উত্তর : আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না এবং জনগণের সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে পাপ পন্থায় আত্মসাৎ করার উদ্দেশে শাসন কর্তৃপক্ষের হাতেও তুলে দিও না।’ (সূরা বাকারা : ১৮৮)। আর হাদিস শরিফে হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘তোমরা জুলুম থেকে বেঁচে থাক। কেননা জুলুম কেয়ামতের দিন অন্ধকার হয়ে দেখা দেবে। (বুখারি)
নীতিবিরুদ্ধ বা অন্যায়ভাবে কোনো সম্পদ আত্মসাৎ করা বা কোনো কাজ করাকে দুর্নীতি বলে। আর এ দুর্নীতি বিভিন্নভাবে হতে পারে। যেমন- নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি অর্থাৎ যে কোনো কাজে যোগ্য লোককে নিয়োগ না দিয়ে অযোগ্য লোককে নিজের আত্মীয় হওয়ার কারণে নিয়োগ দেয়া। আর এমন কাজের ব্যাপারে হাদিস শরিফে হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। হযরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, “উপযুক্ত ব্যক্তিকে রেখে যদি কেউ তার আত্মীয়স্বজন থেকে অনুপযুক্ত ব্যক্তিকে কোনো কাজে নিয়োগ দেয়, তাহলে সে যেন আল্লাহ ও তার রাসুলুল্লাহ (সা.) এবং মুমিনদের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করল।"
এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘যখন অযোগ্য ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেয়া হবে, তখন তোমরাভকেয়ামতের অপেক্ষা করো।’ (বোখারি)। ঘুষ গ্রহণ অবৈধ পন্থায় কোনো কাজ করে দেয়ার জন্য ঘুষ প্রদান করা, যাতে ওই ব্যক্তির মাধ্যমে ঘুষ প্রদানকারী ব্যক্তির কাজ হাসিল হয়ে যায় এবং সে এর মাধ্যমে সহজেই ফায়দা হাসিল করতে পারে। আর এ দুই ব্যক্তি সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘ঘুষ গ্রহণকারী ও প্রদানকারী উভয়ের ওপর আল্লাহর লানত।’ শুধু তা-ই নয়, ঘুষ প্রদান ও তা গ্রহণ করার পরিণাম সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ঘুষ গ্রহণকারী ও প্রদানকারী উভয়ই জাহান্নামি। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, প্রত্যেক জাতি যারাই ঘুষ আদান-প্রদান করে, তারা ভীতিতে আক্রান্ত হয়।’ এ বিষয়ে হজরত সাওবান (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘুষ গ্রহণকারী ও প্রদানকারী এবং উভয়ের মাঝে মধ্যস্থতাকারীকে অভিশাপ দিয়েছেন।’ (তিরমিজি)।
ক্ষমতার অপব্যবহার ক্ষমতার অপব্যবহার অর্থাৎ জোরপূর্বক কোনো অবৈধ কাজ করা। আর রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে লোক কোনো বিষয়ে মুসলমানদের ওপর দায়িত্ব নিল অতঃপর তাদের ওপর কাউকে স্বজনপ্রীতিবশত ক্ষমতা দিল তার ওপর আল্লাহর অভিশাপ। তার কাছ থেকে কোনো নেক কাজও গ্রহণ করা হবে না। এমনকি তাকে জাহান্নামে দেয়া হবে।’ হজরত ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত; রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘যদি কেউ আল্লাহর আইনের বিপরীত অবৈধ কোনো কাজ করে, তাহলে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’
সরকারি সম্পদ দখল করা অন্যায় ভাবে সরকারের সম্পদ ভোগ করা। এটি কোনো ব্যক্তিমালিকানা নয়, বরং সবার অধিকার।
তাই যে এ মাল ভোগ করল, সে সবার অধিকার নষ্ট করল। তাই এটি মহাপাপ। এতে দখলকারী যেমন- হযরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এর শাফায়াত পাবে না, তেমনি সে হবে জাহান্নামি।
মহান আল্লাহ তায়ালা সবাইকে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.) যেসব বিষয় থেকে পরিত্রাণ করার জন্য বলেছেন, তা থেকে বেঁচে থাকার এবং তাদের দেখানো পথে জীবনযাপন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
উত্তর দিচ্ছেন :
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন