একশ্রেণির ওষুধ কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে জীবন রক্ষাকারী ওষুধে ভেজাল মেশানোর অপরাধ করে আসছে। এই ভেজাল ও নকল ওষুধগুলো বিশেষ করে রাজধানীর মিটফোর্ডসহ দেশের বৃহত্তর ওষুধ বাজারে এমনভাবে ঢুকছে যা যাচাই-বাছাই করা দুষ্কর। এতে দেশের ওষুধ ফার্মেসি বা ওষুধের ক্ষুদ্র দোকানগুলো বিপদে পড়ছে। অনেকক্ষেত্রে তাদের পক্ষে আসল ও ভেজাল ওষুধ চেনা খুবই দুষ্কর। সময় সময় ঐ সকল ওষুধের ফার্মেসি বা ওষুধ বিক্রেতাকে হেনেস্তা বা বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের নজরদারী, তদারকি ও পরিদর্শনের অভাবে দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলোর পোয়াবারো।
উদ্বেগজনক হচ্ছে, দেশের অনেক ওষুধ কোম্পানি নি¤œমানের ওষুধ তৈরির পাশাপাশি নামিদামি কোম্পানির উন্নতমানের ওষুধ নকল করা শুরু করেছে। রোগীকে বাঁচাতে হলে ওষুধের গুণগত মান রক্ষার্থে সরকারকে কঠোর হতে হবে। শুধু লাইসেন্স বাতিল নয়, কালক্ষেপণ না করে নকল, বিষাক্ত ও ভেজাল বা নি¤œমানের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি ভেজাল ও নকল ওষুধ বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ওষুধের ফার্মেসিগুলোকে সচেতন হতে হবে। বাড়তি অর্থের লোভে কোন ওষুধের দোকান বা ফার্মেসিগুলো জড়িত হয়ে না পড়ে সেদিকে বাংলাদেশ ফার্মাসিস্ট ও ড্রাগিস্ট সমিতিকে এগিয়ে আসতে হবে। মূলত ওষুধ নকল করা কিংবা প্রয়োজনীয় উপাদানের ভেজাল দেয়ার ঘটনা নীরবে মানুষ হত্যা করা।
কারণ, এ সকল ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কেউ কেহ ক্যান্সারের মতো রোগের ওষুধেও ভেজাল দিচ্ছে। দিক নির্দেশনা না মেনে অনেক কোম্পানি তৈরি করছে নি¤œমানের এন্টিবায়োটিক। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ওষুধ ব্যবসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন যাবৎ ড্রাগ লাইসেন্স বন্ধ করে রাখা হযেছে। কর্মসংস্থান ও ওষুধে ব্যবসা সামাজিকভাবে ভদ্র ও ভালো অবস্থানে থাকায় আজকাল শিক্ষিত লোকজন এই ব্যবসার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। সেবামূলক ব্যবসা হওয়া সত্ত্বেও ড্রাগ লাইসেন্স ওষুধ ব্যবসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ফার্মাসিস্টদের জন্য স্বল্পমেয়াদী কোর্সটিও বন্ধ রয়েছে। পুনরায় ড্রাগ লাইসেন্স চালুর মাধ্যমে সরকার অনেক রাজস্ব আয় করবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
রোগী ও মানুষের জীবন বাঁচাতে ওষুধের গুণগত মান রক্ষার্থে সরকারকে কঠোর হবার পাশাপাশি দেশের সকল ওষুধ বিক্রেতা ও ফার্মেসিগুলোকে নকল ও ভেজাল ওষুধ বিক্রি পরিহার করে দেশের মানুষের জীবন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানাই।
মাহবুবউদ্দিন চৌধুরী
১৭, ফরিদাবাদ-গেন্ডারিয়া,
ঢাকা-১২০৪।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন