ভূয়া র্যাব পরিচয়ে প্রতারক চক্র দ্বারা প্রতারিত ভূক্তভোগী একজনের নিকট হতে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে দেখা যায় প্রতারক চক্রটি র্যাব সদর দপ্তরের বিভিন্ন পদের সীল ব্যবহার করে নিজেদের তৈরীকৃত ভূয়া নোটিশ তৈরী করে সাধারণ নিরীহ ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে প্রেরণ করে। উক্ত নোটিশনামায় প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে উৎকোচ প্রদানপূর্বক উক্ত অভিযোগ থেকে অব্যাহতি মিলবে এমন আশ্বাস দেয়। অন্যথায় গ্রেফতারের ভয় দেখানো হয়। এ প্রেক্ষিতে প্রতারিত একজনের নিকট থেকে অভিযোগ পেয়ে প্রতারণাকারী চক্রের মূলহোতা জয়নাল আবেদীনসহ ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১।
শনিবার (২৪ আগস্ট) দিবাগত রাতে নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ থানাধীন রুপসী এলাকা থেকে র্যাবের সদস্য পরিচয়ে উৎকোচ আদায়ের সময় হাতে-নাতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ঐ ভূয়া র্যাব সদস্যদের কাছ থেকে র্যাবের পোশাক পরিহিত নিজেদের এডিট করা ছবি, র্যাবের মনোগ্রাম সম্বলিত জ্যাকেট, র্যাব সদর দপ্তরের সীল ও অফিসারদের ভূয়া স্বাক্ষর সম্বলিত বিভিন্ন নোটিশ, র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা অফিসার-ডিউটি অফিসার-তদন্তকারী অফিসারের নামীয় সীল, বিজিবির আইডি কার্ড-ইউনিফরম, ল্যাপটপ, প্রিন্টার, মোবাইল ও একাধীক সীম কার্ড জব্দ করা হয়। রোববার দুপুরে র্যাব-১১’র কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় র্যাব।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১’র সিইও কাজী শমসের উদ্দনী বলেন, উল্লেখিত প্রধান আসামী মোঃ জয়নাল আবেদীন ইতিপূর্বে বিজিবিতে চাকুরী করতো। চাকুরীরত অবস্থায় সে ২০১৭ সালে বিজিবি থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার নেতৃত্বে একটি প্রতারক চক্র সংগঠিত হয়। সে দীর্ঘদিন ধরে বিজিবিতে চাকুরী দেয়ার নাম করে অনেক লোকজনের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। এই প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আর্থিকভাবে সম্পদশালী লোকদের র্যাবের মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করার নামে ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ও জনপ্রতিনিধিদেরকে ব্যবহার করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়। তারা সাধারণ মানুষের শ্রেণী বুঝে কখনও র্যাবের এসআই কখনও ওয়ারেন্ট অফিসার পরিচয় দিয়ে আসছিল। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- কুড়িগ্রামের উকিলপুর থানাধীন মাসতীবাড়ী দীঘর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে মোঃ জয়নাল আবেদীন (২৭), গাজীপুর সদরের জান্দালিয়াপাড়া এলাকার মৃত মুসলেম উদ্দিনের ছেলে মোঃ নাজমুল হোসেন (২৭) ও কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি থানাধীন চরজাকারিয়া গ্রামের মোঃ রফিকুল ইসলামের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (২৯)। বর্তমানে সবাই গাজীপুরের জয়দেবপুর এলাকায় বসবাস করে আসছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন