শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

কাশ্মীরে গত ৩ মাসে ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতি

বিশেষ মর্যাদা বাতিল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:৩৭ পিএম

ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন ও বিশেষ মর্যাদা বাতিলের জেরে তিন মাসে অঞ্চলটির ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এর মাত্রা নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিটিআই-এর সঙ্গে কথা বলেছেন কাশ্মির চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি শেখ আশিক আহমদ। তিনি জানান, স্বায়ত্তশাসন বাতিলের পর গত তিন মাসে অঞ্চলটির ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতির পরিমাণ ১০ হাজার কোটি রুপিরও বেশি। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১১ হাজার ৯৯৭ কোটি ৯৪ লাখ ৬০ হাজার ১০০ টাকা। রবিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে পিটিআই।
শেখ আশিক আহমদ বলেন, কাশ্মিরে ব্যবসা-বাণিজ্য খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০ হাজার কোটি রুপি ছাড়িয়ে গেছে। প্রায় সবক্ষেত্রেই প্রভাব পড়েছে। তিন মাস হতে চললেও এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। সেজন্য ব্যবসায়ীরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। সম্প্রতি পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ব্যবসায় মন্দা চলছে।
কাশ্মিরের রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার পর আগামী ৩১ অক্টোবর ভারতের কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে জম্মু-কাশ্মির ও লাদাখ। শেখ আশিকের বক্তব্যে তার আগে সেখানকার বিদ্যমান পরিস্থিতি সামনে এলো।
শেখ আশিক আহমদ বলেন, ‘আজকের দিনে যে কোনও ব্যবসার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট পরিষেবা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি। এতে শুধুমাত্র ব্যবসায়ীদেরই ক্ষতি হবে না, বরং পুরো কাশ্মিরের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়বে। দীর্ঘমেয়াদে সরকারকেই এর ফল ভোগ করতে হবে।’
কাশ্মির চেম্বারের সভাপতি বলেন, ইউরোপ, আমেরিকা-সহ দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে কাশ্মিরি হস্তশিল্প রফতানি হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখায় সামগ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘হস্তশিল্পের ক্ষেত্রে জুলাই-আগস্ট মাস নাগাদই বিদেশ থেকে অর্ডার এসে যায়। বড়দিন এবং নতুন বছরের আগে তা সরবরাহ করতে হয়। কিন্তু অর্ডার হাতে পেলে তবে তো সরবরাহের কথা ভাবা যাবে! যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থাই নেই, সেখানে অর্ডার আসবে কোথা থেকে? এর ফলে প্রায় ৫০ হাজার হস্তশিল্পী এবং তাঁতশিল্পী কাজ হারিয়েছেন।’
শেখ আশিক আহমদ বলেন, শুধুমাত্র কাজ হারানোই নয়, ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকায় পণ্য ও পরিষেবা কর জিএসটি-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার এই পরিস্থিতির দায় এড়াতে পারে না।
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। উপত্যকাজুড়ে সাত লাখ ভারতীয় সেনা মোতায়েনের মধ্য দিয়ে বেসামরিক মানুষের ওপর শুরু হয় অকথ্য নির্যাতন। প্রাণহানি ছাড়াও বিভিন্ন বাড়িঘর থেকে উঠতি বয়সী তরুণদের তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে। সংবাদমাধ্যমের ওপর প্রতিষ্ঠা করা হয় কঠোর নিয়ন্ত্রণ। ফলে সেখানকার প্রকৃত পরিস্থিতি জানার সুযোগ খুবই সীমিত হয়ে পড়ে। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বরাবরই কাশ্মিরজুড়ে ব্যাপক ধরপাকড়ের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। সূত্র: পার্স টুডে, টাইমস অব ইন্ডিয়া।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন