিদের ভালবেসে অনেক কিছুই করেন অনেকে। তবে এমন নজির বোধহয় আর নেই গোটা পৃথিবীতে। টানা ৪৫ দিন পাখির ডিম ফোটানোর সুযোগ দিয়ে নিজের আয় রোজগার বন্ধ রেখেছিলেন এক ট্রাকচালক। ঘটনাটি ঘটেছে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার নিকটবর্তী আসাগি কাভুদরে নামক শহরে।

জানা যায়, ঈদের ছুটির সময় নিজের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ট্রাকটি বাড়ির আঙিনায় দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন বাহাতিন গুরসি নামের এই চালক। ছুটির এই সময়টাতে ট্রাকটিকে ধরেও দেখেননি তিনি! যেমন রেখেছিলেন তেমনই ছিল। আর এই সময়েই ট্রাকের মধ্যে বাসা বাঁধে এক জোড়া পাখি। সেখানে কয়েকটি ডিমও পাড়ে তারা। এমন ঘটনা ঘটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এরপরে যা ঘটেছে তা সারা বিশ্বেই বেশ আলোড়ন তুলেছে। যখনই ট্রাকটি আবার পথে নামানোর জন্য সাফ সুতরো করতে যাবেন তখনই তার চোখে পড়ে ডিমসহ পাখির বাসাটি। তখনো পাখিটিকে চোখে পড়েনি তার৷

ইঞ্জিন কেবিনের পেছনে বাসাটি বানানোয় ট্রাক চালু করলে পাখির বাসাটি ভেঙে যাবে। আর ডিমগুলোও হবে নষ্ট। ডিম আর বাসার শোকে নিশ্চয়ই মা পাখিটি অস্থির হয়ে উঠবে। এমন ভাবনাই পেয়ে বসেছিল গুরসির চিন্তার জগতে। তিনি কী করবেন বুঝতে পারছিলেন না।

একদিকে মানবিক হৃদয়ে পাখিটির প্রতি ভালবাসা জেগে উঠছিল অন্যদিকে নিজের আয় রোজগারের বিষয়টি। বেশ ধন্ধে পড়ে গিয়েছিলেন ৪২ বছর বয়সী তুরস্কের এই নাগরিক। অবশেষে তিনি তার এক আত্মীয়ের কাছ থেকে পরামর্শ নেন। সেই আত্মীয় তাকে বলেন, ডিম না ফোটা অবধি ট্রাক স্টার্ট না দিতে।

একমাত্র আয়ের উৎস এই ট্রাকটি বন্ধ রাখলে বন্ধ থাকবে উপার্জন। তবুও দমে যাননি বাহাতিন। একে একে টানা ৪৫ দিন অপেক্ষা করলেন। ৪৫ দিন পর গত সোমবার পাখিটির বাসায় তিনটি ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়েছে। এই সময়টাতে শিশুরা যেন ডিমগুলো নষ্ট না করতে পারে সে খেয়ালও রেখেছেন বাহাতিন।

ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ায় বাহাতিন পরিবার এবং তার প্রতিবেশিদের মধ্যে বেশ আনন্দই হচ্ছে৷ এই দিনটির অপেক্ষাতেই তারা ছিলেন দীর্ঘ দেড় মাস।

এই ঘটনাটি স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়। আর এতেই সারাদেশে প্রশংসায় ভাসছেন বাহাতিন নামের এই ট্রাক চালক। মানবতার এমন বিরল উদাহরণ মানুষের মুখে মুখে ফিরছে। বাহাতিনও এমন কাজ করতে পেরে বেশ আনন্দিতই। তিনি জানান, ‘এখন আমার আনন্দ হচ্ছে৷ তিনটি নতুন প্রাণ যোগ হলো পৃথিবীতে। এটা সত্যিই খুব আনন্দের।’

বাহাতিনের পরিবার অবশ্য এই ঘটনায় একটু বেশিই খুশি। তার ছোট মেয়ে আয়সিমার খুশি যেন ধরে না। সে জানায়, ‘পাখিগুলোকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এত দীর্ঘ সময় বাবাকে কাছে পাই না। এই পাখিগুলো সে সুযোগটা করে দিয়েছে। বাবাকে আমি অনেক ভালোবাসি।’ সূত্র: ডেইলি সাবাহ।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন