শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য

পেয়ারা ঔষধি ফল

| প্রকাশের সময় : ২৩ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

বাংলা নাম: পেয়ারা। ইংরেজি নাম: এঁধাধ. বৈজ্ঞানিক নাম: ঢ়ংরফরঁস মঁধলধাধ. পেয়ারা বাংলাদেশের সর্বত্র উৎপাদন হয়। পেয়ারায় প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। পেয়ারাই আধা পাকা কিংবা পুরো পাকা খাবার পক্ষে বিশেষ উপযোগী। পেয়ারার ব্যবহার সাধারণত কেটে কিংবা কামড়ে হলেও পেয়ারা জ্যাম বা জেলি হিসেবেও খুব জনপ্রিয় সুস্বাদু খাবার ।
বৎসরের ঋতুকালীন কোনও বিশেষ সময়ে গৃহীত কয়েকটি পেয়ারা সারা বছর চিকিৎসক থেকে আপনাকে দূরে রাখতে পারে। সুতরাং পেয়ারার খাদ্যগুণ এবং নানা রোগ-নিরাময়কারীগুণের বিষয়ে সামান্য আলোকপাত করা যেতে পারে।) পেয়ারার মধ্যে রয়েছে অধিক মাত্রায় সঙ্কোচিত করণমূলক ঔষধিগুণ। সে কারণে পেয়ারা অথবা পেয়ারার পাতা চিবিয়ে রস খেলে আমাশয় রোগে বিশেষ ফলদায়ক। এই ঔষধিগুণ এলকালীন-জাতীয় এবং জীবাণুনাশক হওয়ার ফলে পেয়ারার রস গ্রহণে পাকস্থলি থেকে মিউকাস বা আমকে নিয়ন্ত্রিত করতে পারে সহজে আবার পেয়ারায় ভিটামিন ‘সি’ পটাশিয়াম থাকায় পাচন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ইনফেকশন অর্থাৎ সংক্রমণ রোধ করে। এইসব গুণগত কারণে বদহজম এবং গ্যাসট্রোএন্টাইটিস এর চিকিৎসায়ও অত্যন্ত সুফলদায়ক।
ডায়েটরি ফাইবারে ভরপুর পেয়ারা। পেয়ারার ভেতরে থাকা ছোট ছোট বিচি গিলে কিংবা চিবিয়ে খেলে ‘ল্যাক্সেটিভ’ হিসেবে কাজ করে। এর ফলে অন্ত্রে মল সৃষ্টি করা, পানি ধরে রাখা এবং পেট পরিস্কার থাকে। একটি কথা প্রচলিত আছে যে কোষ্ঠকাঠিন্য বাহাত্তর ধরনের রোগ সৃষ্টি করতে পারে। কথাটা সত্যি এই কারণে যে শরীরের সব অঙ্গ সচল এবং সজীব রাখার প্রক্রিয়ায় খাদ্য হজম এবং মল নির্গম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । পেয়ারা এই দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সহায়তা করে। যে কোনও বিউটি ক্রীম এর চেয়ে ভাল ফল দিতে পারে পেয়ারা।
সঙ্কোচিতকরণ ওষুধিগুণ থাকায় চামড়ার উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি ও নিরোগ রাখতে বিশেষ করে কাঁচা পেয়ারা এবং পাতা চামড়াকে সঙ্কুচিত করে রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কাঁচা-পেয়ারা এবং পাতার রস বেঁটে মাখিয়ে কতক্ষণ রাখলে চামড়ার সমৃণতাও বৃদ্ধি পায়। আবার পেয়ারায় ভিটামিন ‘এ’ ‘বি’ এবং ‘সি’ আর পটাশিয়াম থাকায় চামড়ায় কোনরূপ দাগ থাকলে তারও প্রতিকার করতে পারে। কলোস্টরালের মাত্রা কমাতে পেয়ারার রস খুবই উপযোগী। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত রেখে উচ্চ-রক্তচাপজনিত রোগ নিরাময়েও পেয়ারার রস ব্যবহার করা যেতে পারে। দেখা গেছে যেসব খাদ্যে ফাইবার কম থাকে (যেমন ময়দা), সেগুলো রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় কারণ এরকম খাদ্য শরীরে শর্করা দ্রুত বৃদ্ধি করে। যেহেতু পেয়ারায় খুব বেশি পরিমাণে ফাইবার থাকে, সেহেতু রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। যারা শরীরে ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য পেয়ারা অবশ্যই এক জরুরি খাদ্যবস্তু। খাদ্য রসিকরা যারা রসনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন না, তারাও অন্যান্য খাদ্যের সঙ্গে পেয়ারাকে প্রাধান্য দিলে অবশ্যই ওজন সীমিত রাখতে কিংবা কম করতে পারবেন কারণ পেয়ারায় কলোস্ট্ররল নেই, রয়েছে খুবই কম কার্বোহাইড্রেটস। দুপুরবেলা মুখ্য আহারের পর মধ্যম আকারের একটি পেয়ারা খান-দেখবেন রাত পর্যন্ত নিজেকে ক্ষুধার্ত মনে হবে না আবার ওজনও কমাতে সাহায্য করবে। আশ্চর্যজনকভাবে রোগাপাতলা লোকের ওজন বাড়িয়ে সঠিক জায়গায়ও নিয়ে যেতে পারে পেয়ারা। পেয়ারার উপকারিতা কেবল উপরোক্ত রোগেই সীমাবদ্ধ নয়-ডায়াবেটিস, প্রস্টেট-এর সমস্যাও পেয়ারার রস ভাল ফলদায়ক। দাঁতের ব্যথা, মাড়ি ফোলা কিংবা মুখের আলসার-এ পেয়ারা পাতার রস বেঁটে লাগালে উল্লেখযোগ্য উপকার পাওয়া যায়।

ডা: মাও: লোকমান হেকিম
চিকিৎসক-কলামিস্ট, মোবা : ০১৭১৬২৭০১২০

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন