শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

দুই শতাংশ পুন:তফসিল সুবিধায় অসন্তুষ্ট এবি ব্যাংক এমডি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৮:৩০ পিএম

২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ১০ বছর মেয়াদি পুন:তফসিল ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট নন এবি ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারিক আফজাল। যদি অন্য কোনো কঠোর ব্যবস্থা টাকা আদায় করা যায় তাহলে দশ বছর অপেক্ষা করার কোন প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন তিনি। দেশের অর্থনীতি শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে আছে উল্লেখ করে এ সময় তিনি বলেন, গত ২ বছর ধরে ব্যাংক খাতের ঋণ খেলাপি নিয়ে সমালোচনা চলছে। কিছু জায়গায় অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ব্যাংকের সদিচ্ছা থাকলে কোনো গ্রাহক টাকা নিয়ে পালাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

গ্রাহকের জীবনযাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করতে ‘এবি হাইট’ নামে নতুন সেবা নিয়ে এসেছে এবি ব্যাংক। গতকাল রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে ‘এবি হাইটের’ উন্মোচন করে ব্যাংকটি। এ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তারিক আফজাল। এ সময় রিটেইল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান ও ডিএমডি আবদুর রহমান, ডিএমডি মাহমুদুল আলম, ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে ব্যাংকের নতুন এ সেবার বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমডি আবদুর রহমান।

নতুন পণ্যের উদ্বোধন শেষে তারিক আফজাল বলেন, বর্তমানে আমাদের ব্যাংকের অবস্থা আগের তুলনায় অনেক ভালো। যারা খেলাপি হয়ে পড়েছে কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবেই টাকা ফেরত দিচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। যেসব খেলাপির বয়স বেশি সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। পর্যায়ক্রমে সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতিমধ্যেই বাছাইকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে মামলা শুধু করেছি এবং ফলাফলও পাচ্ছি। এ প্রক্রিয়া ভবিষ্যতেও চলতে থাকবে বলে জানান তিনি। অনুষ্ঠানে এবি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও এমডি তারিক আফজাল বলেন, ২০১৮ সালে এবি ব্যাংকের মন্দঋণ পুরোটাই খেলাপি হয়ে যায়। ওই সময এ ঋণের হার ছিল ৩৩ শতাংশ। কিন্তু গেল বছরে খেলাপিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযানের ফলে শ্রেনীকৃত ঋণ কমে ১৪ শতাংশে দঁািড়য়েছে।

মন্দ ঋণের বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। আর শুদ্ধি অভিযান শুধু মন্দ ঋণের বিরুদ্ধে নয়, ব্যাংকের কর্মকর্তাদেরও বিরুদ্ধেও হবে’। ঋণের সুদ এক অঙ্গে বাস্তবায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, ১ এপ্রিল থেকে এটি কার্যকরের জন্য এবি ব্যাংক কাজ করে যাচ্ছে।

ঋণখেলাপিদের ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্টে ১০ বছরে ঋণ পরিশোধের সুবিধার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে তিনি বলেন, ‘এককালীন পরিশোধ করার অর্থ এটা নিয়মিত করা। তবে ১০ বছরে শোধ করার বিষয়ে আমি একমত না। কারণ, একটি ঋণ এতদিন চলতে পারে না। এটা দীর্ঘায়িত হলে গ্রাহকও আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। এ পর্যন্ত এবি ব্যাংক একজন ঋণ খেলাপিকে এ সুবিধা দিয়েছে। ঋণ সুবিধা দেয়া হবে ব্যাংকের নিয়ম মেনে, গ্রাহকের নিয়ম মেনে নয়।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এবি হাইট একাউন্ট এবং ক্রেডিট কার্ডের সমন্বিত একটি সেবা। যা গ্রাহকের জীবনের জরুরি প্রয়োজনগুলো মেটাবে বলে মনে করেছে ব্যাংকটি। বাংলাদেশের ১৮ বছর অথবা এর অধিক যে কোন বয়সের নাগরিক সেবাটি নিতে পারবেন। একাউন্টের ধরন একক অথবা যৌথ (সর্বোচ্চ দুইজন)। একাউন্টে সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা জমা রাখতে হবে, চাইলে এর বেশিও রাখা যাবে। জমাকৃত টাকার উপর রয়েছে মুনাফা। প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর মুনাফা উত্তোলন করা যাবে।

সেবার বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে, সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকার বীমা সুবিধা, ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ড লিমিট, বিমানবন্দরে সৌজন্যমূলক সেবা ব্যবস্থা, চিকিৎসা সেবায় বিশেষ ডিসকাউন্টসহ আরও অনেক সুবিধা। এছাড়া আরও রয়েছে, ১ হাজার ৫০০ এর বেশি মার্চেন্ট আউটলেটে আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট, ডুয়েল কারেন্সি কার্ড এবং বিভিন্ন ইমিগ্রেশন ও ভিসা প্রক্রিয়া কেন্দ্রে বিশেষ ডিসকাউন্ট। এ লক্ষ্যে ব্যাংকটি ইতিমধ্যে বীমা সুবিধার জন্য মেট লাইফ এলিকো, শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রক্রিয়া সহায়তায় শাহেদা কনসালটেন্সি, চিকিৎসা সেবায় স্কয়ার হসপিটাল, ট্রাভেল এন্ড ট্যুরিজম সেবায় ইনোভা, এমজিএ সার্ভিসেস এবং রিজেন্ট এয়ারওয়েজের সাথে বিশেষ চুক্তি সম্পাদন করেছে। ভবিষ্যতে এই সুযোগ সুবিধার মান আরও বাড়ানো হবে বলে তারা জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন