পাবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলী এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পদত্যাগের এক দফা দাবীতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে আজও বিক্ষোভ করছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ৮ম দিনের মতো বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে লালকার্ড প্রদর্শন করে বিক্ষোভ মিছিল বের করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়েও বিক্ষোভ করে তারা। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, সম্প্রতি ফাঁস হওয়া পাবিপ্রবি উপাচার্য ড. এম রোস্তম আলীর কাছে চাকুরী প্রার্থীর ঘুষ ফেরত চাওয়ার অডিও তদন্তসহ ১২ দফা দাবি পূরণে লক্ষ্যে আন্দোলন করে আসছেন তারা। দাবী পূরণে বেঁধে দেয়া সময়সীমা পার হলেও প্রশাসন কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় ভিসি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে গত ৩০ নভেম্বর থেকে আন্দোলন শুরু করেন। আগামী ১৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগেই সংকট সমাধানের দাবী শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন , বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন বন্ধ করার জন্য প্রশাসন দিয়ে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হুমকি প্রদান করছে। তারা আরও বলেন, এই ভিসি স্যার নিজের ব্যর্থতা , দুর্নীতির অডিও ভাইরাল বিষয়টি ধামাচাপা দিতেই শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধের জন্য প্রশাসন দিয়ে ত হুমকি দিচ্ছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা , তাদের দাবী পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আগামী ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ^বিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাসহ সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধের হুশিয়ারী প্রদান করেন।
প্রসঙ্গত : ইটিই ও ইইই অনুষদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তাদের দাবী নিয়ে চলমান আন্দলনে প্রায় ৬০ দিনে বেশী ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা । এই চলমান আন্দোলনের মধ্যে আকস্মিকভাবে ইতিহাস বিভাগে প্রভাষক পদে চাকুরী প্রার্থী মনিরুল ইসলাম মন্ত্রী ও উপমন্ত্রী ও একজন মন্ত্রীর সুপারিশসহ চাকুরী আবেদন করেন। তিনিসহ ২৮ জন প্রার্থীর কারোই চাকুরী হয়নি। মনিরুল ইসলামের একটি অডিও ভাইরাল হয়ে পড়ে, তাতে ভিসিকে চাকুরীর জন্য দেওয়া দুই দফায় আট লাখ টাকা চাকুরীর জন্য প্রদান করা হয় বলে শোনা যায় । এরপর এ নিয়ে আন্দোলন ভিন্ন দিকে রূপ নেয় । অডিও সংক্রান্ত বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করাসহ ৪ দফা দাবীতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা । এই আন্দোলন ১২ দফায় রূপ নিয়ে এখন এক দফা আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। এই আন্দোলনের সাথে ছাত্রলীগ সংহতি প্রকাশ করেছেন। এই সময়ের মধ্যে পাবনা সদর এম.পি এবং পাবিপ্রবি’র রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে পাবিপ্রবি ভিসির অনুরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। তিনি বৈঠক করেন এবং পরে সাংবাদিকদের বলেন, ১২ দফা দাবী পর্যায়ে ক্রমে মেনে নেওয়া অসম্ভব নয় । আন্দোলনরত ছাত্ররা ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন। এই সময় অতিবাহিত হওয়ার পর এক দফা দাবীতে আন্দোলন শুরু করেন। এদিকে , বিশ্ববিদ্যালযের কর্মচারীরা ৫ দফা দাবীতে কর্ম বিরতি দিয়ে ভিসি স্যারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন আজ। দাবী পুরণ না হলে আগামী শনিবার থেকে কর্মবিরতিসহ অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন কর্মচারীরা।
অপরদিকে, চলমান অবস্থার সংকট নিরসনের জন্য বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষক পরিষদ, কর্মকর্তা পরিষদ ক্যাম্পাসে মানববন্ধসহ ভিসি স্যারের নিকট স্মারক লিপি প্রদান করেছেন বলে জানা গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন