মুন্সীগঞ্জ শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়ল বিলের আধিপত্য নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে যুবলীগের দুই গ্রুপ। এক গ্রæপের নেতৃত্বে রয়েছে বাড়ৈখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি কাউসার আহম্মেদ রণি ও অপর গ্রুপের নেতৃত্বে যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিলন। তবে যুবলীগের বাইরে স্থানীয় ভাবে মিলন গ্রæপের পেছনে উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি ইকবাল মাষ্টার ও রণি গ্রুপের পেছনে বাড়ৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম তালুকদারে মদদ থাকার অভিযোগ রয়েছে। দুই গ্রæপের মুখমুখি অবস্থানের কারণে ইতিমধ্যে ওই এলাকায় একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের পর থেকে বাড়ৈখালী এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আড়িয়ল বিলের জমির মাটি কেনা বেচার ব্যাবসার নিয়ন্ত্রন, ট্রলার মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা গ্রহন, মাছের ডাঙ্গার মালিক ও জেলেদের কাছ থেকে বার্ষিক হারে চাঁদা সহ বিভিন্ন কাজের অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। তবে দুই গ্রæপই একে অপরের দিকে আঙ্গুল তুলে নিজেদেরকে নির্দোষ দাবী করছে।
বাড়ৈখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি কাউসার আহেম্মেদ রণি অভিযোগ করেণ, মিলন বাড়ৈখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি ইকবাল মাষ্টারের ছত্রছায়ায় থেকে থানা পুলিশের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে। শ্রীনগর উপজেলা থেকে বদলি হয়ে যাওয়া এক পুলিশ অফিসারের ভাগনে নামে পুরো উপজেলার মানুষ তাকে ভাগনে মিলন নামে চিনে। এর সুবিধা নিয়ে সে পুরো বাড়ৈখালী ইউনিয়ন সহ আশপাশের এলাকায় পুলিশের সোর্স হিসাবে কাজ করার পেছনে যত রকমের অপকর্ম আছে তার সবকিছুই করে থাকে। আড়িয়ল বিলের ক্যাডার তাজেল-সোহরাব বাহিনীর সাথে যুক্ত হয়ে সে মাটি বিক্রি,জমি দখল,চাঁদাবাজি, ইয়াবা ব্যবসা, ডাকাতি সহ সকল অপকর্ম করে আসছিল। গত বছর র্যাবের ক্রসফায়ারে তাজেল ও সোহরাব নিহত হলে ওই বাহিনীর নেতৃত্ব নেয় মিলন। কিন্তু পুলিশকে ব্যবহার করে নিজে আড়ালে থেকে হয়রানি করে নিরিহ মানুষদের। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ সহ দলের নেতাকর্মীরা তার হাত থেকে কেউ রেহাই পায়নি। শুনেছি শুক্রবার সন্ধ্যায় হয়রাণির শিকার লোকজন একত্রিত হয়ে মিলনকে ধাওয়া করলে সে পালিয়ে যায়।
অপরদিকে ওই ইউনিয়নের যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিলন তার বিরুদ্ধে আনা রণির সব অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো এসকল কাজের সাথে রণিই জড়িত বলে জানান। মিলন আরো জানান রনি তার বাহিনী নিয়ে শুকনো মৌসুমে জোড় পূর্বক অন্যের জমির মাটি কেটে অন্যত্র স্তুপ করে রেখে বর্ষা মৌসুমে ট্রলার দিয়ে আশ পাশের বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রি করে থাকে। এর বাইরে আড়িয়ল বিলে অন্য ট্রলার মাটি কাটতে আসলে তারা প্রতি ট্রলারে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করে থাকে। রণির বিরুদ্ধে শ্রীনগর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। আমি তার কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় তার বাহিনী শুক্রবার সন্ধ্যায় আমার উপর হামলা চালায়। আমি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীণ রয়েছি।
বাড়ৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম তালুকদার কোন গ্রæপকে মদদ দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, প্রশাসনের নাম দিয়ে কে কি করে বেড়াচ্ছে তা এলাকায় খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন। তবে প্রশাসন এখনই ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে।
এ ব্যাপারে শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ ইউনুচ আলী বলেন, পুলিশ কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দিবেনা। শুক্রবারের ঘটনায় ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন