রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে শুরু হয়েছে সৌরবিদ্যুৎ চালিত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের সবচেয়ে বড় কার্যক্রম। গত বুধবার এই প্রকল্প উদ্ভোদন করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলাল উদ্দিন। জানাগেছে, পৃথিবীর যেকোন মানবিক সংকটে স্থাপিত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ কার্যক্রমের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড়।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সী (জাইকা) সহায়তায় এই পানি সরবরাহ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এই পানি সরবরাহ কার্যক্রমের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হবে।
বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে উখিয়ার ১২নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান সরকারের অর্থায়নে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় আইওএম ও জাইকা এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলাল উদ্দিন আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো: আবুল কালাম, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপান দূতাবাসের মিনিষ্টার তাকেসী-ইতো, জাইকার বাংলাদেশের প্রধান প্রতিনিধি হিতোশী হিরাতা, আইওএম’র বাংলাদেশ মিশন প্রধান জর্জ গিগৌরী।
প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলাল উদ্দিন এই প্রকল্পের উদ্বোধনের পর অতিথিদের প্রকল্পের বিভিন্ন অংশের বর্ণনা দেন আইওএম-এর সংশ্লিষ্টরা। তিনি জানান, এই সৌরবিদ্যুৎ চালিত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের মাধ্যমে দৈনিক ৫লাখ ৮০ হাজার লিটার বিশুদ্ধ পানি উত্তোলন করা হবে।
প্রধান অতিথি হেলাল উদ্দিন বলেন, এই প্রকল্প দুটি সংস্থার সম্মিলিত কাজের সুফল। এর মাধ্যমে ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাদের বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মিটবে।
জাপান দূতাবাসের মিনিষ্টার তাকেসী-ইতো বলেন, বাংলাদেশ সাত লাখেরও বেশি শরণার্থীদের গ্রহণ করেছে এবং আমরা এখন লাখ লাখ লোকের পানির চাহিদা মিটাব। এর মাধ্যমে আমরা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ছয় নম্বর শর্ত ‘সবার জন্য বিশুদ্ধ পানি এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ’ এট নিশ্চিত হবে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো: আবুল কালাম বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের এই নেটওয়ার্ক সবচেয়ে বড় এবং খুবই সাশ্রয়ী। যৌথ প্রচেষ্টার একটা বড় সাফল্য এটি।
বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের এই নেটওয়ার্ক-এর মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১২ এবং ১৯ নম্বর ক্যাম্পের ৮৭ পানি সরবরাহ পয়েন্টে ৩৫৮টি পানির ট্যাপের ২৪-ঘন্টাব্যাপী পানি সরবরাহ করা হবে। পাশাপাশি এই পানির নেটওয়ার্কের বিশুদ্ধতা রক্ষার জন্য রয়েছে একটি পরিশোধক প্লান্ট।
আইওএম বাংলাদেশ মিশনের প্রধান জর্জ গিগৌরী বলেন, এই পানি সরবরাহ নেটওয়ার্কটির সাথে পরিচিতি করানোর জন্য আমরা রোহিঙ্গা ভলান্টিয়ারদের মাধ্যমে শরণার্থীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করার জন্যো কাজ করছে আইওএম। পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে এখানকার অধিবাসীরা এই প্রযুক্তির সাথে নিজের খাপ খাওয়াতে পারে সেজন্যো কাজ করবে আইওএম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন