দেশের বৃহৎ ও একমাত্র দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার যমুনা সার কারখানায় (জেএফসিএল) আমদানিকৃত সারের ট্রাকে সারের বদলে পচা আটার বস্তার সন্ধান মিলেছে। বুধবার সারাদিন বিষয়টি কর্তৃপক্ষ গোপনে দেন-দরবার করে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেও বিকেল থেকে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালান কপি নিয়ে ট্রাক চালক সাইফুল ইসলাম পলাতক থাকায় সার ও আটার বস্তা নিয়ে বিপাকে কর্তৃপক্ষ।
জেএফসিএল সূত্র জানায়, বুধবার সকাল ৭টার দিকে যমুনা সার কারখানায় ‘মেসার্স সরকার ট্রেডার্স’-এর নামের ইস্যুকৃত একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো ট-১৮-৯৭৩৩) আসে। ট্রাকে কাফকোর আমদানিকৃত ২০ মে. টন ইউরিয়া সার ছিল। পরে কারখানার ডেলিভারি গেটে ট্রাকটি আনলোডের প্রস্তÍতিকালে স্কেলে সারের বস্তার মাঝে পচা আটার বস্তার সন্ধান পাওয়া যায়ে। নিরাপত্তা ও আনলোডের দায়িত্বে থাকা লোকজন ট্রাক আনলোড না করে আটকে রাখেন। পরে ট্রাক চেক করে সারের ভেতর ৩৪ বস্তা আটার বস্তা দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে কানাকানি শুরু হলে ট্রাক চালক সাইফুল ইসলাম সারের চালান নিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। দুপুর ২টার দিকে সার ও আটার বস্তাসহ ট্রাকটি কারখানার ভেতর থেকে গেটের বাইরে বের করে দেওয়া হয়। ট্রাকটি নিয়ে কর্তৃপক্ষ বিপাকে থাকলেও আমদানী কাজের দায়িত্ব পালনকারী প্রতিষ্ঠান সরকার ট্রেডার্সও দায় নিচ্ছে না।
এ ব্যাপারে মেসার্স সরকার ট্রেডার্সের সত্ত¡াধিকারী আবুল হোসেন সরকার বলেন, ‘ড্রাইভার অতিরিক্ত ভাড়া ইনকামের জন্য হয়তো সারের ট্রাকে কিছু আটার বস্তা নিয়েছিল। সারগুলো আমরা নেব না।’ কিছুক্ষণ পরই বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘যমুনা সার কারখানা কর্তৃপক্ষই জানে সারগুলো কার এবং রহস্য কী। আমি কিছু জানি না।’
জানা গেছে, গত বছরের ২৭ নভেম্বর ভোরে যমুনা সার কারখানার বয়লার স্টার্টার হিটার বিস্ফোরিত হয়। এতে এক বছরের অধিক সময় ধরে কারখানার ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ফলে যমুনা সার কারখানার এরিয়া বৃহত্তর ময়মনসিংহসহ উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় সারের চাহিদা মেটাতে সরকার ভারত, চীন, আরব আমিরাত ও সৌদি আরব থেকে উচ্চমূল্যে নিম্নমানের সার আমদানী করছে।
যমুনা সার কারখানার এমডি জাভেদ আনোয়ার বলেন, ‘সারের ট্রাকে আটার বস্তা থাকায় ট্রাকটি বাইরে ফেরত দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন