মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

এক দিনে বেড়েছে ১০ টাকা

হিলিতে পেঁয়াজের ঝাঁজ

হিলি (দিনাজপুর) সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁজ আবারও বেড়েছে। পেঁয়াজের মুল্যবৃদ্ধি রুখতে ও কারসাজি করে কেউ যেন পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি করতে না পারে সে ব্যাপারে পেঁয়াজ আমদানিকারকদের নিয়ে পৃথক পৃথক বৈঠক করেন উপজেলা প্রশাসন ও টিসিবি চেয়ারম্যান। এতে করেও পেয়াজের দাম কমছে না।
এর মধ্যে দুই দিনের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা। খোলা বাজারে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক রাখতে পেঁয়াজ কিনছে টিসিবি। এরই ধারাবাহিকতায় হিলিতে টিসিবিকে ২ জন ব্যবসায়ী পেঁয়াজ দিতে শুরু করেছে।
ভারতীয় কৃষিপণ্য মূল্য নির্ধারণকারী সংস্থা “ন্যপেড” গত শুক্রবার হঠাৎ করে পেঁয়াজের রফতানি মূল্য সাড়ে ৩শ ডলার থেকে বাড়িয়ে ৮৫২ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে। এদিকে গত বৃহস্পতিবার হিলি স্থলবন্দরের পাইকারি বাজারে যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫২ টাকায় কেজি দরে। শনিবার ওই পেঁয়াজই পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে।
গত রোববার বিভিন্ন ব্যাংকে পুরনো এলসিগুলো পুনরায় অ্যামানমেন্ড এবং নতুন করে এলসি করে পেঁয়াজ আমদানি করছেন ব্যবসায়ীরা। বন্দর সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহের গত ৬ কর্মদিবসে ভারতীয় ৮৮ ট্রাকে ১ হাজার ৯০৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে। তবে চলতি সপ্তাহের প্রথমদিন শনিবার পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ২২ গাড়িতে ৪শ ৮৯ টন ৫শ কেজি।
এদিকে ভারত সরকার পেঁয়াজের রফতানি মূল্য বাড়িয়ে দেয়ার প্রভাব পড়েছে দেশীয় খোলা বাজারে। পেঁয়াজের দাম কমে আসবে এমনই কথা ব্যবসায়ীদের। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে গত বুধবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে হিলি স্থলবন্দরের সকল পেঁয়াজ আমদানিকারকদের সাথে হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান (ভার.) বৈঠক করেন। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশীদ, হিলি স্থলবন্দর আমদানি রফতানিকারক গ্রæপের সহ-সভাপতি শহিদ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, পেঁয়াজ আমদানিকারক সাইফুল ইসলাম, বাবলুর রহমানসহ অনেকে।
সভায় পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি রুখতে ও কারসাজি করে পেঁয়াজ মজুদ করে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরির মাধ্যমে কেউ যেন পেঁয়াজের দাম বাড়াতে না পারে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সেই সাথে দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বন্দরের ব্যবসায়ীদের বেশি করে পেঁয়াজ আমদানি করার আহবান জানানো হয়।
এদিকে খোলা বাজারে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক রাখতে দেশের চারটি স্থলবন্দর থেকে আমদানিকারকদের কাছ থেকে পেঁয়াজ কিনবে টিসিবি। এরই ধারাবাহিকতায় হিলিতে টিসিবিকে পেয়াজ দিতে শিডিউল ড্রপ করলেন ৩টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। গতকাল শনিবার খান ট্রের্ডাস ও সততা বাণিজ্যালয় নামে ২টি প্রতিষ্ঠান টিসিবিকে প্রথমদিনেই ৫০ মে.টন পেয়াজ ৬০ ও ৬২ টাকা কেজি দরে পেয়াজ সরবরাহ করেন। এদিকে টিসিবি চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান জাহাঙ্গির হিলি স্থলবন্দরে আসেন এবং তিনি সরবরাহকৃত পেঁয়াজ দেখেন ও ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় করেন।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীর বাজারগুলোয় সেঞ্চুরি করতে চলেছে পেঁঁয়াজ। এই মশলাটির ঝাঁজ ক্রমেই বাড়ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ত্রিশ টাকা বেড়েছে। অজুহাত ভারতে পেঁঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে। আমদানি কমেছে। স্বাভাবিক কারণেই দাম বাড়ছে। এনিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে অস্বস্তি বেড়েছে।
গতকাল রাজশাহীর প্রধান বাজার সাহেব বাজার ও পাইকারি বাজার মাস্টারপাড়ায় খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা যায় দেশি পেঁঁয়াজ আকারভেদে প্রতি কেজি ৭৫ টাকা ভারতীয় বড় পেঁঁয়াজ ৬৫ টাকা ও তুরস্কের পেঁঁয়াজ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চলতি মাসের গোড়ার দিকে পেঁয়াজের দাম ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজির মধ্যে। দশ দিনের মধ্যে বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে। ভারতে পেঁয়াজের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে দেশি পেঁয়াজের বাজারে। খুচরো ব্যবসায়ীরা বলছেন পাইকারি বিক্রেতারা দাম বাড়ালে আমাদেরও বাড়তি দামে কিনে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
কাঁচামালের ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায় রাজশাহীতে সব সময় তিনজন বড় ব্যবসায়ী পেঁয়াজ আদা রসুনসহ মসল্লার বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। তারা যখন যে দাম বলে তাতে কেনাবেচা চলে। রাজশাহী অঞ্চলে পেঁয়াজ আসে সোনা মসজিদ স্থল বন্দর দিয়ে। সোনা মসজিদ স্থল বন্দর পানামা পোর্ট লিংক কোম্পানি লি.-এর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, সপ্তাহ খানেক ধরে এই বন্দর দিয়ে পেঁঁয়াজের ট্রাক আসা কমে গেছে। সাধারণত এ বন্দর দিয়ে প্রায় একশো ট্রাক আমদানি হলেও পঞ্চাশ থেকে পয়ত্রিশে এসে ঠেকেছে। ভারতে দাম বৃদ্ধির কারণে আমদানি কমেছে। দাম কমলে আমদানি ফের বাড়বে।
এদিকে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রির খবরে ক্রেতারা খুশি হলেও এখনো সে পেঁঁয়াজের নাগাল মেলেনি। টিসিবির আঞ্চলিক অফিস সূত্র জানায়, আগামী সপ্তাহ থেকে এখানে পেঁঁয়াজ বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। আবার হঠাৎ করে বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে তুরস্কের পেঁয়াজ। ক্রেতারা বলছেন সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হচ্ছে। প্রশাসনিকভাবে বাজার তদারকি করা প্রয়োজন। এখানে একটি বাজার দপ্তর থাকলেও তারা শুধু প্রতিদিনের দামের খবর নিয়ে কেন্দ্রে রিপোর্ট করে। বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হয়না।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন