পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসাপ্রশাসন বিভাগের সভাপতির কক্ষে গোপন খাস কামরার সন্ধান পেয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঐ বিভাগের বর্তমান ও সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই কামরার খাটসহ আসবাবপত্র বের করে দেয়। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনানূগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী শিক্ষার্থীদের।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বর্তমান সভাপতি আমিরুল ইসলাম ও সাবেক সভাপতি ড. কামরুজ্জামান বিভিন্ন সময়ে বিভাগের নারী শিক্ষার্থীদের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন নির্যাতন চালায় ঐ খাস কামড়ায়।
বিষিয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও সামাজিক সম্মান ও শিক্ষা জীবনের কথা ভেবে ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ করতে সাহস পায়নি। সম্প্রতি ওই কক্ষে খাট পেতে খাস কামরা তৈরির বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সভাপতির কক্ষে গিয়ে চ্যালেঞ্জ করলে ঐ গোপন খাস কামরায় সুসজ্জিত বিছানা সন্ধান পাওয়া যায়। এ সময় তাদের তোপের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কামরা থেকে খাটসহ আসবাবপত্র বের করে দেন।
তবে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ওই বিভাগের বর্তমান ও সাবেক সভাপতি নিয়মিত ও সান্ধ্য কোর্সের নারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময়ে তাদের ওই কক্ষে ডেকে নিতেন। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ক্যম্পাসে এ নিয়ে নানান গুনঞ্জন চলে আসছিল । পাবিপ্রবি’র ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদ চৌধুরী আসিফ সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করেছেন ঐ দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে । বিষয়টি আজ অফিস কক্ষে এ ধরণের সুসজ্জিত খাস কামরার দেখে মনে হয়েছে এটির কি প্রয়োজন ? তা আমার বোধগম্য নয়।’ নারী শিক্ষার্থীদের যৌন হেনস্থা মতো স্পর্শকাতর বিষয় হলে অবশ্যই সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’
ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সভাপতি ড. আমিরুল ইসলাম নিজের বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নৈশ ও নিয়মিত কোর্সের ক্লাশ নেওয়ার জন্যে ক্যম্পাসে শিক্ষকদের দীর্ঘসময় অবস্থান করার কারণে পূর্বের সভাপতি ও বিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে শুধুমাত্র বিশ্রামের জন্যেই ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে পাবিপ্রবির প্রক্টর ড. প্রীতম কুমার দাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় নীতিমালায় বিভাগীয় সভাপতির কক্ষে এ ধরণের খাট বিছানোর সুযোগ আছে কিনা আমার জানা নেই। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কথিত ওই খাস কামরা থেকে আমরা খাটসহ আসবাবপত্র বের করে দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, এটি আসলে একটি স্টোর রুম যা ২০১৫ সালে করা হয়। এখানে বিছানা করে বিশ্রাম এবং অনেক শিক্ষক নামাজ পড়ছেন এবং পড়েন। কোনো যৌন হয়রানীর লিখিত অভিযোগ কোনো ছাত্রী যদি গোপনে করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয় রিজেন্ট বোর্ডের সম্মানিত সদস্যগণ অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন। ২০১৫ সাল থেকে কোনো সময় এই ধরণের অভিযোগ কেউ করেননি। হঠাৎ করে ২০১৯ সালে আজ ২৭ আগস্ট এই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে । তারপরও কোনো ছাত্রী গোপনে অভিযোগ করলেও ভিসি স্যার সেটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। প্রয়োজনে রিজেন্ট বোর্ডের সভায় উথ্থাপন করা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন