নেপাল সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমস পুরুষ ও নারী ক্রিকেটে যেন উড়ছে বাংলাদেশ। এশিয়ার অন্যতম দুই পরাশক্তি ভারত ও পাকিস্তান এবারের আসরে না খেলায় ক্রিকেটের দু’বিভাগেই স্বর্ণজয় বাংলাদেশের জন্য অনেকটাই সহজ হবে বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে। যার প্রমাণ বাংলাদেশের নারী ও পুরুষ ক্রিকেট দলের রেকর্ডগড়া জয়। নেপাল এসএ গেমসে নিজেদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে সালমা খাতুনরা রেকর্ডগড়া জয় পেয়েছিলেন। বুধবার পোখরায় তারা স্বাগতিক নেপালকে ১০ উইকেটে হারানোর পরের দিন মালদ্বীপের বিপক্ষে ২৪৯ রানের বড় জয় পান। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল এ ম্যাচে মালদ্বীপকে মাত্র ৬ রানে অলআউট করে রেকর্ডের খাতায় নাম লেখায়। পুরুষ ক্রিকেটেও একই ধারায় রয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপকে ১০৯ রানের হারানোর পর শুক্রবার ভুটানের বিপক্ষে রেকর্ড গড়েই জিতলেন সৌম্য সরকাররা। এদিন সকালে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে দূর্বল ভূটানকে ১০ উইকেটে হারায় জুনিয়র টাইগাররা। টস জিতে প্রথম ব্যাট করতে নেমে ভুটান নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে মাত্র ৬৯ রানেই গুটিয়ে যায়। ফলে লো-স্কোরিং ম্যাচে জয় তুলে নিতে বেগ পেতে হয়নি নাজমুল হোসেন শান্তদের। নিজেদের ইনিংস খেলতে নেমে সৌম্য সরকারের ঝড়ো ফিফটিতে মাত্র ৬.৫ ওভারে ৭০ রান তুলে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
এসএ গেমসে এবার লাল-সবুজের ফুটবল খুব একটা সুবিধে করতে না পারলেও ক্রিকেটাররা রয়েছেন স্বর্ণ জয়ের পথে। পুরুষ বিভাগে একমাত্র শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে শ্রীলঙ্কাকেই ভাবছে বাংলাদেশ। আর নন টেস্ট প্লেইং দেশ ভুটান, নেপাল ও মালদ্বীপকে খুব একটা শক্ত প্রতিপক্ষ ভাববার কোন অবকাশ নেই। তাই ভুটানের বিপক্ষে শান্তদের রেকর্ডগড়া জয়টি ছিল প্রত্যাশিত।
তাই শুক্রবার ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট মাঠে ইনিংসের শুরু থেকেই বাংলাদেশের বোলার মানিক-শান্তদের তান্ডবে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে ভুটান। তবে এ ম্যাচে হারলেও বড় একটি সফলতা আছে তাদের। বাংলাদেশের বিপক্ষে পুরো ২০ ওভারই ব্যাটিং করার কৃতিত্ব দেখিয়েছে ভুটানিরা। আর অলআউট হয়নি তারা। দলীয় ২৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভুটান। লেগ স্পিনার মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি প্রথম আঘাত হেনেছিলেন। ১৫ রান করা তেনজিন ওয়াংচুক জুনিয়র তার ঘূর্ণী বলের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরেন। আরেক ওপেনার জিগমে দর্জি ৩৭ বলে ১২ করে বোল্ড হন তানভির ইসলামের বাঁহাতি স্পিনে। এরপর দুই অঙ্ক ছুঁয়েছেন কেবল চারে নামা জিগমে সিংগে। তার ব্যাট থেকে আসে ১৩ রান। আর কোন ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। ২ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সফল বোলার পেসার মানিক খান। আর একটি করে উইকেট পেয়েছেন সৌম্য সরকার, মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি, মেহেদি হাসান রানা ও তানভীর ইসলাম। জয়ের জন্য ৭০ রানের লক্ষ্যে মাঠে নেমে প্রতিপক্ষের বোলারদের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই আক্রমনাতœক হয়ে ওঠেন সৌম্য সরকার ও নাঈম শেখ। তাদের ক্ষুরধার ব্যাটিংয়ের সামনে অসহায় ছিলেন ভুটানের বোলাররা। সৌম্যর ব্যাট এ ম্যাচে জ্বলে উঠেছিল। মাত্র ২৮ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন জাতীয় দলে খেলা এ ক্রিকেটার। তিনি নিজের ইনিংস সাজিয়েছেন পাঁচ বাউন্ডারি ও তিন ওভার বাউন্ডারি দিয়ে। অন্যদিকে, নাঈম শেখ ১৩ বলে এক ছয়ের মারে করেন ১৬ রান। দুই ব্যাটসম্যান দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছান মাত্র ৬.৫ ওভারেই। ৬ মেরে জয় নিশ্চিত করা সৌম্য একবার জীবন পেয়েছিলেন। আর সেটা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগান তিনি। বল হাতে ১ উইকেট শিকারের পর ব্যাটিংয়ে ২৮ বলে অপরাজিত ৫০ রান করে ম্যাচসেরা হন সৌম্য। শনিবার একই ভেন্যুতে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন