শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

অতিরিক্ত টোল আদায়

মঠবাড়িয়ার বড়মাছুয়া-রায়েন্দা খেয়াঘাট

আবদুল হালিম দুলাল, মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

মঠবাড়িয়ার বড়মাছুয়া ও শরণখোলার মধ্যে যোগযোগের একমাত্র মাধ্যম বলেশ্বর নদীর বড়মাছুয়া-রায়েন্দা আন্তঃবিভাগীয় খেয়াঘাটে যাত্রী সাধারণকে জিম্মি করে নির্ধারিত টোলের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত টাকা দিতে ব্যর্থ হলে সাব-লিজ গ্রহণকারী ও তাদের লোকজন যাত্রীদের ভয়ভীতি, নদীতে ফেলে দেয়ার হুমকি ও অশালীন ব্যবহার করা হয়। এমনকি যাত্রীদের হাতে থাকা ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজনের পণ্য বা মালামাল পারাপারের জন্য ৫০/৭০ টাকা অতিরিক্ত আদায় করছে।
জানা যায়, খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় হতে বাংলা ১৪২৬ সালের জন্য বড়মাছুয়া আন্তঃবিভাগীয় খেয়া ঘাটটি ২৪ লাখ ৫৫ হাজার ৯শ’ ৪৮ টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে উপজেলার বড়মাছুয়া ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাইয়ুম হাওলাদার ইজারা পায়। ইজারাদার কাইয়ুম আইনের প্রতি বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে স্থানীয় একটি চক্রের কাছে অবৈধভাবে ঘাটটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় সাব-লিজ দেন। খেয়াঘাট সাব-লিজ গ্রহীতারা হলেন স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত ফায়ারম্যান সামসুল হক মৃধা, শরণখোলার তৌহিদুল ইসলাম (ডিলার), আবদুল কাদের ও বড়মাছুয়ার মৎস্য আড়ৎদার ফারুক তালুকদার।
ঘাটে যাত্রী সাধারণ, বিভিন্ন যানবাহন ও মালামাল পারাপারের সরকার অনুমোদিত টোল রেট চার্ট সর্বসাধারণের জ্ঞাতার্থে দর্শনীয় জায়গায় টানানোর বিধান থাকলেও দু’পারের কোথাও রেট চার্ট টানানো হয়নি। এছাড়াও যাত্রী পারাপারের জন্য ইজারাদারের নিজস্ব ঘাট থাকার বিধান থাকলেও যাত্রীদের চলাচলের ঘাট না থাকায় বিআইডবিøটিএর সরকারি টার্মিনাল ব্যবহার করতে বাধ্য করছে যাত্রীদের। আর এ কারণে যাত্রীদের অতিরিক্ত ৫ টাকা টার্মিনালের জন্য গুনতে হচ্ছে।
স¤প্রতি বড়মাছুয়া খেয়াঘাটে সরেজমিনে যাত্রীরা বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করেন। খেয়ার জন্য অপেক্ষামান উদয়তারা বুড়িরচর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. মোজাম্মেল হক (৭০) বলেন, তিনি প্রায়ই এই খেয়া পার হয়ে শরণখোলা আত্মীয়ের বাড়িতে আসা যাওয়া করেন। তাকে টার্মিনাল ভাড়া ৫ টাকা ও খেয়া ভাড়া ৫০ করে মোট ৫৫ টাকা দিতে হয়। এর কম দিতে চাইলে ওরা অশালীন ব্যবহার করে।
খেজুরবাড়িয়া গ্রামের ইসমাইল তালুকদারের পুত্র আল আমিন তালুকদার (২৮) জানান, যাত্রীদের প্রতি ২০ কেজি মালে ৮০/১০০ টাকা এবং প্রতি মটরসাইকেল পারাপারের জন্য ১’শ থেকে ১২০ টাকা এবং একটি ছাগল পারাপারের জন্য ১৫০/২০০ ও একটি গরুর জন্য ৩০০/৪০০ টাকা গুনতে হয়।
এ ব্যাপারে সাব-লিজ গ্রহণকারী ফায়ারম্যান শামসুল হক সাব-লিজ নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, তিনি ইজারাদারের সাথে শেয়ার আছেন। ঘাটের মূল ইজারাদার কাইয়ুম হাওলাদার তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিগগিরই দুই পাড়ে যাত্রী ও পণ্য পারাপারের রেট চার্ট টানানো হবে।
মঠবাড়িয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের সাথে যোগযোগ করলে তিনি বড় মাছুয়া খেয়াঘাটে ইজারাদারদের সরকার নির্ধারিত টোলের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। খুব দ্রæত সময়ের মধ্যে সরকার নির্ধারিত টোল রেট চার্ট টানানো হবে। যাতে পারাপারকারী যাত্রীদের অতিরিক্ত টোল দিতে না হয়। খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ঢাকায় ট্রেনিংয়ে থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা না গেলেও দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ও আন্তঃবিভাগীয় ফেরি ইজারা কমিটির আহŸায়ক সুবাস চন্দ্র সাহা জানান, সরকার অনুমোদিত টোল রেট চার্ট না টানিয়ে অতিরিক্ত টোল আদায় দÐনীয় অপরাধ। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন