হলি আর্টিজান মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামির মধ্যে দুজনের মাথায় জঙ্গি সংগঠন আইএস এর প্রতীক সংবলিত কালো টুপি থাকা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনরা। আসামি রাকিবুল হাসান রিগ্যান বুধবার আদালত চত্বরে দীর্ঘ সময় ধরে বিনা বাধায় প্রকাশ্যে ওই টুপি প্রদর্শন করেন বলে জানা যায়। যা নিয়ে নানারকম প্রশ্ন উঠছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
রিগ্যানসহ হোলি আর্টিজান হামলা মামলার সব আসামিই ছিল কাশিমপুর কারাগারে। এটি বাংলাদেশের একটি হাই সিকিউরিটি প্রিজন বলে পরিচিত। গুরুত্বপূর্ণ আসামিদেরকে সাধারণত এই কারাগারে রাখা হয়। কারাগারের বাইরের যেকোনো সামগ্রী প্রবেশে সেখানে কড়াকড়ি থাকে। সেক্ষেত্রে এরকম একটি স্পর্শকাতর প্রতীক সম্বলিত টুপি কীভাবে রিগ্যানের কাছে পৌঁছালো, তা নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।
ফেইসবুকে উদ্বেগ জানিয়ে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘হলি আর্টিজান হামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাকিবুল ইসলাম রিগ্যানকে আদালতের সামনে পুলিশ প্রহরায় আইএস এর মনোগ্রাম খচিত টুপি মাথায় পরিহিত দেখা গেছে। ঘটনাটি বিস্ময়কর এবং ভয়ঙ্কর প্রশ্নবোধক। কেননা আসামি রিগান দীর্ঘদিন কারা হেফাজতে ছিলেন।’’
মো. মাহবুব আলী খানসুরের প্রশ্ন, ‘‘এতদিন জেলে থাকার পরেও আইএস টুপি পাইল কোথায়? কারা আসামিদের এই টুপি সরবরাহ করলো? পুলিশ এই আই এস টুপি আসামিদের পরতে দিল কেন?’’
‘‘জেল থেকে আদালতের এজলাস। কারা এই টুপিটি সরবরাহ করলো! অপেক্ষায় থাকবো জানার জন্য’’ লিখেছেন সিনিয়র সাংবাদিক সালেহ আকন।
তাসনিম আলম লিখেছেন, ‘‘কারাগারে আইএস এর টুপি সরবরাহ করলো কারা? রাষ্ট্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এই আয়োজন কিনা, তা খতিয়ে দেখা উচিত।’’
সফিকুল ইসলাম প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘কারাগার কি আইএস পরিচালনা করে নাকি? তাহলে টুপি পেলো কিভাবে, এই নাটক করে কি জনগণকে বোকা বানাচ্ছেন নাকি দেশটাকে ধংস করছেন?’’
‘‘এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট কাহিনী মনে হচ্ছে। বারবার একটি প্রশ্ন জেগেছে মনে: জঙ্গিরা হলি আর্টিসানে কেন হামলা করবে? এখানে ইসলাম ধর্মের কী স্বার্থ রয়েছে? রায় ঘোষণার তিনদিন আগ থেকে পুরো ঢাকা শহর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে, তারপরও জঙ্গিদের মাথায় আইএস এর টুপি! সন্দেহ এখানেই। ওরা বলিরপাঠা হচ্ছেনা তো?’’ লিখেছেন কবির।
মো. বরকত উল্লাহর প্রশ্ন, ‘‘বাংলাদেশকে পৃথিবীর বুকে আইএস উপস্থাপন করার জন্য এগুলো কারা করছে দেশে বসে? কালিমাকে কে বা কারা লেপন দিচ্ছে..?
আসামিরা আজকে ৫ বছর যাবত কারাগারে তাদের মাথায় আইএসএর লোগো পরা টুপি কি করে আসে? কারা এই টুপি পরিয়ে দুনিয়াকে দেখাচ্ছে বাংলাদেশে আইএস আছে..?’’
সুজন চন্দ্র মন্ডল লিখেছেন, ‘‘মানে এটা কিভাবে সম্ভব? এভাবে তাকে জঙ্গিবাদের বিজ্ঞাপন দেয়ার সুযোগ করে দেওয়ার মানে কি? এই ব্যাপারে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এখন কর্তৃপক্ষের একান্ত কর্তব্য।’’
‘‘বিস্মিত হওয়ার কিছু নাই, এগুলো পূর্বপরিকল্পিত, এভাবেই অবৈধ সরকার মিথ্যা নাটক করে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করছে, দেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে’’ মন্তব্য মোহাম্মাদ মানিকের।
মোহাম্মাদ শাহেদ লিখেছেন, ‘‘সর্ষের ভিতরে ভূত যেভাবে বসবাস করে তেমনি নতুন নাটকের জন্য জঙ্গির মাথায় আইএসের টুপি। ভাবতে বিষ্ময়কর হলেও ঘটনা স্বাভাবিক!’’
নাজমুল হক লিখেছেন, ‘‘এটা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে দেখা উচিত। নিরাপত্তার চাদরের মাঝে কে বা কারা এটা পাঁচার করলো কিভাবে!! আর, আইনশৃংখলা বাহিনীর উচিত ছিলো টুপিটা রিপ্লেস করা।’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন