(পূর্বে প্রকাশিতের পর)
প্রায় ৫০০ ইংরেজ সৈন্য ও তাদের পৌষ্য জমিদার সৈন্য সবাই পরাজয় বরণ করে। ইংরেজ সেনাপতি আলেকজান্ডার যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পান।
দ্বিতীয় বার যুদ্ধে আসেন কর্ণেল ¯‘ট। লন্ডনের মিলিটারী একাডেমী থেকে পাস করা লেফটেন্যা’ট কর্ণেল ¯‘ট। ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ নভেম্বর মধ্য রাতে সুশিক্ষিত ইংরেজ সৈন্যরা বাঁশবেড়িয়ায় পৌছায় এবং তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা ঘিরে ফেলে। বহু গোলাবারুদ ও আগ্নেঅস্ত্র নিয়ে তারা তিতুমীরের দলের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। বন্দুকের ফাঁকা আওয়াজে ঝড়ের গতিতে বেরিয়ে এলো তিতুমীরের সৈন্যরা। বিষ মাখানো অজস্র তীর আর বর্শা ইংরেজ সৈন্যদের বিদ্ধ করতে লাগলো। তারা একে একে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে লাগলো। কর্ণেল ¯‘টের হুকুমে বাঁশ বেড়িয়ার বালাকোটের ময়দানে মধ্যরাতে নিস্তব্ধতার বুক চিড়ে গর্জে উঠলো ইংরেজদের কামান। মুর্হুমুর্হু কামানের গোলায় ভেঙ্গে পড়লো তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা। শত চেষ্টায় ইংরেজদের কামানের গোলার সঙ্গে তিতুমীর কিছুতেই পেরে উঠলো না। বীরের মতো যুদ্ধ করতে করতে প্রাণ হারালেন তিতুমীর। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও মাথা নত করলেন না তিতুমীর। শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে বীরের মু মৃত্যুকে বরণ করে নিলেন। দিনটি ছিল ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ নভেম্বর বালাকোটের ময়দান। বাঙালির ইতিহাসের এক ব্যর্থ স্বাধীনতার স্মরণীয় দিন। ইতিহাস হয়ে রইলো বাঙালির অসীম বীরত্বের এক জয়দীপ্ত গান। তিতুমীরের সুদক্ষ সেনাপতি গোলাম মাসুদ যুদ্ধে বন্দি হন। পরে ইংরেজদের বিচারে তার ফাঁসি হয়। পরবর্তীতে তিতুমীরের ২২৫ জন অনুসারির বিচারে জেল হয়। অবিভক্ত বঙ্গের বিপ্লবী বীররা সেদিন শহীদ হলেন ইংরেজ সৈন্য, দেশীয় দালাল ও পাদ্রীদের প্রত্যক্ষ আক্রমণে। লর্ড উইলিয়াম বে’িটক ছিলেন সে সময় বাংলার গভর্ণর।
বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলনের তৎকালীন অগ্রপথিক, নির্ভীক বীর, জাগ্রত সিপাহ সালার সৈয়দ নিসার আলী তিতুমীরকে আমরা সবাই শ্রদ্ধার সঙ্গে আজও স্মরণ করি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন