শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের দাবিতে কৃষকদের বিক্ষোভ

চাষিদের প্রশ্ন কার স্বার্থ দেখছে মন্ত্রণালয়?

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০২২, ১২:২৯ এএম

বাংলাদেশ এবং ভারতে আবহাওয়া এক হওয়ায় দুই দেশে এখন পেঁয়াজের ভরা মৌসুম। দেশে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার ২৯ মার্চ পর্যন্ত ভারতের পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দিয়েছিল। সারাদেশে পেঁয়াজ উঠানো শুরু হয়েছে। ভরা মৌসুমে এখন দেশের বাজারে প্রচুর দেশি পেঁয়াজ। কিন্তু হঠাৎ করে গতকাল ভারত থেকে পেঁয়াাজ আমদানির সময়সীমা আরো এক মাস বাড়িয়ে দেয়া হয়। কৃষি সচিব মো. ছায়েদুল ইসলাম বলেছেন, বাজার স্থিতিশীল রাখতে রোজার ঈদ পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের পরিকল্পনা নেই। রমজানে ভোক্তা ও কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় আপাতত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে এমনই সাঁয় দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণলায়। অথচ ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের দাবিতে গতকাল কৃষকরা বিক্ষোভ করেছেন। ঝিনাইদহের শৈলকুপায় চাষিরা পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেন। তাদের বক্তব্য ভারত এবং বাংলাদেশে দুই দেশেই পেঁয়াজের ভরা মৌসুম। কিছু দেশের ব্যবসায়ীর স্বার্থ রক্ষা এবং ভারতের পেঁয়াজচাষীদের স্বার্থ রক্ষায় সে দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির সময় এক মাস বাড়ানো হয়েছে। দেশের পেঁয়াজ চাষীদের বাঁচাতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করতে হবে।

দেশের সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলা ফরিদপুর, পাবনা, কুষ্টিয়া, রংপুরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এবার পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকদের ঘরে ঘরে এখন পেঁয়াজ। ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির কারণে তারা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্ছিত হচ্ছেন।

এদিকে ভরা মৌসুমে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ ও ন্যায্যমূলের দাবিতে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় পেঁয়াজ চাষিরা পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার পেঁয়াজের আড়ত হিসেবে খ্যাত শৈলকুপা বাজারে শত শত চাষি এই বিক্ষোভে অংশ নেয়; তবে অপারগ হয়ে কিছু চাষি বিক্রিও করেছেন।

চাষিরা অভিযোগ করেন, ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানির কারণে তাদের উৎপাদন খরচ তোলা তো দূরের কথা; বরং লোকসান গুনতে হচ্ছে। তারা পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের দাবি জানান।
বাজার স্থিতিশীল রাখতে রোজার ঈদ পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রাখার জন্য চলতি সপ্তাহেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। মঙ্গলবার আমদানি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

কৃষি সচিব মো. ছায়েদুল ইসলাম বলেন, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করে থাকি। এখন পর্যন্ত কৃষক পেঁয়াজের ভাল দাম পাচ্ছে। অন্যদিকে সামনে পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। এই সময়ে পেঁয়াজের দাম যাতে না বাড়ে, সেটিও আমাদের বিবেচনায় রয়েছে। আপাতত ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের পরিকল্পনা কৃষি মন্ত্রণালয়ের নেই।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, দেশের অন্যতম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলা ঝিনাইদহ। চলতি মৌসুমে জেলায় ১০ হাজার ৭৯১ হেক্টরে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। তার মধ্যে শৈলকুপা উপজেলাতে সাড়ে ৮ হাজার হেক্টরে পেঁয়াজ হয়েছে। চাষিরা জানান, চলতি মাসের শুরু থেকেই বাজারে নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করে। প্রথম দিকে প্রতি মণ পেঁয়াজ এক হাজার ৮০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হয়েছে। আমদানি বাড়ার পর দাম কমতে থাকে। গতকাল মঙ্গলবার ছিল শৈলকুপার হাটবার। ভোর হতেই চাষিরা ভ্যান, নসিমন বোঝায় করে পেঁয়াজ হাটে নিয়ে আসে। বাজারে ২০ হাজার মণ পেঁয়াজ আমদানি হয় বলে চাষিরা জানান।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শৈলকুপা বাজারের আড়তদার সিরাজুল ইসলাম মাখন বলেন, এখন পেঁয়াজের মৌসুম আর ভারত থেকে আমদানি- এই দুই কারণেই বাজার পড়ে গেছে। বাজারে চাষিরা বিক্ষোভ করেছেন। অনেক সময় বেচাকেনা বন্ধ ছিল। তারপর আবার শুরু হয়েছে।

শৈলকুপা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আজগর আলী বলেন, দাম কমে গেছে এটা সত্য। তবে আমরা তো শুধু উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত; বাজারজাতকরণ আমাদের হাতে নেই। ফলে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না। ##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
Harunur Rashid ৩০ মার্চ, ২০২২, ১:১৭ এএম says : 0
Farmers must be first period.
Total Reply(0)
jack ali ৩০ মার্চ, ২০২২, ১২:১৩ পিএম says : 0
এটাকেই বলে দেশপ্রেম দেশের সরকার দেশপ্রেমের কথা বলতে বলতে মুখে ফেনা উঠে ফেলেছে আর আমরা এখন এদের জন্য আমাদের জীবন এখন ধ্বংস হয়ে গেছে
Total Reply(0)
iqbal ৩০ মার্চ, ২০২২, ১:৫৪ পিএম says : 0
Our country is guided by indian RAW.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন