জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে চীনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে শুক্রবার রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। এ দিন নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের কার্যালয়ে স্থানীয় সময় সকাল ১০টা অর্থাৎ বাংলাদেশী সময়ে সন্ধ্যা আটটায় ওই বৈঠক হবে বলে জানা গিয়েছে।
কাশ্মীর নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠকের বিষয়টিকে তাদের কূটনৈতিক জয় হিসেবেই দাবি করেছে পাকিস্তান। পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেন, ‘চার দশক পর নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মীর প্রসঙ্গ নিয়ে যে বৈঠক হতে চলেছে তা নজিরবিহীন।’ কুরেশির মন্তব্যকে উদ্ধৃত করে পাক সরকারি সংবাদমাধ্যম পিটিভি জানিয়েছে, এটা দু’দেশের জমি সংক্রান্ত বিষয় নয়, এটা মানবিকতার বিষয়। বিশ্বকে এটা বুঝতে হবে।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ এবং তাকে দু’ভাগ করার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে চীঠি দিয়েছিল পাকিস্তান। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদে যায় চীনও। আগস্ট মাসের জন্য পরিষদের সভাপতিত্বকারী দেশ পোল্যান্ডকে চীন চিঠি দিয়ে জানায়, এই বিষয়ে তারা গোপন বৈঠক চায়। জাতিসংঘের কূটনীতিবিদ প্রথমে জানিয়েছিলেন, এখনই ওই বৈঠকের দিন ক্ষণ বলা সম্ভব নয়। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ও অস্থায়ী অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অবশেষে শুক্রবার ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয় নিরাপত্তা পরিষদ। নিরাপত্তা পরিষদের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বুধবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে সিরিয়া ও মধ্য আফ্রিকার বিষয় নিয়ে আলোচনা চলাকালীন পাকিস্তানের চিঠির প্রসঙ্গটা তোলে চীন।
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০অনুচ্ছেদ বিলোপ নিয়ে প্রথম থেকেই তীব্র আপত্তি জানিয়ে আসছে পাকিস্তান। এটা ভারতের একতরফা সিদ্ধান্ত, এই অভিযোগ তুলে নিরাপত্তা পরিষদের দ্বারস্থ হয় তারা। পাক পররাষ্টমন্ত্রী শাহ মহম্মদ কুরেশি নিরাপত্তা পরিষদে চিঠি দেন। চিঠিতে রীতিমতো হুমকির সুরে বলা হয়, ‘আমরা কোনও দ্বন্দ্ব চাই না। কিন্তু ভারত যেন আমাদের সংযমকে দুর্বলতা না ভাবে।’
অন্য দিকে, আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন আদায়ের জন্য জোরদার চেষ্টাও চালান পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের চার সদস্যকে পাশে না পেলেও, চীন কিন্তু এ ব্যাপারে পাকিস্তানের পাশেই দাঁড়িয়েছে। কয়েক দিন আগেই চীনের সমর্থন পেতে সে দেশে যান পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পরে তিনি দাবি করেন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই পাকিস্তানের পক্ষে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। অন্য দিকে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক পক্ষে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কাশ্মীর ইস্যু ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন