বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বাংলাভাষীদের পুশ ইনে ভারতের নতুন কৌশল

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৬:৩৬ পিএম

পুশ ইন নিয়ে এবার ভারত নতুন কৌশল নিয়েছে। সীমান্তপথে দল বেঁধে নয়, ২/৩জন করে রাতের আঁধারে সুযোগ বুঝে ঠেলে দিতে হবে বাংলাদেশে। আসামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে বাংলাভাষীদের ‘বাংলাদেশী’ আখ্যা দিয়ে আটক করে বিএসএফএর হাতে তুলে দিয়ে এমনই নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। বিজিবি অধিক সতর্কাবস্থায় থাকা এবং বিভিন্ন সীমান্তের গ্রামে কমিটি গঠন করে পাহারা দেওয়ায় পুশ ইন নিয়ে সীমান্তে উচ্চবাচ্য ও সাংঘর্ষিক অবস্থা হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকেই ওই কৌশল রপ্ত করা হচ্ছে বলে ওপারের একাধিক সূত্রে জানা গেছে। শুধুমাত্র বেনাপোল ও মহেশপুর সীমান্তপথে গত ৩৫দিনে ওপার থেকে বাংলাভাষীদের ঠেলে পাঠানো হয়েছে প্রায় ৪শ নারী, পুরুষ ও শিশু। যাদের আটক করে বিজিবি থানা পুলিশে হস্তান্তর করেছে। বর্তমানে আরো প্রায় অর্ধশত বাংলাভাষী ওপারের বিভিন্ন সীমান্তে জড়ো করা হয়েছে বলে সূত্র জানায়।

পুশ ইনের ব্যাপারে যশোর ৪৯বিজিবির কমান্ডিং অফিসার কর্ণেল সেলিম রেজা দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, বিজিবিকে সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে স্পেশাল অপারেশন করা হবে সীমান্তে। যখনই যে সীমান্তে ঠেলে পাঠানোর খবর পাওয়া যাবে তখনই স্পেশাল টীম ঝটিকা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যবস্থা নেবে। বিজিবির খালিশপুরের ৫৮ ব্যাটালিয়ন এর পরিচালক লে.কর্ণেল কামরুল আহসান আমাদের ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতাকে বলেছেন, চোরচালান, মাদক কারবারিদের আটকের পাশাপশি এই সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের আটক করতে বিজিবির সদস্যরা সতর্কতার সাথে সীমান্ত এলাকায় তৎপর রয়েছে। বেনাপোল, চৌগাছা, মহেশপুর, জীবননগর, দর্শনা, মেগেরপুর ও সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন সীমান্তের ওপারে বিএস ক্যাম্পের পাশে কিছুসংখ্যক বাংলাভাষীকে জড়ো করা হয়েছে। সূত্র জানায়, আসাম থেকে গত ১০দিন আগে ভারতীয় পত্রিকার খবরে যে ৫৭জন নারী, পুরুষ ও শিশুকে আটক করে বনগাঁ সীমান্তে পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল তাদের এখনো বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাতে পারেনি বলে সীমান্ত সূত্রে জানা গেছে।

আমাদের ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা জানান, জেলার মহেশপুর সীমান্ত ভারত থেকে অনুপ্রবেশ নিয়ে সীমান্ত এলাকার মানুষ অস্বস্ততিতে আছেন। অনেকটা উদ্বেগও বিরাজ করছে। বিজিবির হিসাব মতে গত এক মাসে আড়াইশ জনের বেশি নারী-পুরুষ ও শিশু আটক হয়েছে। তবে এলাকার বিভিন্ন সূত্র মতে বিজিবির সতর্ক পাহারার মধ্যে চোখ ফাঁকি দিয়ে এসেছে অনেক বেশি। বিজিবির খালিশপুরের ৫৮ ব্যাটালিয়ন এর পরিচালক লে.কর্ণেল কামরুল আহসান বলেন, মহেশপুর এলাকার ৭০ কিলোমিটার সীমান্তের দশ কিলোমিটারে কাটাতাঁরের বেড়া নেই। বিজিবি সতর্ক আছে।

অনুপ্রবেশ নিয়ে সীমান্তবাসী অনেকের মধ্যে নানা প্রশ্ন রয়েছে। বিজিবির তথ্য মতে সীমান্ত এলাকার জললী, কুসুমপুর, মাটিলা বিওপি দিয়েই রাতে আধারে ঢোকানোর চেষ্টা চলে বেশী। ভারতের ব্যাঙ্গালুর, আসাম, বম্বেসহ বিভিন্ন এলাকায় বসবাসন করা বাংলাভাষীকে আটক করে সীমান্তে পাঠানো হচ্ছে। সীমান্তের বিভিন্ন সূত্রমতে, ভারতের মধুপুর, পলিয়া, রাজপুল রণঘাট, সোয়াদিয়া, হাবাসপুর, সালপাড়া, কুমারি, পাখিউড়া, সুতিপুর, ফতেপুর, বাদুরঘাটসহ বিএসএফ এর বিভিন্ন ক্যাম্পের আশেপাশে ওই দেশের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে বাংলাভাষী আটক করে সীমান্তে এনে জড়ো করছে। সুযোগ মতো বিএসএফ গভীররাতে বিভিন্ন গেট খুলে দেয় বলেও ওই সূত্র জানায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন