ইসলাম একটি সার্বজনীন কালজয়ী জীবন-ব্যবস্থা। জীবনের প্রতিটি অধ্যায় সুন্দর ও সৌরভময় করতে মহানবী হযরত মুহাম্মদুর রসূলুল্লাহ সা. ৬৩ বছরের বর্ণাঢ্য জীবনে উম্মতকে দিয়েছেন সুন্দর ও উজ্জ্বলময় পথনির্দেশ। নিম্মে হাদিসের আলোকে রাসূলের কিছু উত্তম অভ্যাস তুলে ধরা হল, যা অনুস্মরণ করলে মানবজাতি উপকৃত হবে।
রাসূল (সা.) চলার সময় সামনে থেকে লোকদের হটিয়ে দিতেন না।
রাসূল (সা.) কোন জায়েয বৈধ কর্ম থেকে বাধা দিতেন না। কেউ কোন প্রশ্ন করলে উত্তর দেওয়ার ইচ্ছা থাকলে হ্যাঁ বলতেন, ইচ্ছা না থাকলে চুপ করে থাকতেন।
কথা বলার সময় রাসূল (সা.) চেহারা মুবারক ফিরিয়ে নিতেন না। যতক্ষণ না যে কথা বলছে সে ফিরিয়ে না নেয়। কেউ তাঁর কানে কানে কথা বলতে চাইলে কান মুবারক তার দিকে করে দিতেন। কথা শেষ হওয়ার পূূর্বে কান সরিয়ে নিতেন না।
কাউকে বিদায় দেওয়ার মুহূর্তে (সা.) এ দোয়াটি পড়তেন: আছ্তাউদি‘উল্লা-হা দীনাকুম্ ওয়া আমা-নাতাকুম্ ওয়া খাওয়াতীমা আ’মা-লিকুম্। [সুনানে তিরমিযী, ২/১৮২]
প্রিয় এবং পছন্দনীয় কোন বস্তু রাসূল (সা.)-এর নজরে পড়লে এ দোয়াটি পড়তেন: আল্হাম্দু লিল্লা-হিল্লাযী বিনি’মাতিহী তাতিম্মুচ্ছা-লিহা-তু।
আর খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে পড়তেন: আল্হাম্দু লিল্লা-হি ‘আলা- কুল্লি হা-ল। [মুস্তাদরাকে হাকিম, ১/৬৭৮ ও সুনানে ইবনে মাজাহ, ১/২৭৮]
কারো সাথে সাক্ষাৎ হলে রাসূল (সা.) সালাম করতেন। [শামায়িলে তিরমিযী, পৃ. ১২]
পাশের কোন কিছু দেখতে হলে চেহারা পুরোপুরি ফিরিয়ে খেতেন। অহংকারীদের মতো চোখের কোণা দিয়ে তাকাতেন না। [খাসায়িল শরহে শামায়িলে তিরমিযী, পৃ. ১২]
দৃষ্টি অবনত রাখতেন। লজ্জার দরুন কারো প্রতিপরিপূর্ণ দৃষ্টি মেলে তাকাতেন না। [খাসায়িল শরহে শামায়িলে তিরমিযী, পৃ. ১২]
কাউকে কঠিন কথা বলতেন না। তিনি নরম প্রকৃতির, ধৈর্যশীল ও দয়ালু ছিলেন। [মিশকাতুল মাসাবীহ, ২/৫১২]
চলার সময় খুব শক্তভাবে মাটি থেকে পা ওঠাতেন। রাখার সময় খুব নম্রতার সাথে একটু সামনের দিকে ঝুঁকে রাখতেন। উঁচু স্থান থেকে নিচের দিকে নামার ভঙ্গিতে হাঁটতেন। [খাসায়িল শরহে শামায়িলে তিরমিযী, পৃ. ১৩ ও ৭৩]
সবার সাথে সরলভবে মিশতেন, গম্ভীর হয়ে থাকতেন না, বরং হাসি কৌতুকও করতেন। [বেহেশতী জেওর, ৮/৪]
কোন গরীব ব্যক্তি বা বৃদ্ধা তাঁর সাথে কথা বলতে চাইলে তার কথা শোনার জন্য রাস্তার এক পাশে বসে যেতেন। [বেহেশতী জেওর, ৮/৪]
নামাযে যখন কুরআন তিলাওয়াত করতেন, তখন আল্লাহর ভয়ে তাঁর বক্ষ থেকে হাড়ি খোলার ন্যায় শব্দ আসত। [শামায়িলে তিরমিযী, পৃ. ১৮৮]
পরিবার পরিজনের খুব খেয়াল রাখতেন। কাউকে কোন ধরনের কষ্ট দিতেন না। রাতে বাইরে যেতে হলে খুবই সন্তর্পনে উঠে, ধীরে ধীরে জুতা পরিধান করে, খুব সন্তর্পনে দরজা খুলে বাইরে যেতেন। আসার সময়ও এভাবে আসতেন যাতে ঘুমন্ত ব্যক্তিদের ঘুমে ব্যাঘাত না ঘটে। তাদের কোন কষ্ট না হয়। [মিশকাতুল মাসাবীহ, ১/২৮০ ও বেহেশতী জেওর, ৮/৪]
চলার সময় দৃষ্টি অবনত রাখতেন, জামাতবদ্ধভাবে চলার সময় সবার পিছনে থাকতেন। কারো সাথে সাক্ষাৎ হলে তিনিই প্রথমে সালাম দিতেন। [শামায়িলে তিরমিযী, পৃ. ১২]
আসুন আনরা সবাই রাসূলের এই উত্তম অভ্যাসগুলো অনুস্মরণ করি এবং রাসূলের আদর্শ মোতাবেক নিজের জীবনকে পরিচালনা করি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন