কুমিল্লা রেলওয়ে কলোনীর সরকারি কর্মচারীদের বসবাস করা কোয়ার্টার বা বাসাগুলোর সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। চলতি অর্থ বছরে ১৬টি বাসা সংস্কারের জন্য প্রায় কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও নামমাত্র কাজ করে বেশিরভাগ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও ঠিকাদারের সাথে সমঝোতা করে সরকারি অফিস, রেলওয়ে অফিসার্স রেস্ট হাউজের কাজও করেছেন নিজের পছন্দমত।
দায়িত্বশীল নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জানায়, চলতি অর্থ বছরে কুমিল্লা রেলওয়ে কলোনীর কর্মচারীদের বাসা সংস্কার ও মেরামতের জন্য রেলওয়ে থেকে প্রায় কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এসব বাসাগুলোর ৩/৪টি দরজা ও একই সংখ্যক জানালা পাতলা স্টিল শিট দিয়ে নির্মাণসহ নামমাত্র সংস্কার ও রেডঅক্সাইড দিয়ে রং করে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করে।
রেলওয়ের সিগনাল গুদামঘর নম্বর ই/৮ নামমাত্র কয়েকটি টিন পরিবর্তন করে খুঁটিনাটি ফ্লোর মেরামত ও গুদামের বহিরাংশের দেয়াল প্লাস্টার করে অধিক কাজের নমুনা দেখিয়ে ১২/১৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেখিয়ে প্রায় দু’লাখ টাকা খরচ করে। একইভাবে টি/২১ বাসাটি যা বর্তমানে সিগনাল অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে সেটার জন্য পাওয়া প্রাক্কলন ব্যয় ২১ লাখ টাকা থেকে স্টিলের ৮টি দরজা ও ৮টি জানালাসহ নামমাত্র সংস্কার ও রেডঅক্সাইড দিয়ে সংস্কার কাজ শেষ করে। এভাবে কলোনীর কর্মচারীদের বসবাসকরা টি/১০ নম্বরের ৮ ইউনিটের বাসাগুলোর সংস্কারে পাওয়া প্রায় ২০ লাখ টাকা থেকে ৩টি করে স্টিলের দরজা ও জানালা বাবদ ৪/৫ লাখ টাকা, ই/১৬ এস টাইপের ৬ টি বাসার ফ্লোর উচূঁকরণ, স্টিলের দরজা-জানালা নির্মাণের প্রায় ২১ লাখ টাকার বরাদ্দ থেকে ৩/৪ লাখ টাকা, ই/১৯ এস টাইপের ৬ ইউনিটের বাসার ৩ টি করে স্টিলের দরজা ও ৩ টি করে জানালা নির্মাণ ব্যয় প্রায় ২১ লাখ টাকা বরাদ্দের স্থলে ৩/৪ লাখ টাকা, স্টেশনের দক্ষিণে বর্তমান স্টেশন মাস্টারের টি/১৯ বাসাটি সংস্কারের জন্য ৫ লাখ টাকা বরাদ্দের নামমাত্র ব্যয় করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাত হয়েছে। এদিকে কুমিল্লা রেলওয়ের সিনিয়র সাব এসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার (ওয়ার্কস) বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত এ-ইএন সরকারি বরাদ্দের টাকায় ঠিকাদারের সাথে গোপন সমঝোতা করে ভালো থাকার পরও সংস্কারের নামে কুমিল্লা রেলওয়ে অফিসার্স রেস্ট হাউজ এর অনুকূলে প্রায় ১৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়।
এসময় পুরাতন টাইলস রেখেই ছাদ চিপিং করে প্লাস্টারসহ প্রলেপ দিয়ে দেয় সিমেন্টের। এছাড়া কুমিল্লা রেলওয়ের সিনিয়র সাব এ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার (ওয়ার্কস) অফিসটি সংস্কারের ১৬ লাখ টাকা বরাদ্দ থেকে নিজে নামমাত্র কাজ করিয়ে অধিকাংশ টাকা হাতিয়ে নেন।
অনিয়ম ও নিম্নমানের কাজ করার বিষয়ে জানতে চাইলে এইএন (ভারপ্রাপ্ত) ও সিনিয়র সাব এ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার রাম নারায়ণ ধর বলেন, ঠিকাদারের বাইরে কাজ করার কোন সুযোগ নাই। চলতি অর্থ বছরে রেলওয়ের ১৬ টি বাসা সংস্কারে মাত্র ১৬ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। নামমাত্র কাজ করে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন