মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

উচ্ছেদের পর দখল

বরাদ্দের জন্য নেয়া হচ্ছে জামানত ও চাঁদা : সাভারে ফের সওজের জমিতে স্থাপনা

সেলিম আহমেদ, সাভার | প্রকাশের সময় : ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০৪ এএম


সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ের উভয় পাশে গড়ে তোলা প্রভাবশালীদের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কয়েকদিনের মাথায় সেগুলো পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এসব অবৈধ স্থাপনা পুনরায় দখলের পর বরাদ্দের জন্য নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের জামানত নেয়ার পাশাপাশি নিয়মিত চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় সবকিছু ঘটলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসনের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজসে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে সেখান থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সাভারের গেন্ডা বাসস্ট্যান্ডে সড়কের জমি এবং সরকারের দাবিকৃত জমিতে বাঁশ-কাঠ দিয়ে ছোট ছোট দোকান ঘর নির্মাণের পাশাপাশি লোহার পাইপ ও এ্যাঙ্গেল দিয়ে পাকা স্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে। এসব স্থাপনার জন্য নিম্ন আয়ের সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের জামানতের পাশাপাশি আদায় করা হচ্ছে নিয়মিত চাঁদা। উত্তোলনকৃত এসব চাঁদার টাকা ভাগ করে নেন অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণকারী প্রভাবশালীরা।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানায়, সড়ক প্রশস্তকরণসহ দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়কের উভয়পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সম্প্রতি সাভারে অভিযান চালায় সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। এ সময় গেন্ডা কাঁচাবাজার ও ফলের আড়তের শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলে বেশ কিছুদিন জায়গাগুলো ফাঁকা ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে দুটি বাজারেই পুনরায় অবৈধভাবে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া আদায় করছে প্রভাবশালীরা।

গেন্ডা কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেন বলেন, চল্লিশ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে তিনি প্রায় এক বছর ধরে মুরগির দোকান দিয়ে ব্যবসা করছেন। সম্প্রতি উচ্ছেদ অভিযানের পর আবারও নতুন করে বিশ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে তার কাছ থেকে। এছাড়া নিয়মিত পাঁচশ টাকা করে চাঁদা দিতে হয় লিটন ভান্ডারিকে।

তবে চাঁদা আদায়ের বিষয়ে জানতে গতকাল লিটন ভান্ডারির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গেন্ডা ফলের আড়তের এক ব্যবসায়ী বলেন, গত কয়েক বছর আগে সরকারি জমি দাবি করে এখানে থাকা ইসমাইল সুপার মার্কেটটি উচ্ছেদ করে জেলা প্রশাসন। এরপর স্থানীয় নাসির উদ্দিন, জজ মিয়া, কুদ্দুস মিয়া, জালাল উদ্দিন, আজাহার উদ্দিন ও জাহিদুল হক নামে কয়েকজন ব্যক্তি জমিটি লিজ নিয়ে ফলের আড়ৎ হিসেবে ভাড়া দেন। তখন থেকেই আমি এখানে ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু কয়েকদিন আগে উচ্ছেদ অভিযানের সময় পুরো বাজারটি ভেঙে দেয়া হলে আমিসহ অনেকেই বেকার হয়ে যাই। বর্তমানে আবারও উচ্ছেদ হওয়া জায়গাতে স্থায়ীভাবে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। সে জন্য আগের তুলনায় জামানত ও ভাড়া হিসেবে বাড়তি টাকা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বেচাকেনার যে অবস্থা তাতে চলতে কষ্ট হচ্ছে, তারপরে নতুন করে দাবিকৃত টাকা দেয়া যেন মরার উপর খাড়ার ঘাঁ।

এদিকে ফলের আড়তের জমিটি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে এবং আদালত ওই সম্পত্তিতে নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে বলে জানান প্রায় তিন যুগ জমিটির দখলে থাকা অ্যাডভোকেট ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভূমিদস্যু একটি চক্র নালিশি সম্পত্তিতে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন জানান, উচ্ছেদ করা জমিতে পুনরায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাভার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, সরকারি জমি দখল এবং স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সার্ভেয়ারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অবিলম্বে আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:৩২ এএম says : 0
প্রশাসনের এই অবহেলার প্রতি তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই
Total Reply(0)
Md Rafijul Islam ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:৩২ এএম says : 0
এরা প্রশাসন কে ভয় পায় না , তাই বার বার উচ্ছেদের পর ও তারা দখল করে
Total Reply(0)
Oliur Rahman ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:৩৩ এএম says : 0
বাসমান দোকানিরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তাই প্রশাসনের নির্দেশ দেওয়ার সাথে সাথে তাদের অস্হায়ি স্হাপন সরিয়ে নিয়ে ছেন।কিন্তু দুঃখের বিষয় ঘোষিত মুক্তি যোদ্ধা চত্বরের বর্তমান অবস্থান দেখলে মনের মধ্যে বিভিন্ন প্রশ্ন জাগে।
Total Reply(0)
Md Rafijul Islam ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:৩৩ এএম says : 0
তাদেরকে পাচঁ মাসের করে জেল দেওয়া হোক
Total Reply(0)
ahammad ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯, ২:১২ এএম says : 0
চোরে চোরে খালাত ভাই। এসো সবাই মিলেমিসে ভাগবাটোয়ারা করে খাই।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন